ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

কর্ণফুলী-আনোয়ারায় সাইফুজ্জামান চৌধুরী’র কোন বিকল্প নেই!

জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম:

ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে নিশ্চিত। এই নির্বাচনকে ঘিরে এখন থেকে প্রস্তুতি গ্রহন করছে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো, সেক্ষেত্রে পিছিয়ে নেয় আওয়ামী লীগও।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্তত দেড় শতাধিক আসনে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এমনটি খবর পাচ্ছি আমরা জাতীয় গণমাধ্যমে গুলোতে। তার মধ্যে চট্টগ্রাম-১৩ আসনে অনেকটা পুনরায় নিশ্চিত এবং নৌকার টিকেট পাচ্ছেন ভুমিপ্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি। প্রার্থী হিসেবে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর গুডবুকে তার নাম রয়েছে সুত্র নিশ্চিত করেছেন।

এ আসনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দৌড়ে কেন্দ্রিয় মহিলা আ.লীগের সহ-সভাপতি বর্তমান সংরক্ষিত মহিলা এমপি বেগম ওয়াসিকা আয়েশা খাঁন ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আ.লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শাহজাদা মহিউদ্দীন মাঠে সক্রিয় হলেও কেহ সবুজ সংকেত পায়নি দল হতে।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের কর্ণফুলী’র শিকলবাহা ক্রসিং এ পথসভায় দলের কেন্দ্রিয় সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কর্ণফুলী-আনোয়ারা আসনে প্রার্থী হিসেবে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।

এসময় সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব! চট্টগ্রামের মানুষ জানে, কর্ণফুলী হচ্ছে বিএনপির ঘাঁটি! সেই ঘাঁটি দেখে যান, ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। কর্ণফুলী এখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে। কর্ণফুলী এখন শেখ হাসিনার সঙ্গে। কর্ণফুলী এখন তরুণ জননেতা জাবেদের সঙ্গে।’

সূত্রে আরো জানা যায়, সরকারি-বেসরকারি একাধিক জরিপের মাধ্যমে দেশের সংসদীয় আসনের দলীয় প্রার্থীদের নামগুলো বাছাই করা হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড থেকে দেড়শ আসনে মনোনয়নের বিষয়টি জানিয়ে নির্বাচনী এলাকায় জনসংযোগ করতে বলা হয়েছে প্রার্থীদের। তার মধ্যে ভূমি প্রতিমন্ত্রীকে ও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্যসূত্র তা নিশ্চিত করেছেন।

কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব ফারুক চৌধুরী বলেন, “আনোয়ারা-কর্ণফুলী আসনের সংসদ সদস্য প্রয়াত মহান নেতার সুযোগ্যপুত্র ভূমিপ্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী’র নাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গুডবুকে আছেন বলেই তিনি গত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ও মন্ত্রী পরিষদে স্থান পেয়েছেন”।

কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারী ভাবে আগামী নির্বাচনে আসন ভিত্তিক একাধিক জরিপ করা হয়। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা, প্রশাসন, জেলা পুলিশ, বেসরকারি গবেষণা সংস্থা, দলীয় বিভিন্ন শাখার মাধ্যমে জরিপগুলো চালানো হয়েছে। তাতে শতভাগ এগিয়ে চট্টগ্রাম-১৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য।

এছাড়াও ভূমিপ্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা খাস জমি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের পরিত্যক্ত ভূমি এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া কল-কারখানার সম্পদ গুলো একটি ছাতার আওতায় আনার লক্ষ্যে অগ্রনী ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। এমনকি ভূমি সংক্রান্ত দেশের ৮৫% মামলার সমস্যা ডিজিটাল পদ্ধতিতে জটিলতা নিরসনে কাজ করে বেশ প্রসংশিত হয়েছেন।

অন্যদিকে সব জরিপের ফল একসঙ্গে বিশ্লেষণ করে কিছু আসনের প্রার্থী প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। গ্রহনযোগ্যতা, জনপ্রিয়তা, ক্লিন-ইমেজ, দূনীর্তি মুক্ত, এলাকায় সবচেয়ে বেশি সময় দেওয়া, বিতর্কিত কর্মকান্ড মুক্ত, সর্বোপরি জেলার তৃনমূলের চাহিদা ও জেলা আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় একক প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দেবার কারনে টানা ২বার নির্বাচিত এমপি পুনরায় চট্টগ্রাম-১৩ আসনের টিকেট পাচ্ছেন।

এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান মন্ত্রী পরিষদ সদস্যদের মধ্যে নেত্রীর কাছে ভালো মন্ত্রী হিসাবে সমাদৃত ভূমিপ্রতিমন্ত্রী , নেত্রীর আস্থাভাজন বলে তিনি গুডবুকে থাকবেন সেটা বিশ্বাস করে আনোয়ারা কর্ণফুলীবাসী’।

এদিকে কর্ণফুলী আনোয়ারার স্থানীয় নেতৃমূলের একাধিক নেতাকর্মীরা মন্তব্য করেন, চট্টগ্রাম-১৩ আসনে প্রতিমন্ত্রী জাবেদের কোন বিকল্প নেই, তিনি ২বার নির্বাচিত এমপি হওয়ার কারনে নেত্রী ও জনগনের কাছে ইতিমধ্যে পরিক্ষিত নেতা হিসেবে আস্থা অর্জন করেছেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতারা মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গুডবুকে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে আনোয়ারা-কর্ণফুলীর বর্তমান সংসদ সদস্য।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও প্রয়াত সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান চৌধুরী’র বড় ছেলে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। তিনি চট্টগ্রাম চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি। বাবার মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে নবম সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিজয়ী হন আনোয়ারা আসন হতে।

বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করা আলহাজ্ব সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি গণমাধ্যমকে বলেন, “প্রতিমন্ত্রী হিসেবে চট্টগ্রামের জন্য কাজ করতে চাই। আমার বাবাও অনেক কাজ করে গেছেন। আমি বাবার অসমাপ্ত কিছু কাজ সম্পন্ন করেছি। আরো অনেক বাকি আছে সেগুলোও করতে চাই ইনশাল্লাহ্”।

প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাবার পর ২০১৪ সাল হতে নিয়মিত সরকারের কাছে নিজের সম্পদের হিসাব দাখিল করে আসছেন। ঢাকায় মন্ত্রীপাড়ার বাসায় তিনি থাকেন না। ব্যবহার করেন না সরকারী গাড়িও। চট্টগ্রামে গেলেও থাকেন না সরকারি সার্কিট হাউসে।

ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুই জায়গাতেই তিনি নিজের বাসায় থাকেন, চড়েন ব্যক্তিগত গাড়িতে। শুধু বাড়ি ও গাড়ির সুযোগ সুবিধা নয়, প্রতিমন্ত্রীর বেতনসহ প্রাপ্য সুবিধার দেড় লাখ টাকাই তিনি বিভিন্ন জায়গায় অনুদান হিসেবে দিয়ে দেন।

প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী রুকমিলা জামান চৌধুরী ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

19

পাঠকের মতামত: