ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় কলেজ ছাত্রীর মৃত্যু: হত্যা নাকি আত্মহত্যা ?

চকরিয়া প্রতিনিধি ::
চকরিয়ায় এক কলেজ ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যু হত্যা নাকি আত্বহত্যা এখনো পরিস্কার নয়। কেউ বলছেন, ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন সময় শারীরিক নির্যাতন করতো সৎ মা। সর্বশেষ গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিলে দগ্ধ হয়ে ওই ছাত্রী মারা গেছে। আবার কেউ বলছেন, ওই ছাত্রী নিজেই গায়ে কেরোসিন দিয়ে আগুনে পুড়ে আত্মহত্যা করেছেন।
থানা পুলিশ খবর পেয়ে ওই ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। এরআগে ওই ছাত্রীকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গত শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটলেও পুলিশকে খবর দেয়া হয় সন্ধ্যায়। এরপর রাতে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে প্রেরণ করা হয় কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে। উপজেলার ফাঁসিয়াখালীর উচিতার বিল এলাকার ডা. নুরুল ইসলাম চৌধুরীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া ছাত্রীর নাম সাদিয়া সুলতানা (২০)। সে ডুলাহাজারা কলেজের একাদশ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
এলাকাবাসী জানায়, উচিতার বিলের ডা. নুরুল ইসলাম চৌধুরীর দুই বিয়ে। এরমধ্যে প্রথম স্ত্রী থাকেন চট্টগ্রাম শহরে। প্রথম স্ত্রীর এক ছেলে ও এক মেয়ে থাকেন চট্টগ্রামে। অপর দুই ছেলে–মেয়ে থাকেন বাবার দ্বিতীয় স্ত্রীর সংসারে। এনিয়ে সৎ মা প্রায়সময় তাদের নির্যাতন করতো। এরমধ্যে কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী সাদিয়া সুলতানাকে শারিরীকভাবেও মারধর করতো। মারা যাওয়া সাদিয়ার বড় বোন জেরিন সুলতানা ও ভাই সাকিবুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেছেন, তাদের সৎ মা প্রায় সময় বোন সাদিয়াকে শারিরীকভাবে নির্যাতন করতো। সর্বশেষ সাদিয়াকে ঘুমন্ত অবস্থায় গায়ে কেরোসিন দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন সৎ মা।
তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের বাবাও জড়িত রয়েছেন। তবে সাদিয়ার বাবা ডা. নুরুল ইসলাম ও সৎ মা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, সাদিয়া নিজেই গায়ে কেরোসিন দিয়ে আগুনে পুড়ে আত্মহত্যা করেছে। এমনকি সাদিয়াকে বাঁচানোর জন্য তারা আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।
ঘটনার বিষয়ে চকরিয়া থানার ওসি মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘কলেজ ছাত্রী সাদিয়া আগুনে পুড়ে মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে সে নিজেই কী আগুনে পুড়ে আত্মহত্যা করেছে, না–কী কেউ পরিকল্পিতভাবে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে তার তদন্ত চলছে। আপাতত সুরতহাল তৈরি শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত রোববার রাত সাড়ে ৯টা এবিষয়ে থানায় কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ দেয়নি।’

পাঠকের মতামত: