ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

‘উত্তর সাতকানিয়া’ নামে থানার দাবিতে বাসিন্দারা রাজপথে

আজ কেরানীহাটে মানববন্ধন এবং কাল প্রতিবাদ সমাবেশ

চট্রগ্রাম প্রতিনিধি ::

সাতকানিয়া উপজেলার ছয় ইউনিয়ন এবং চন্দনাইশে দুই ইউনিয়নসহ আট ইউনিয়ন নিয়ে নতুন থানা গঠন এবং নামকরণ নিয়ে তুমুল প্রতিবাদ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণ এবং সাতকানিয়ার ছয় ইউনিয়নের বাসিন্দাদের আপত্তি আমলে না নিয়ে ‘একতরফা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টার’ অভিযোগ ওঠেছে। এর প্রতিবাদে রাজপথে নামছেন স্থানীয়রা।

আজ শুক্রবার বিকেলে সাতকানিয়ার কেরানীহাটে মানববন্ধন কর্মসূচি এবং আগামীকাল শনিবার প্রতিবাদ সমাবেশ ডাকা হয়েছে। সাতকানিয়ার ছয় ইউনিয়নের বাসিন্দাদের নিয়ে এই আন্দোলন শুরু হয়েছে। এতে ছয় ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ, সব দলের রাজনৈতিক নেতা এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে মানববন্ধন কর্মসূচি দিয়েছে সম্মিলিত নাগরিক সমাজ এবং প্রতিবাদ সভা ডেকেছেন ওই ছয় ইউপি চেয়ারম্যান। যে ছয় ইউনিয়ন নিয়ে উত্তর সাতকানিয়া থানা গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সেগুলো হচ্ছে কেঁওচিয়া, বাজালিয়া, পুরানগড়, ধর্মপুর, কালিয়াইশ ও খাগরিয়া।

প্রস্তাবিত থানা গঠন ও নামকরণ নিয়ে বিতর্ক এবং প্রতিবাদ কেন?-এমন প্রশ্নের জবাবে থানা ও উপজেলা গঠনের আন্দোলনের প্রথম উদ্যোক্তা প্রবীণ সাংবাদিক জসীম চৌধুরী সবুজ জানান, ২০০৭ সালে উত্তর সাতাকনিয়ার ছয়টি এবং চন্দনাইশ থানার দুটি ইউনিয়নসহ মোট ৮ ইউনিয়ন নিয়ে একটি উপজেলা গঠনের প্রস্তাব করেছিলাম। ওই সময় গণশুনানি হয়েছিল। পরবর্তীতে সরকারি গেজেট জারি হওয়ার আগ মুহূর্তে দোহাজারীর কিছু মানুষ সাতকানিয়ার মানুষের নামে কুৎসা রটনা এবং নানাভাবে হেয় প্রতিপন্নমূলক কথা বলতে থাকে এবং অভিযোগ দেন। এরপর নতুন করে উপজেলা ও থানা গঠিত হয়নি। এখন নতুন করে থানা গঠনের যে প্রস্তাব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, সেখানে চট্টগ্রাম-১৪ সংসদীয় আসনের ছয় ইউনিয়ন এবং চন্দনাইশের দোহাজারী ও ধোপাছড়িকে রাখা হয়েছে। কিন্তু কৌশলে নতুন থানার নামকরণ প্রস্তাব করা হয়েছে ‘দোহাজারী-সাঙ্গু থানা’।

এতে সাতকানিয়ার ছয় ইউনিয়নের মানুষকে কৌশলে অবহেলা ও অবজ্ঞা করা হয়েছে উল্লেখ করে সাংবাদিক জসীম চৌধুরী সবুজ বলেন, ‘নতুন থানা গঠনে স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী কৌশলে এককভাবে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছেন। এ কারণে জেলা প্রশাসকের গণশুনানির সময় দেওয়া আপত্তিও আমলে নেয়নি প্রশাসন।’

জসীম চৌধুরী সবুজ বলেন, ‘নতুন থানার প্রস্তাব পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে যাওয়ার পর দোহাজারী-সাঙ্গু থানা নামকরণের বিষয়টি জানতে পারেন ছয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা। এরপরই তাঁরা ঢাকায় গিয়ে আইজিপি এবং স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দেখা করেন। গত সপ্তাহে ছয় চেয়ারম্যানকে নিয়ে আমি স্বরাষ্ট্র সচিবকে বিষয়টি বলেছি। আপত্তি জানিয়ে আবেদনও করেছি। তখন স্বরাষ্ট্র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন প্রস্তাবিত থানার প্রস্তাব স্থগিত করার মৌখিক আদেশ দেন এবং নতুন করে প্রস্তাব পাঠাতে অনুরোধ জানান।’

সাতকানিয়া যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, ‘‘চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি ও মিরসরাই উপজেলায় দুটি করে থানা। সেখানে দুই উপজেলার ইউনিয়ন নেওয়া হয়নি। সাতকানিয়া উপজেলায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার সুবিধার্থে দুটি থানা গঠন করা যেতেই পারে, সেখানে চন্দনাইশের দুটি ইউনিয়ন কেন? তাদের সঙ্গে সাতকানিয়ার ভৌগোলিক অবস্থানগত দূরত্ব রয়েছে। এ কারণে আমরা উত্তর সাতকানিয়া নামে থানার জন্য আন্দোলন করছি। আন্দোলন সফল না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাব না।’’

পাঠকের মতামত: