ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

লামায় দুই ত্রিপুরা কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা (ফলোআপ)

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ::

বান্দরবানের লামায় দুই ত্রিপুরা কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ধর্ষণের বর্ণনা দিয়ে লামা থানায় মামলা করেছে ভিকটিমরা। শুক্রবার (২৪ আগস্ট) সকালে ২ কিশোরীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

লামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অপ্পেলা রাজু নাহা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি। মামলা নং- ০৫, তারিখ- ২৩ আগস্ট ২০১৮ইং।

২ কিশোরী বলেন, বুধবার (২২ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ৯ টায় পাশের বাড়ির একজন মহিলাকে দিয়ে ত্রিশডেবা বিজিবি ক্যাম্পের ৩ সদস্য আমাদের ডাকে। আমরা গেলে বিজিবি সদস্যরা টাকা দিয়ে খারাপ কাজের প্রস্তাব দেয়। আমরা রাজি না হলে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দুইজন ধর্ষণ করে আর একজন পাহারা দেয়। কিছুক্ষণ পরে পাড়ার লোকজন এগিয়ে আসলে তারা আমাদের ছেড়ে দেয়, আমরা ভয়ে জঙ্গলে লুকিয়ে যাই। সারা রাত জঙ্গলে বৃস্টিতে ভিজেছি। ভোর ৫টায় বাড়ি ফিরে যাই।

ভিকটিম দুই জনের বাবা বলেন, খবর পেয়ে আমার পাড়ার লোকজন সহ ঘটনাস্থলে গেলে বিজিবির ৩ জনকে দেখতে পাই, কিন্তু আমাদের মেয়েদের দেখিনি। এই সময় ৩ বিজিবি সদস্যের সাথে আমাদের তর্ক বিতর্ক হয়। তারা আমাদের হুমকি দিয়ে চলে যায়। সারারাত মেয়েদের খুঁজে পাইনি। ভোরে মেয়েরা বাড়ি ফিরে আসে এবং আমাদের ঘটনা খুলে বলে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিমল ত্রিপুরা বলেন, বিষয়টি জানার পর মেয়েদের খোঁজ করতে এগিয়ে যাই। এ সময় একজন বিজিবি সদস্যদের একজন আমাদের বাধা দেন। তবে লোকজন আসায় সদস্যরা সরে যান। বিমল বলেন, তিন বিজিবি সদস্যকে স্থানীয় লোকজন চেনেন।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার (এসপি) জাকির হোসেন মজুমদার বলেছেন, বিজিবি কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে দুই কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা সুনির্দিষ্টভাবে তিন বিজিবি সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। তারা বলেছে একজন পাহারায় ছিলেন। অন্য দুজন ধর্ষণের করেছেন। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে।

ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার বলেন, পরিবারের দাবী মেয়েদের ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখার প্রয়োজন।

অপরদিকে এই ঘটনাটি বড় ধরনের ষড়যন্ত্র দাবী করে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি’র অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আসাদুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ একটি চক্র বনপুরস্থ ‘ত্রিশডেবা বিজিবি ক্যাম্পটি’ প্রত্যাহার করতে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এইটা তাদের কোন চক্রান্ত হতে পারে। তারপরেও বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। ঘটনার সাথে সাথে বিষয়টি তদন্তে বিজিবি’র মেজর জুনায়েদ (এমও) সহ একটি মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে প্রেরণ করা হয়েছে। কিশোরীদের দেয়া বক্তব্য মতে এই তিন জনের নামে ত্রিশডেবা ক্যাম্পে কোন বিজিবি সদস্য নেই।

লামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, দুই কিশোরীর জবানবন্দির ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: