ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

চকরিয়ায় চিংড়ি প্রজেক্ট দখলে নিতে প্রকাশ্যে মহড়া, আতঙ্কে ৫৩৪ পরিবার

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

চকরিয়া উপজেলার রামপুর মৌজার চিংড়িজোনে পাঁচশত ৩৪ পরিবারের মালিকানাধীণ হাজার একর জায়গা জবর দখলে নিতে ভাড়াটে অস্ত্রধারী জড়ো করে মহড়া দিচ্ছে প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা। বর্তমানে জায়গা জবরদখলের জন্য অভিযুক্ত ভূমিদস্যুরা অসহায় এসব পরিবার সদস্যদেরকে নানাভাবে হুমকি ও বিভিন্ন মামলার মাধ্যমে হয়রানী করার অপচেষ্ঠা চালাচ্ছে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জায়গার মালিক ভুক্তভোগীরা অসহায় পরিবারের সদস্যরা এব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

ভুক্তভোাগী পরিবার গুলোর অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার রামপুর মৌজাস্থ আর এস ১০৮৬ দাগের এক হাজার একর জায়গা বদরখালী ৩নম্বর ব্লকের খাসপাড়া এলাকার মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে আবদুল গণিসহ পাঁচশত ৩৪টি পরিবার ১৯৭৮সাল পর্যন্ত দীর্ঘসময় ধরে ভোগদখলে থেকে মৎস্য চাষাবাদ আসছিল। পরবর্তীতে ওই জায়গায় নিয়ে কক্সবাজার আঞ্চলিক কর্মকর্তা চিংড়ি চাষ সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্রগ্রাম সাব জজ আদালতে একটি মামলা করে। তৎকালীন জিয়াউর রহমান সরকারের শাসন আমলে ওই জায়গা সমুহের মধ্যে ১০০ একর ও ১৫০ একর করে নামে বেনামে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তা ও ভূমিদস্যুদের নামে লিজ দেন। ওই লিজের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী জায়গার মালিকদের পক্ষথেকে আবদুল গণি গং বাদী হয়ে অপর ৩৪/১৯৭৯ মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার শুনানীকালে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ জায়গার উপর উকিল কমিশন নিয়োগ করে।নিয়োগকৃত উকিল কমিশন বিরোধীয় জায়গা নিয়ে মামলার বাদীর পক্ষে রিপোর্ট প্রদান করেন।

মামলার বাদি আবদুল গণি জানান, জায়গার ব্যাপারে আমাদের পক্ষে রির্পোট দেয়ার পরে ১৪০/১৯৮১মামলাটি হস্তান্তর করে কক্সবাজার ২য় সাব জজ আদালতে। দীর্ঘসময় মামলার শুনানী শেষে আদালত ১৯৮৩ সালে বাদীর পক্ষে চুড়ান্ত রায় প্রদান করেন। বর্তমানে আদলতের রায় অমান্য করে লাখ লাখ টাকা উপটোকন হাতিয়ে নিয়ে কতিপয় ব্যক্তিকে আঞ্চলিক মৎস্য অধিদপ্তর নতুন করে লিজ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ৫৩৪ পরিবারের ভোগদখলীয় ওই জায়গা। এরই বিরুদ্ধেও ভুক্তভোগীদের পক্ষথেকে ২য় সাব জজ আদালতে অপরজারী মামলা ৩/২০১৪ দায়ের করেন। আদালত দীর্ঘ শুনানী করে মামলায় বাদীর বিপক্ষে রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী রিভিশন মামলা ৩৮/২০১৪ দায়ের করেন। পরবর্তীতে জেলা জজ আদালত বাদীর পক্ষে চুড়ান্ত রায় প্রদান করে এবং ২য় সাব জজ আদালতের দেয়া আদেশ সম্পূর্ণ বাতিল করেন। একই সাথে আদালত বাদীপক্ষকে তাদের ভোগদখলীয় জায়গা বুঝিয়ে দেয়ার জন্য দ্বিতীয় সাব জজ আদালতকে নির্দেশনা দেন। বর্তমানে আদালতে মামলাটি চলমান রয়েছে।

ভুক্তভোগী ৫৩৪ পরিবারের পক্ষে অন্যতম অংশিদার আবদুল গণি অভিযোগ করেছেন, আদালতে মামলার কার্যক্রম চলমান থাকলেও তা উপেক্ষা করে স্থানীয় প্রভাবশালী ভুমিদুস্য চক্র সন্ত্রাসী বাহিনী জড়ো করে তাদের (৫৩৪ পরিবারের) ভোগদখলীয় জায়গা জবর-দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বর্তমানে তাঁরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেখানে প্রতিনিয়ত মহড়া দিচ্ছে। পাশাপাশি দখলচেষ্ঠা নিশ্চিত করতে প্রভাবশালীরা কৌশলে ভুক্তভোগী পরিবার গুলোর সদস্যদেরকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার অপচেষ্ঠা চালাচ্ছে। এ অবস্থার কারনে বর্তমানে জায়গার মালিকপক্ষ ৫৩৪টি পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী অসহায় পরিবার গুলো তাদের ভোগদখলীয় জায়গা রক্ষা করতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ##

পাঠকের মতামত: