ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

লামায় স্বাস্থ্য প্রকৌশলের ১০ শয্যা মা ও শিশু হাসপাতাল নির্মাণে লুটপাট

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ::

স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি) কর্তৃক বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ হাসপাতাল নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ন ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। কার্যাদেশ না মেনে নি¤œমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় এলাকার জনগণের মাঝে চরম অসন্তোষ প্রকাশ পাচ্ছে।

জানা গেছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধিনে বান্দরবানের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি নির্মাণ করছে। ৪ কোটি ৪ লক্ষ টাকার চুক্তিমূল্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজটি সম্পাদন করছে বান্দরবানের ঠিকাদার মোজাফফর আহমদ ও ইমতিয়াজ। ১০ শয্যা হাসপাতাল ভবন, স্টাফ কোয়াটার ও সীমানা ওয়াল নির্মাণের জন্য উক্ত অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, শুরু হতে নির্মাণ কাজের মান খুবই খারাপ। তারা বলেও কোন প্রতিকার পায়নি। ফাইলিং, বেইজ ও পিলার সহ অধিকাংশ বড় কাজের সময় স্বাস্থ্য প্রকৌশল এর কোন ইঞ্জিনিয়ার উপস্থিত থাকেননা। ঠিকাদার ও মিস্ত্রিরা তাদের মন মত কাজ করে। নির্মাণ কাজের নি¤œ মানের কংকর, রড, সিমেন্ট ও আশপাশের খাল ছড়া হতে তোলা বালু ব্যবহার করা হয়েছে। নির্মাণ কাজটি শুরুতে করা ফাইলিং সঠিকভাবে করা হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পাওয়ার পরে একটি অংশ টাকা নিয়ে অন্য ঠিকাদারের কাজে উন্নয়ন কাজটি বিক্রি করে দিয়েছে। ঠিকাদার মোজাফফর আহমদ ও ইমতিয়াজ চড়া মূল্য দিয়ে কাজটি ক্রয় করে ও তাদের নিজেদের লাভের কথা চিন্তা করে খুব নি¤œমানের কাজ করছে।

সরই ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ উল আলম বলেন, কাজের মান ভাল না। কাজের মান ভাল করতে আমি ঠিকাদার ও স্বাস্থ্য বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারকে বলেছি। তাদের বলেও কোন লাভ হয়না। কয়েকদিন আগে কক্সবাজার হতে ইঞ্জিনিয়ার মোর্শেদ এসেছিলেন। তাকে মোখিকভাবে অনিয়মের বিষয়ে বলে কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

নির্মাণকাজের মান খারাপ কেন ? সাইটের ম্যানাজার সাইফুল ইসলামকে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন ঠিকাদার মোজাফফর আহমদ ও ইমতিয়াজ সাহেব যেভাবে বলেন আমি সেভাবে কাজ করি। এই বিষয়ে ঠিকাদার মোজাফফর আহমদ বলেন, কাজের মান খারাপ হচ্ছেনা।

নির্মাণকাজের দায়িত্বরত স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারী প্রকৌশলী মো. মোর্শেদ বলেন, আমি যখন গিয়েছি তখন তো মালামাল ভাল দেখেছি। সবসময় থাকার তো সুযোগ নেই।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর বান্দরবানের উপ-পরিচালক ডাঃ অংচালু মার্মা বলেন, কিছুদিন পূর্বে কাজের মান খারাপ হচ্ছে শুনে মান ভাল করার নির্দেশ দিয়েছিলাম। আবারো জেনে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

প্রসঙ্গত, সরই এলাকার জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে গত ২৫ মে ২০১৭ইং ১০ শয্যা মা ও শিশু হাসপাতালটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রাণয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।

পাঠকের মতামত: