ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

চকরিয়ায় বর্ষাকালে বন্যার তান্ডব মোকাবেলায় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামতে পাউবোর উদ্যোগ

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদীতে বর্ষা মৌসুমের শুরুতে নেমে পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যা প্রতিরোধে এবার আগেভাগে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড। ইতোমধ্যে পাউবোর পক্ষ থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঝুকিপুর্ণ এলাকা চিহিৃত করে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সমুহ মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে। সর্বশেষ শনিবার উপজেলার উপকুলীয় তিনটি ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরির্দশন করে ঝুকিঁপুর্ণ পয়েন্টে বেড়িবাঁধ বর্ষার আগে মেরামত করার সিদ্বান্ত নিয়েছেন। পরিদর্শনকালে চকরিয়া-পেকুয়া আসনের এমপি হাজি মোহাম্মদ ইলিয়াছ, পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সবিবুর রহমান, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরউদ্দিন মুহাম্মদ শিবলী নোমান, পাউবোর চকরিয়া শাখা কর্মকর্তা তারেক বিন সগীর, চকরিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর মকছুদুল হক মধু, কোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার ও বিএমচর ইউপি চেয়ারম্যান এসএম জাহাংগীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

কক্সবাজার পাউবো চকরিয়া শাখা কর্মকর্তা তারেক বিন সগীর বলেন, প্রতিবছর বর্ষাকালের শুরুতে চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী নদীতে পাহাড়ি ঢল নামে। ওইসময় পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারনে ব্যাপক বন্যার সৃষ্ঠি হয়। ফলে নদীর পানি তীর উপড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পানির প্রবল ধাক্কায় নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

তিনি বলেন, গতবছরের বন্যার সময় চকরিয়া উপজেলার উপকুলীয় জনপদের কোনাখালী, বিএমচর ও পূর্ববড়ভেওলা ইউনিয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন বেশ কিছু বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অর্থবরাদ্দের অভাবে এতদিন মেরামত করা সম্ভব হয়নি। তবে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে যাতে বন্যার তান্ডবে পড়ে জনসাধারণ ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেইজন্য আগাম বন্যা মোকাবেলার অংশ হিসেবে পাউবো ক্ষতিগ্রস্ত এসব বেড়িবাঁধ বর্ষার আগে মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছেন।

এসও তারেক সগীর বলেন, কাজের অগ্রগতির অংশ হিসেবে গতকাল ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ পয়েন্ট পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ ইলিয়াছ, পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সবিবুর রহমান, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরউদ্দিন মুহাম্মদ শিবলী নোমান ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে জরুরী প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত এসব পয়েন্টে বেড়িবাঁধ মেরামত কাজ শুরু করা হবে।

কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার বলেন, গতবারের বন্যার তান্ডবে আমার ইউনিয়নে একাধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওইসময় ক্ষতিগ্রস্ত পয়েন্ট দিয়ে নদীর পানি ঢুকে রীতিমত আমার ইউনিয়নটি জোয়ার-ভাটায় পরিণত হয়। বিষয়টি পাউবো ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হলে ইতোমধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি পয়েন্টের বেড়িবাঁধ মেরামত করা হয়। তবে অবশিষ্ট থাকা আরো চারটি ক্ষতিগ্রস্থ পয়েন্টের বেড়িবাঁধ মেরামত না হওয়ায় বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়।

ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, আবেদনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ ইলিয়াছ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরউদ্দিন মুহাম্মদ শিবলী নোমানের সহযোগিতায় কোনাখালী ইউনিয়নের চারটি পয়েন্টের ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামত কাজ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন পাউবো। আশাকরি ক্ষতিগ্রস্ত অংশের বেড়িবাঁধ মেরামত কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হলে চলতি বর্ষা মৌসুমে বন্যার তান্ডব থেকে কোনাখালী ইউনিয়নের পাশাপাশি উপকুলের অন্তত ২০ হাজার মানুষ দুর্ভোগমুক্ত হবে।

পাঠকের মতামত: