ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়া সিন্ডিকেটের লবণ বোঝাই ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানে ২ লাখ ইয়াবা উদ্ধার

ডেস্ক নিউজ ::
রাজধানীর পূর্বাচল এলাকায় একটি লবণভর্তি ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানে তল্লাশি চালিয়ে ২ লাখ ৬ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে দুই চালক ও দুই হেলপারকে। মঙ্গলবার রাতে র‌্যাব-১ এই অভিযান চালায়।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, আসন্ন ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে পশুর চামড়া প্রক্রিয়াজাত করণের ব্যবহৃত লবণ বোঝাই একটি কাভার্ড ভ্যান ( ঢাকা মেট্রো-ট-২২-২৯২৭) থেকে ১ লাখ ৯৬ হাজার পিস এবং ট্রাকের ( ঢাকা মেট্রো-ট-২২-০২৮০) অতিরিক্ত চাকার ভিতর থেকে ১০ হাজার পিস ইয়াবা আটক করা হয়েছে। এগুলোর আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭ কোটি ২১ লাখ টাকা।

এ ঘটনায় কাভার্ড ভ্যানের চালক মো. মানিক মিয়া (২৭) ও হেলপার মো. আরিফ (২২) এবং ট্রাক চালক মো. মাসুম মিয়া (৪০) ও হেলপার মো. আব্দুল খালেককে (২৮) আটক করেছে র‌্যাব-১।

তিনি বলেন, আটক চারজনই গাড়ি চালাতে জানলেও তাদের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক লাইসেন্স নেই। এ চক্রের সদস্য ১৫ থেকে ২০ জন। তারা পরিবহন চালানোর ছদ্মবেশে মাদকের ব্যবসা করতো। গত ১ বছর ধরে আটককৃতরা এ চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এরআগে তারা আটটি চালান পাচার করে। এ চক্রটি নিয়ন্ত্রণ করে টেকনাফের দালাল রফিক।

মুফতি মাহমুদ বলেন, ইয়াবাগুলো সমুদ্র পথে মায়ানমার থেকে মহেশখালী হয়ে চকোরিয়ায় অন্য একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ে আসা হয়েছিল। ট্রাকচালক মাসুম ইয়াবাগুলো চকোরিয়ার সিন্ডিকেট থেকে বুঝে নেয়। ইয়াবা সংরক্ষণ শেষে প্রথমে ট্রাক নিয়ে মাসুম ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। এর ৩/৪ ঘণ্টা পর মানিক কাভার্ডভ্যান নিয়ে এগোতে থাকে। পরিকল্পনা ছিল সামনের ট্রাক ধরা পড়লেও পেছনের কাভার্ড ভ্যানে থাকা বড় চালানটি যেন রক্ষা পায়।

আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তিনি জানান, গত ২৮ জুলাই সকালে মাদক সিন্ডিকেটটি টেকনাফ থেকে লবণ লোড করে অপেক্ষা ও সুযোগ খুঁজতে থাকে। চলতি মাসের ৩ তারিখে টেকনাফ থেকে ঢাকায় রওনা হয়। রফিক নামে এক দালালের ছক অনুযায়ী চকোরিয়াতে গাড়ি মেরামতের অজুহাতে পূর্ব নির্ধারিত একটি ওয়ার্কশপে যাত্রা বিরতি করে। ওই সময় কাভার্ড ভ্যানে গোপন প্রকোষ্ঠ তৈরি করে বড় চালানটি রাখা হয়। এছাড়াও ট্রাকের অতিরিক্ত চাকার ভেতর দশ হাজার পিস ইয়াবা লুকানো হয়।

ইয়াবাগুলো সরবরাহ সম্পর্কে মুফতি মাহমুদ বলেন, কেরনীগঞ্জে লবণ নামানোর পর বসিলায় একটি স্থানে কাভার্ড ভ্যানের প্রকোষ্ঠ কেটে ইয়াবাগুলো বের করে বাকি তিন জনের সহায়তায় বিভিন্ন স্থানে পাঁচ মাদক ব্যবসায়ীর কাছে হস্তান্তর এবং ট্রাকের চাকায় ভর্তি ইয়াবা অদলবদল করে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা ছিল।

তিনি বলেন, পরিবহন সেক্টরে এ ধরণের আরও বেশকিছু সিন্ডিকেট আছে। কক্সবাজারের স্থানীয় কিছু দালাল মাদক ডিলারদের যোগসাজশে পণ্যবাহী পরিবহনের চালক ও সহকারীদের মোটা অংকের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের গাড়িতে ইয়াবা রাখার জন্য প্রলুব্ধ করে।

এক প্রশ্নের জবাবে মুফতি মাহমুদ বলেন, স্থলপথে ইয়াবার চালান অনেকটা কন্ট্রোল হলেও সমুদ্রপথে সম্ভব হয়নি। সেখানে হাজার হাজার ট্রলার আছে। ওখানকার ব্যবসায়ীদের কাছে সাগর অনুকূল বা প্রতিকূল বলে কিছু নেই। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ব্যাপারে তৎপর রয়েছে।

মাদকের গড ফাদারদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

পাঠকের মতামত: