ঢাকা,শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

কক্সবাজারে অস্বাস্থ্যকর-নোংরা পরিবেশে বেকারি পণ্য তৈরি

কক্সবাজার প্রতিনিধি :: কক্সবাজার শহরে ও আশপাশের ইউনিয়নের অধিকাংশ বেকারিতে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে খাবার। পাড়া-মহল্লার দোকান থেকে শুরু করে নামিদামি দোকানে এসব বেকারির বিস্কুট, চানাচুর, কেক ও পাউরুটিসহ নানা ধরনের পণ্য বিক্রি হচ্ছে। ডজনখানেক বেকারি অনুমতি ছাড়াই এসব পণ্য তৈরি করে বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ দিচ্ছে প্রতিনিয়ত।
সদরের ভারুয়াখালীতে এমন একটি অনুমতিবিহীন ‘জাচ্ছিয়া বেকারি এন্ড কনফেকশনারি’ নামে খাবার তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়েছে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাবিবুল হাসান। অনুমতিবিহীন এই কারখানায় নোংরা পরিবেশে পাউরুটি, বিস্কুট, কেক, টোস্টসহ বিভিন্ন ধরনের বন তৈরি করার দায়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। গতকাল (শনিবার) বিকালে ভারুয়াখালী বাজারের পশ্চিম পাশে আবু তাহেরের কারখানায় এই অভিযান চালানো হয়। এ বিষয়ে ইউএনও হাবিবুল হাসান বলেন, পাউরুটি ও কেক তৈরির কারখানাটি খুবই নোংরা। অস্বাস্থ্যকর
পরিবেশে খাবার তৈরি করা হচ্ছে। কোনো ধরনের অনুমতিও নেই কারখানাটির। মাটিতে রাখা হয়েছে বন, পাউরুটি ও কেক তৈরির বিভিন্ন উপকরণও। সবখানে মাছি বসে আছে। এসব খেয়ে মানুষের বিভিন্ন ধরনের অসুখ হয়। এছাড়া শিশুদের দিয়েও কারখানার কাজ করানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে কারখানার মালিক আবু তাহেরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তাকে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি নিয়ে এসব তৈরি করতে। যদি পরবর্তিতে কারখানার অনুমতি পাওয়া না যায় তাহলে সিলগালা করে দেয়া হবে। এটি প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে।
অনুসন্ধান করে দেখা যায়, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা বাংলা বাজারে জনতা ফুড প্রোডাক্টস, বাসটার্মিনালে নিউ ঢাকা ফুড প্রোডাক্টস, সদর উপজেলার খুরুস্কুলে কাওয়ার পাড়া বাজারে এশিয়া ফুড প্রোডক্টাস ও নাইট ফুড প্রোডাক্টাস এবং পৌরসভার সমিতি পাড়ায় জেনারেল ফুড প্রোডাক্টসসহ অধিকাংশ নামে- বেনামে বেকারিগুলোতে নোংরা পরিবেশে নানান ধরনের খাবার তৈরি হচ্ছে। নি¤œমানের উপকরণ দিয়ে অবাধে তৈরি করা হচ্ছে এসব বেকারিতে খাবার সামগ্রী। কারখানার ভেতরে যেখানে তৈরি খাবার রাখা আছে সেখানেই আটা ও ময়দার গোডাউনও। আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানা ধরনের তৈরি পণ্য। শ্রমিকরা খালি পায়ে এসব পণ্যের পাশ দিয়ে হাঁটাহাঁটি করে। আটা ময়দা প্রক্রিয়াজাত করানো কড়াই গুলোও অপরিষ্কার ও নোংরা। পণ্য তৈরির যন্ত্রপাতিতে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি ভনভন করে। এসব বেকারির পণ্যগুলো বিভিন্ন চায়ের দোকানে সরবরাহ করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, এসব প্রতিষ্ঠঅন থেকে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ বনরুটি, পাউরুটি, কেক ও বিস্কুটসহ বিভিন্ন ধরনের বেকারির সামগ্রী বাজারজাত করা হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঝে মধ্যেই এসব কারখানায় অভিযান চালিয়ে জেল-জরিমানা করে থাকে। তারপরও এসব বেকারিতে তৈরী পণ্যে উৎপাদন ও মেয়াদ থাকে না। এসব বেকারির মালিকেরা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পণ্য তৈরী করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
শহরের বিভিন্ন চায়ের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, একাধিক পলি প্যাকেটে ঝুলছে পাউরুটি, বাটারবন, কেক ও পেটিসসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্য। এসব পণ্যেও প্যাকেটে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লিখা নেই।
কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান বলেন, আরো যেসব বেকারিতে নোংরা-অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পণ্য তৈরি হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে যেকোন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। দ্রুত সময়ে এবিষয়ে একটি বড় অভিযান পরিচালনা করা হবে।

পাঠকের মতামত: