ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

লামায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রুপের হামলা ও লুট, আতঙ্কে কয়েক গ্রামের মানুষ

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ::   বান্দরবানের লামা সদর ইউনিয়নে একটি সংঘবদ্ধ অস্ত্রধারী পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপ দোকান, বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে লুট করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে ইউনিয়নের বৈল্ল্যারচর, ঠাকুরঝিরি গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। সন্ত্রাসীদের হামলার খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে লামা থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন লামা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা।

অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হামলার খবর পেয়ে রাতভর চরম উৎকন্ঠার মধ্য দিয়ে সময় পার করেছে ইউনিয়নের বৈল্ল্যারচর, মেওলারচর, বরিশাল পাড়া, এম. হোসেন পাড়া, চিউনি পাড়া, লক্ষণ ঝিরি, ঠাকুরঝিরি, বেগুনঝিরি ও পাহাড়পাড়ার মানুষ। আতঙ্কে থাকা ৯ গ্রামের লোকজন ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড ঘিলাপাড়াস্থ একটি সেনাক্যাম্প স্থাপনে সরকারের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।

স্থানীয়রা বলেন, গত ৪ আগষ্ট শনিবার বৈল্ল্যারচর বাজার থেকে রবিউল আলম ভূঁইয়া এর নেতৃত্বে এক পাহাড়ি সন্ত্রাসী পুলু মং মার্মাকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয় স্থানীয়রা। সেই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে সংঘবদ্ধভাবে এই হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।

বৈল্ল্যারচর বাজারের দোকানদার নুরুল আমিন, মুজিবুর ও নুরুল আবচার বলেন, রাত ১০টার দিকে ৩০/৪০ জনের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ বাজারে হামলা চালিয়ে ৩টি দোকানে লুট করে। এসময় তারা নগদ টাকা, মোবাইল ও দোকানের মালামাল নিয়ে যায়। এছাড়া তাদের সামনে যে পড়েছে তার কাছ থেকে মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। তারপর রবিউল আলম ভূঁইয়ার বাড়িতে হামলা চালায়।

রবিউল আলম ভূঁইয়া বলেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আমার বাড়ি ঘিরে ফেলে। আশপাশের কয়েক বাড়ি থেকে তারা মোবাইল, টাকা নিয়ে যায়। আমার বাড়িতে হামলা চালালে খবর পেয়ে সারা গ্রামের মানুষ বেরিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনী পোশাকে মত ইউনিফর্ম পরিহিত ও অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত ছিল।

নাম প্রকাশ না করা সত্ত্বে এক জনপ্রতিনিধি বলেন, সন্ত্রাসীরা রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঠাকুর ঝিরি এলাকার জাহাঙ্গীর আলম ও জাহের উদ্দিনের দোকানে হামলা চালিয়ে মালামাল, নগদ টাকা, মোবাইল ও দোকানে লাগানো সৌর বিদ্যুৎ সিস্টেম নিয়ে যায়। আমাদের জানমালের নিরাপত্তা নেই। বুধবার সকালে সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। একই ধরনের হামলা আরো হতে পারে বলে ধারনা করে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করেন।

লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) লিয়াকত আলী বলেন, রাতে অফিসার ইনচার্জের নির্দেশে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। সন্ত্রাসীদের মূল টার্গেট রবিউল আলম ভূঁইয়ার সাথে কথা বলি। তাকে নিরাপত্তার স্বার্থে লামা বাজারে নিয়ে আসি।

প্রসঙ্গত, শনিবার (৪ আগষ্ট) সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বৈল্ল্যারচর বাজার হতে পুলু মং মার্মা (২৯) নামে একজনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে স্থানীয়রা। আটক পুলু মং মার্মা রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার শীলছড়ি চিতমরম এলাকার কেপিএম ময়দং পাড়ার সিথোয়াইউ মার্মার ছেলে। সে এই সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য বলে ধারনা করছে স্থানীয়রা।

পাঠকের মতামত: