ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন পণ্ড, প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ::

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক খ. আলী আর রাজীকে ছাত্রলীগের দেওয়া প্রাণনাশের হুমকি ও অবাঞ্চিত ঘোষণার প্রতিবাদে এবং নিরাপত্তা প্রদানের দাবিতে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করতে চাইলেও তা ছাত্রলীগের প্রাণনাশের হুমকির মুখে পন্ড হয়ে যায় মানববন্ধন। আজ রবিবার সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ রবিবার বেলা ১১টার দিকে মানববন্ধনের জন্য সমাজবিজ্ঞান অনুষদের নিচে জড়ো হয় যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন শুরু করতে গেলে ছাত্রলীগের বাঁধা ও হুমকির মুখে তা পণ্ড হয়ে যায়। পরে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে শ্রেণি কক্ষে গেলে একদল ছাত্রলীগ কর্মী সেখানে গিয়ে দফায় দফায় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধরের চেষ্টা করে। পরে বিভাগের শিক্ষকদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

মানববন্ধনের সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীদের প্রাণনাশের হুমকি এবং শ্রেণিকক্ষে এসে দফায় দফায় মারধরের চেষ্টা করায় দুপুর ১টার দিকে মুখে কালো কাপড় বেঁধে ক্লাসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ওই বিভাগের প্রথম বর্ষ থেকে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে তারা অনিদিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, কোনও শিক্ষক যদি সরকারবিরোধী কোনও বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে থাকে সেটা গণন্ত্রাতিকভাবে প্রতিহিত করুন। কোনও সংগঠন কেন সে বিষয়ে হুমকি দিয়ে আসবে। কেন একজন শিক্ষককে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হবে? কেন আমাদের শিক্ষককে অবাঞ্চিত ঘোষণা প্রতিবাদ এবং নিরাপত্তা প্রদানের দাবিতে কথা বলতে গেলে প্রাণনাশের হুমকির মুখে পড়তে হবে। আমাদের কি কোনও স্বাধীনতা নেই। যারা আমাদের ক্লাস রুমে এসে হুমকি ও মারধর করতে আসতে পারে তারা বাহিরেও আমাদের ওপর হামলা করবে না তার নিশ্চয়তা কি? সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে পর্যন্ত আমাদের নিরাপত্তা প্রদান ও হুমকিকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করবে সে পর্যন্ত আমরা ক্লাস বর্জন করলাম।’

মানববন্ধনে হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে চবি ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি মনছুর আলম বলেন, সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম ও যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খ. আলী আর রাজী কোটা সংস্কার আন্দোলনে উষ্কানি দিয়ে ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি করায় তাদের বিরুদ্ধে আমরা চবি উপাচার্য বরাবর একটি স্বারকলিপি দিয়েছি। যারা এই দুই শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে কোনও কথা বলবে তাদেরকে চবি ছাত্রলীগ প্রতিহিত করবে।

এদিকে শ্রেণি কক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের মারধরের চেষ্টা ও হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের কোনও কর্মী ক্লাস রুমে গিয়ে মারধরের চেষ্টা করেনি। কে বা কারা এই কাজ করেছে সেটা আমরা জানি না।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নিয়াজ মোরশেদ রিপন বলেন, মানববন্ধন কোথায় হয়েছে? এবং সেখানে কি হয়েছে আমরা জানি না। কোনও ধরনের অভিযোগও আমাদের কাছে আসেনি।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি করার অভিযোগে সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম ও যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খ আলী আর রাজীর বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের দেওয়া সেই স্বারকলিপির ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে চবি কর্তৃপক্ষ। এই কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

পাঠকের মতামত: