ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

রামুর আলোচিত মানবপাচারকারি চক্রের হোতা রুমা শর্মার জামিন ফের নামঞ্জুর

সোয়েব সাঈদ, রামু ::

রামুর আলোচিত মানবপাচারকারি চক্রের হোতা রুমা শর্মার জামিন ফের নামঞ্জুর করেছে বিজ্ঞ আদালত। এনিয়ে টানা ৩ মাসের বেশী কারাভোগ করছেন তিনি। রুমা শর্মার নেতৃত্বে একটি চক্র কক্সবাজার-চট্টগ্রামের বেকার যুবকদের লন্ডনসহ বিভিন্ন দেশে লোভনীয় চাকরি দেয়ার নামে বিপুল টাকা আত্মসাত করেছে। এমন অভিযোগে কক্সবাজার সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ একাধিক মামলা করেছেন ভুক্তভোগিরা।

আটক হওয়া রুমা শর্মা রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের পূর্ব নোনাছড়ি রমনীপাহাড় এলাকার মনোহরী শর্মা দুলালের স্ত্রী। চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি রামু থানা পুলিশ তাকে আটক করে। এ মামলায় রুমা শর্মার স্বামী মনোহরী শর্মা দুলাল ও ছেলে রাহুল শর্মা পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাদের আটক করতে চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ গত ৮ মে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিজ্ঞ বিচারিক হাকিম আবু সালেহ নোমান রুমা শর্মার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এ আদালতে রুমা শর্মা ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন, চট্টগ্রামের খুলশী লালখান বাজার এলাকার রাধা কান্ত ধরের ছেলে কৃষ্ণ কান্ত ধর। মামলা নং ৬৮/১৮। একই আদালতে চট্টগ্রামের আশীষ শর্মা নামের আরেক ভুক্তভোগিও রুমা শর্মার নামে মামলা করেছেন। যা বর্তমানে পিবিআইতে তদন্তাধিন রয়েছে।

প্রতারনার শিকার কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সুরাজপুর গ্রামের নির্মল কান্তি শর্মার ছেলে পল্লী চিকিৎসক শংকর কান্তি শর্মা জানিয়েছেন, রুমা শর্মার ছেলে রাহুল শর্মা লন্ডন প্রবাসী। ছেলেকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে রুমা শর্মা ও তার স্বামী মনোহরী শর্মা প্রকাশ দুলাল তাকে লন্ডনে চাকরি দেয়ার নামে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ নিয়ে তিনি রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদ লিখিত অভিযোগ দেন এবং রামু থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

ইউনিয়ন পরিষদে রুমা শর্মা দোষী সাব্যস্ত হলেও টাকা প্রদানে গড়িমসি করেন। এতে নিরুপায় হয়ে তিনি ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর কক্সবাজার সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। পিবিআই কক্সবাজার এর উপ-পরিদর্শক মো. শরীফ উল্লাহ ঘটনার সত্যতা পেয়ে বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরই প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ বিচারিক হাকিম অভিযুক্ত রুমা শর্মা ও তার স্বামী এবং ছেলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স জানিয়েছেন, শংকর কান্তি শর্মার অভিযোগ পেয়ে উভয় পক্ষকে ডাকা হয়েছিলো। তদন্তে টাকা নেয়ার বিষয়টি প্রমানিত হলেও রুমা শর্মা ও তার লোকজন টাকা ফিরিয়ে দিতে গড়িমসি করেছিলো।

রামু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ছানা উল্লাহ জানান, রুমা শর্মার বিরুদ্ধে লন্ডনসহ বিভিন্ন দেশে চাকরি দেয়ার নামে বেকার যুবকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। এনিয়ে বিজ্ঞ আদালতে দায়েরকৃত মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে তাকে আটক করা হয়।

পাঠকের মতামত: