ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

মহেশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলে আলটিমেটাম

 ছাত্রলীগ নেতাদের সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সদ্য অনুমোদন দেয়া মহেশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করে প্রকৃত ছাত্র ও ত্যাগী নেতাদের সমন্বয়ে পুনরায় কমিটি দেয়ার দাবি জানিয়েছে মহেশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের নেতারা।  সোমবার (৯জুলাই) কক্সবাজার শহরের এক হোটেলের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের প্রতি এই দাবি জানিয়ে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে নেতারা। তা না হলে দুর্বার আন্দোলন ও মামলা দায়েরের করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, সদ্য ঘোষিত মহেশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি সম্পূর্ণ সংগঠনের গঠনতন্ত্র বিরোধী। কেননা কমিটির সভাপতি হালিমুর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহামদ বাবু’ দু’জনই দায়িত্ব পালনে অযোগ্য। কারণ গঠনতন্ত্র মোতাবেক সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক/যুগ্ম আহ্বায়ক পদে দু’বার বহাল থাকলে পরবর্তীতে আর প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতাই রাখে না। একই সাথে ব্যবসায়ী ও অছাত্রও ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচিত হতে পারে না। কিন্তু হালিমুর রশিদ পর পর দু’বার যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। একই সাথে তিনি ‘মেসার্স মারিয়া এন্টারপ্রাইজ’ (আইডি নং-৭৩৬) এর স্বত্তাধিকারী।

অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহামদ বাবু একজন অছাত্র। বর্তমানে তার কোনো ছাত্রত্ব নেই। তার বিরুদ্ধ একাধিক মামলা রয়েছে। তার ভগ্নিপতি হোয়ানকের সাবেক চেয়ারম্যান এনামুল করিম ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সদস্য। মহেশখালীতে এনাম একজন অস্ত্র ব্যবসায়ী হিসেবে স্বীকৃত। একাধিক মামলার আসামী হয়ে বর্তমানে পলাতক রয়েছে। তার অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করে বাবু। জাতীয় নির্বাচনের আগে অত্যন্ত সুকৌশলে বাবুকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা একটি বিরোধী চক্র। বিশাল অংকের টাকার বিনিময়ে তাকে সাধারণ সম্পাদকের পদ দেয়া হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে সদ্য ঘোষিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইনজামামুল হক জুসিয়ান বলেন, গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে অযোগ্যদের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক করায় উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। কমিটি গঠনের কোনে খবর আহ্বায়ক কমিটিকে জানানোই হয়নি। এমনকি নির্বাচনের আগে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে স্থানীয় দলীয় সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের নেতাদের অবহিত করতে প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শ থাকলেও মহেশখালী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে কাউকে জানানো হয়নি।

ইনজামামুল হক জুসিয়ান বলেন, সংগঠনের বিরুদ্ধে হওয়ায় আমি মনে করি এই কমিটি নীতি আর নৈতিকতার বিরুদ্ধে হয়েছে। আমাকে কেন সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে? আমিতো তাদের কাছে পদ চাইনি। আমাকে না জানিয়ে রাতের অন্ধকারে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে কমিটি অনুমোদন দেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। দু’জন বিতর্কিত ব্যক্তিকে কমিটি দেয়ায় আমি উক্ত পদ থেকে পদত্যাগ করছি। আমার মতো মহেশখালীর ছাত্রলীগের সব নেতাকর্মী এই বিতর্কিত কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সব মিলে এটি একটি চরম বিতর্কিত কমিটি হয়েছে। তাই আমি সাংগঠনিক পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, ‘বিতর্কিত এই কমিটি বাতিল করতেই হবে। যতক্ষণ তা বাতিল হবে না ততক্ষণ আমারা আন্দোলন চালাবো। এই বিতর্কিত কমিটিকে মাঠেই নামতে দেয়া হবে না।’ কমিটি বাতিলের প্রথম কর্মসূচী হিসেবে আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টায় মহেশখালী উপজেলা কার্যালয় চত্বরে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। পরে আরো প্রতিবাদ কর্মসূচী দেয়া হবে বলে জানান নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনের উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক নুরুদ্দীন মাসুদ ও মোবারাক হোসেন বারেক, বড়মহেশখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দীন জাহাঙ্গীর শিমুল, মহিউদ্দীন মোহাম্মদ শাকের, ছোটমহেশখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ইরিয়ান সিকদার, শাপলাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দীন, রাসেদুল ইসলাম রুবেল, শাহনেয়াজ, ইমরান উল্লাহসহ আরো অনেকে।

পাঠকের মতামত: