ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

সাবেক এমপি মরহুম এড. খালেকুজ্জামান স্মরণে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচী

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :  আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর রামু-কক্সবাজারের এক সময়ের জনপ্রিয় সংসদ সদস্য ও সাড়াজাগানো পার্লামেন্টারিয়ান এড.খালেকুজ্জামানের ১৭তম শাহাদাত বার্ষিকী।

২০০১ সালের ১লা অক্টোবরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র তিনদিন আগে ২৮ অক্টোবর’কক্সবাজার-রামু আসনের তৎকালীন ৪ দলীয় জোটের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও কক্সবাজার-রামুবাসীর প্রিয়মূখ এড. খালেকুজ্জামান ইন্তেকাল করেছিলেন।

২৮ অক্টোবর’২০০১ রামু বাইপাসের বর্তমান‘খালেকুজ্জামন চত্বরে লাখো মানুষের জনসভায় হেসে হেসেই দুনিয়া থেকে চলে গিয়েছিলেন এড.খালেকুজ্জামান।

রামু-কক্সবাজারের মানুষ আজো ভুলতে পারছেনা এড. খালেকুজ্জামানের সেই নিরহংকার অমলিন চেহারা। পরবর্তীতে তারই আপন ছোট ভাই ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ সহিদুজ্জামানকে বিপুল ভোটে এমপি বানিয়ে যেন খালেকুজ্জামানের ভালবাসার স্বীকৃতি ও প্রতিদান দিয়েছিলেন রামু-কক্সবাজারের মানুষ।

ভালবাসা ও অহিংস রাজনীতির আদর্শমরহুম এড. খালেকুজ্জামানের আজও বড় প্রযোজন অনুভব করছেন অত্র এলাকার সাধারণ মানুষ।

প্রতিবছর সেই বেদনাবিদূর দিবসটি স্মরণ করা হয় নানা কমীসূচীর মাধ্যমে।এবারো মরহম এড. খালেকুজ্জামানের স্মরণে‘খালেকুজ্জামান স্মৃতি পরিষদ’গ্রহণ করেছেসপ্তাহব্যাপী কর্মসূচী।

কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে, ২১ সেপ্টেম্বর রামু-কক্সবাজারের সকল মসজিদে একযোগে দোয়া, ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পৌরসভাসহ রামু-কক্সবাজারের ২১টি ইউনিয়নের মসজিদে মসজিদে পৃথকভাবে দোয়া, কুরান খানী ও অলোচনা সভা। স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদ পত্রে মরহুম এড খালেকুজ্জামানের বর্ণাঢ্য জীবনী নিয়ে লেখা প্রকাশ, পোষ্টারিং ও প্রচার পত্র বিলি।

এসব কমসূচীতে মরহুম এড. খালেকুজ্জামানের আত্মীয় স্বজন ও গুণমুগ্ধ সবাইকে উপস্থিত থাকার জন্য তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে এবং খালেকুজ্জামান স্মৃতি পরিষদের পক্ষ থেকে অনুরোধজানিয়েছেন তাঁরই ছোট ভাই রামু-কক্সবাজার আসনের সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান।

এড. খালেকুজ্জামানের বর্ণাঢ্য জীবন

মোঃ খালেকুজ্জামান ১৬ জানুয়ারী ১৯৫৩ ইংরেজী মৌলবী ফরিদ আহমদ ও বেগম রিজিয়া আহমদেরে ঐরসে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম মৌলবী ফরিদ আহমদ ছিলেন সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য ও ১৯৫৭ সালে গঠিত আইআই চুন্দ্রীগড় মন্ত্রীসভার কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রী।

২০০১ সালের ১লা অক্টোবরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র তিনদিন আগে ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০১ রামু বাইপাসের বর্তমান‘খালেকুজ্জামন চত্বরে লাখো মানুষের জনসভায় হেসে হেসেই তিনি দুনিয়া থেকে চলেযান। তখন তিনি ছিলেন, তৎকালীন ৪ দলীয় জোটের কক্সবাজার-রামুর আসনেরমনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী।

প্রচার বিমুখ এড খালেকুজ্জামান ছিলেন অত্যন্ত ধীশক্তির অধিকারী। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তাঁর মেধার সুস্পষ্ট স্বাক্ষর রেখে গেছেন তিনি। মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের Institute of Business Administration থেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে পাশ করেন MBA, IUBAT এর একজন সফল শিক্ষক হিসেবে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের শ্রদ্ধা ও প্রশংসা অর্জন করেছেন। LLB পরীক্ষাতেও তিনি তাঁর প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন।

(১৯৯৬ সালে) কক্সবাজার-রামু আসনে সপ্তম ও অষ্টম জাতীয় সংসদে পর পর দু’বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তিনি সাড়া জাগিয়েছিলেন।

সংসদ সদস্য হিসেবে তাঁর যথেষ্ঠ সুনাম রয়েছে। সংসদে তাঁর গঠনমূলক বক্তৃতা ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদল সকলের কাছে সমাদৃত হয়েছিল। তাঁর বক্তৃতায় মুগ্ধ হয়ে সংসদ সদস্যদের অনুরোধে স্পিকার তাঁর বক্তৃতার সময় বাড়িয়ে দেয়ার নজীরও রয়েছে। এটি সংসদীয় ইতিহাসে নজিরবিহীন ববলে জানাগেছে।

স্থানীয় স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদের উন্নয়নে রেখে গেছেন এক অবনদ্য অবদান। রামু কলেজ,কক্সবাজার সিটি কলেজ ও ঈদগাঁও ফরিদ আহমদ কলেজ, রামু হাই স্কুল,নাদেরুজ্জামান হাইস্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উন্নয়নে তিনি পালন করেছেন প্রশংসনীয় ভূমিকা।

কম্পিউটার বিজ্ঞান শিক্ষা প্রবর্তনের জন্য তিনি প্রতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে উদ্বুদ্ধ করেছেন কর্তৃপক্ষকে। আর তাঁর সে মহতী উদ্যোগের সুফল ভোগ করছেন এলাকাবাসী।আজ বেশ কিছু স্কুল-কলেজে কম্পিউটার বিজ্ঞান শিক্ষা কোর্স চালু করা হয়েছে।

তিনি ছিলেন একজন অত্যন্ত মেধাবী ও সফল কম্পিউটার বিজ্ঞানী। বাংলাদেশে কম্পিউটার শিক্ষার বিস্তার তথা কম্পিউটার এর ব্যাপক ব্যবহার জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য।

এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অবকাঠামো সৃষ্টিতেও তাঁর ছিল প্রবল আকাঙ্খা।একজন খ্যাতিমান আইনজীবীপেশাগত জীবনে। বিনা পারিশ্রমিকে তিনি অনেক অসহায় মানুষের মামলা পরিচালনা করে তাদেরকে কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ করে গেছেন।

সদালাপী, নিরহংকার, সহজ সরল এক দুর্লভ ব্যক্তিত্ব ছিলেন খালেকুজ্জামান। মানুষকে সহজে আপন করে নেবার এক সহজাত ক্ষমতা ছিলো তাঁর।

পাঠকের মতামত: