ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

কোটিপতি’ ৩০০ মাদক কারবারির পিছু নিয়েছে দুদক

চকরিয়া নিউজ ডেস্ক :
মাদকের কারবার করে ‘কোটিপতি’ বনে যাওয়া ৩০০ ব্যক্তির সম্পদের খোঁজ নিতে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটি বলছে, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য এবং তাদের কাছে আসা অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে এই তালিকা করা হয়েছে। এতে যাদের নাম রয়েছে তারা দেশের শীর্ষ ‘মাদক ব্যবসায়ী’। তাদের বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করতে ‘শিগগির’ ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা। দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধে প্রাণহানি নিয়ে সমালোচনার মধ্যে মাদক ব্যবসায়ীদের অবৈধ সম্পদ ধরতে মাঠে নামল সরকারের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি। দুদক সচিব মো শামসুল আরেফিন রোববার বলেন, এসব মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে ৭৭টি নথি খোলা হয়েছে। দুদকের ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশালের বিভাগীয় পরিচালকদের তত্ত¦াবধানে এবং কমিশনের ২২টি সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা এসব অভিযোগ অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছেন।
মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকার বিষয়ে দুদকের একজন কর্মকর্তা বলেন, “তালিকায় মাদক কারবারিদের গডফাদার থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের মাদক ব্যসায়ীরা রয়েছেন। তালিকায় সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিসহ মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার নামও রয়েছে।” দুদক সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, “মাদক ব্যবসা করে যারা অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। ইতোমধ্যে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে, এই ক্ষেত্রে যদি কেউ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে থাকে তাকে ন্যূনতম ছাড় দেওয়া হবে না।”
মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান মূলত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হলেও দুদক আইন-২০০৪ এর ২৭ ধারা অনুযায়ী শুধু ‘জ্ঞাত আয়ের উত্স বহির্ভূত সম্পত্তির দখলকারী’ মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে কমিশনের। এই ধারা মোতাবেক অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়ী ব্যক্তির সর্বোচ্চ ১০ বছর ও সর্বনিম্ন ৩ বছরের কারাদ-ের বিধান রয়েছে। একই সাথে অর্থদ- এবং দোষী ব্যক্তির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার বিধান রয়েছে এই ধারায়।
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে সরবরাহ করা ১৪১ জন এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকে পাওয়া ১১০ জন মাদক ব্যবসায়ীকে তালিকায় রাখা হয়েছে। বাকিরা এসেছে সংবাদমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদন, একাধিক ব্যক্তির করা লিখিত অভিযোগ ও দুদকের হটলাইনে আসা অভিযোগ যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে। এই তালিকা আরও বাড়তে পারে বলে দুদক সচিব জানিয়েছেন। দুদকের তালিকায় থাকা ‘শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের’ মধ্যে ৪৯ জনের একটি তালিকা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের হাতে এসেছে।
এই তালিকায় মধ্যে মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা কক্সবাজারের টেকনাফের ১২ জন, কক্সবাজার সদরের একজন, চট্টগ্রামের একজন, ফেনীর পাঁচজন, রাজশাহী বিভাগের ২২ জন, নারায়ণগঞ্জের দুইজন, লক্ষ¥ীপুরের দুইজন, ফরিদপুরের একজন এবং ঢাকার তিন ‘শীর্ষ মাদক কারবারির’ নাম রয়েছে। এই তালিকায় থাকা ঢাকার রূপনগরের ঝিলপাড়া চলন্তিকা বস্তি এলাকার নজরুল ইসলাম নজু গত ২৭ মে রাতে গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন। তালিকায় থাকা অন্য কেউ ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দকুযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত নন দুদক কর্মকর্তারা।

পাঠকের মতামত: