ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

লামায় “দরিদ্র মার জন্য” মাতৃত্বকাল ভাতাভোগীদের দেড় লক্ষ টাকা আত্মসাৎ

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ::

বান্দরবানের লামা উপজেলায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অধিনে দরিদ্র মানুষের জন্য মাতৃত্বকাল ভাতা প্রদান কর্মসূচীর উপকারভোগীদের প্রশিক্ষণ প্রদান না করেই সরকারী কোষাগার থেকে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। মাতৃত্ব ভাতাভোগীদের নামে ভুয়া মাষ্টাররোল তৈরি করে ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে হিসাবরক্ষণ অফিসে প্রশিক্ষণ ভাতা উত্তোলনের জন্য বিল দাখিল করে এই প্রশিক্ষণ ভাতা উত্তোলন করা হয়।

উপজেলার গজালিয়া, লামা সদর, ফাঁসিয়াখালী, আজিজনগর, সরই, রুপসীপাড়া ও ফাইতং ইউনিয়নের ৮৮৯ জন দরিদ্র মাতা সরকার থেকে ভাতা পেয়ে থাকেন। প্রতি ইউনিয়নে ১২৭ জন মাতৃত্বভাতা ভোগী রয়েছে। মায়ের গর্ভকালীন পরিচর্যা, প্রসূতির স্বাস্থ্যসেবা, শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য, নবজাতক পরিচর্যা, পুস্টি, মাতৃদুগ্ধকালীন মা ও শিশুর পরিচর্যা সহ মায়েদের স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন পূর্বক আত্মসামাজিক উন্নয়নের জন্য সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ভাতা প্রদান কর্মসূচীর আওতায় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ভাতা ভোগী প্রতিজন মাকে তিন দিনের প্রশিক্ষণ বাবদ ১৫০ টাকা প্রদান করার জন্য সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ইং মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর লামা উপজেলার ৮৮৯ জন ভাতাভোগী উপকারভোগীর প্রশিক্ষণ বাবদ ১ লাখ ৫৫ হাজার ৫০ টাকা বরাদ্দ প্রদান করেছে। বরাদ্দ প্রদান করার ৬ মাস অতিবাহিত হলেও লামা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয় ভাতাভোগী মায়েদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। সরকারী বরাদ্দের বিষয়টি গোপন রাখা হয়েছে। জুন ২০১৮ইং এর শেষ সপ্তাহে ভাতাভোগী উপকারভোগীদের ভুয়া স্বাক্ষরিত মাষ্টাররোল তৈরি করে হিসাবরক্ষণ অফিস থেকে বিস পাস করে সোনালী ব্যাংক লামা শাখা থেকে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৫০ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

অপরদিকে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আয়বর্ধন (আইজিএ) প্রশিক্ষণ প্রকল্পের অধিনে ফার্ণিচার ক্রয়ের জন্য গত ১৫ মে ২০১৮ইং ৬০ হাজার ৫৫০ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে ফার্ণিচার ক্রয় না করেই ভুয়া বিল ভাওচার দিয়ে হিসাবরক্ষণ অফিস থেকে বিল পাস করে সোনালী ব্যাংক লামা শাখা থেকে ভ্যাট কর্তন পূর্বক ৫৪ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এই রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত ফার্ণিচার ক্রয় করা হয়নি।

আরেক অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আয়বর্ধন (আইজিএ) প্রশিক্ষণ প্রকল্পের অধিনে ৪০ জন মহিলা গত এপ্রিল, মে ও জুন মাস পর্যন্ত ৩ মাস মেয়াদী সেলাই ও বিউটিফিকেশন ট্রেডে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছে। প্রতিমাসে প্রতিজনের জন্য ২ হাজার টাকা করে ভাতা সরকারী বরাদ্দ রয়েছে। প্রশিক্ষণার্থীদের থেকে মাষ্টাররোলে স্বাক্ষর নিয়ে এপ্রিল, মে ও জুন মাসের প্রশিক্ষণভাতা বাবদ সরকারী কোষাগার থেকে ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। প্রশিক্ষাণার্থীদের মাঝে ভাতার টাকা বিতরণের সময় অনুপস্থিতির কথা বলে জন প্রতি বিভিন্ন হারে টাকা কর্তন করে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অফিস সহায়ক নিজাম উদ্দিন।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক নিজাম উদ্দিন আরো জানান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা লামা, আলীকদম, বান্দরবান সদর সহ বান্দরবান জেলার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন। যে কারণে অনেক হিমসিম খেতে হয়।

উপরে বর্ণিত বিষয় গুলো নিয়ে বক্তব্য গ্রহণের জন্য উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুষ্মিতা খীসা সাংবাদিককে জানান, যখন প্রশিক্ষণ হয় তখন জানানো হবে।

পাঠকের মতামত: