ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কে বেইলি সেতুর ধস, ভোগান্তিতে লাখো মানুষ

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি ::

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের বেইলি সেতুর পশ্চিমপাশের এপ্রোচ আবারও কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে নদীতে তলীয়ে গেছে। সেতুধসের আশঙ্কা থাকায় রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি-গর্জনিয়া সড়কে গত শুক্রবার বিকেল থেকে ভারী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন অন্তত লাখো মানুষ।

স্থানীয় লোকজন জানান, ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন নাইক্ষ্যংছড়ি সদর, বাইশারী, দোছড়ি, রামুর গর্জনিয়া ও কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের দেড় লাখ মানুষ যাতায়ত করেন। সেতুর মাত্র ৫০ গজের মধ্যে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ১১ ব্যাটালিয়ন সদর ও নাইক্ষ্যংছড়ি থানা। রয়েছে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই সেতু নিয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ।

রামুর গর্জনিয়ায় ব্যবসায়ী ও যুবদল সম্পাদক সামশুল আলম শাহিন বলেন, জেলার প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ বাজার হচ্ছে- গর্জনিয়া বাজার। নাইক্ষ্যংছড়ি বেইলি সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় মালামাল সরবরাহ করতে ব্যবসায়ীদের কষ্টের পাশাপাশি অতিরিক্ত টাকাও খরচ হচ্ছে। যার প্রভাব ক্রেতাদের ওপর পড়ছে।

কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ও বর্তমান মেম্বার জয়নাল আবদীন বলেন, ‘রামু উপজেলা সদর থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি হয়ে গর্জনিয়ায় যাওয়া লাগে। ভারী বর্ষণ হলেই নাইক্ষ্যংছড়ি বেইলি সেতুটির এপ্রোচ তলীয়ে যায়। পরে কয়েকটা বালির বস্তা ফেলে মেরামত করা হয়। এটা এলাকাবাসীর একটা বড় দু:খ। যেকোন মুহুর্তে ওই সেতু ধসে পড়তে পারে।’ তিনি মনে করেন বেইলি সেতুটির পাশেই নতুন একটি সেতু নির্মাণ করা জরুরি।

২০১৪ সালের ২৩ জুলাই কাঠভর্তি ট্রাক পারাপারের সময় নাইক্ষ্যংছড়ি বেইলি সেতুটি ধসে পড়ে। দীর্ঘদিন পর সেতুটি পুনরায় মেরামত করে যানবাহান চলাচলের উপযোগী করা হয়। কিন্তু কিছুদিন পর থেকে তা আবারও নড়বড়ে হয়ে পড়ে।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী বলেন, সদরের বেইলি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার লাখো মানুষ বিপাকে পড়েছেন। সুবিধামতো বিকল্প কোন যাতায়ত ব্যবস্থা না থাকায়- দ্রæত সময়ের মধ্যে সেতুটি সচল করা দরকার। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো.কামাল উদ্দিন বলেন, বেইলি সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এখন ভারী বর্ষণে এপ্রোচ তলীয়ে গিয়ে উপজেলা সদরের সাথে, চার ইউনিয়নের বাসিন্দাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। একই স্থানে নতুন একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া আফরিন কচি বলেন, অধিক গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। তাঁরা কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্র জানায়, বান্দরবান সওজ বিভাগের তত্তবধানে ১৯৮৭ সালের দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি খালের ওপর এই বেইলি সেতু নির্মাণ করা হয়। সংস্কারের অভাবে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হলে মালবোঝাই ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু যাতায়াতের বিকল্প সড়ক না থাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সেতুর ওপর দিয়ে কাঠ, বালু, ইট, পাথর ও তামাকবোঝাই ট্রাক চলাচল করে আসছিল। সওজ বিভাগের বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী সজীব আহমেদ বলেন, সেতুটি সংস্কার ও রক্ষার জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

9

পাঠকের মতামত: