ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

জনগণের দরজায় বিচার পৌঁছাতে পারে গ্রাম আদালত -জেলা ও দায়রা জজ

প্রেস বিজ্ঞপ্তি ::

কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মীর শফিকুল আলম বলেছেন, ‘দেশের বিচার ব্যবস্থার যে কয়টি আদালত কাঠামো রয়েছে গ্রাম আদালত তার মধ্যে একটি। গ্রাম আদালত অন্যান্য আদালত থেকে কোনো অংশেই কম নয়। বরং প্রয়োগের ভিত্তিতে গ্রাম আদালতের গুরুত্ব একটুখানি বেশি।

শনিবার (১৯ মে) বিকালে জেলা জজ আদালতের সম্মেলন কক্ষে বিচারক ও পুলিশের সাথে ‘গ্রাম আদালত শক্তিশালী করণ ’ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ‘সর্বস্তরের মানুষ হাতের নাগালে বিচার পেতে পারে একমাত্র গ্রাম আদালতে। এতে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হয়। ফলে গরীব ও সাধারণ লোকজনের জন্য গ্রাম আদালতের গুরুত্ব অনেক বেশি। মূলত জনগণের দৌরগোড়ায় বিচার সেবা পৌঁছাতেই গ্রাম আদালতের প্রবর্তন। তাই লোকজনকে গ্রাম আদালতকে গুরুত্ব দিয়ে থানা ও আদালতে আসার প্রবণতা কমাতে হবে। এতে রোধ হবে হয়রানি, বাঁচবে অর্থ ও সময়। একই সাথে উপাজেলা ও জেলা পর্যায়ের ম্যাজিস্টেট আদালতের উপর চাপ কমে মামলার জট কমবে।’ এই জন্য তিনি গ্রাম আদালতে সমস্যা নিষ্পত্তি করতে জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান।

ইউএনডিপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতায় ও সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এ.এইচ.এম মাহমুুদুর রহমান, জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেবুন্নাহার আয়েশা, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ওসমান গণি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আশরাফ হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) বাবুল চন্দ্র বণিক, ইউএনডিপির কর্মকর্তা মাহমুদা আফরোজ ও শিরীন সুলতানা লীরা, জেলা জজ আদালতের পিপি এড. মমতাজ আহমদ, জেলা আইনজীবির সমিতির সভাপতি নূরুল ইসলাম। এছাড়াও থানার ওসিরা বক্তব্য রাখেন।

মতবিনিময় সভায় সামগ্রিক বক্তব্যে উঠে আসে, গ্রাম আদালত অনেক সুবিধার ও সহজলভ্য হলেও কিছু কারণে তা শক্তিশালী হচ্ছে না। কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে, অদক্ষ ইউপি চেয়ারম্যান, রাজনৈতিক বিভাজন ও ভোটের রাজনীতির কারণে চেয়ারম্যান কর্তৃক ন্যায় বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা, চেয়ারম্যানদের বিচারিক সীমাবদ্ধতা, থানায় মামলা নিতে পুলিশের অতি উৎসাহ। সমাধান হিসেবে উঠে আসে- গ্রাম আদালতকে শক্তিশালী করণে চেয়ারম্যান-মেম্বাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। পুলিশকে হুট করে মামলা না নিয়ে তা গ্রাম আদালতে পাঠাতে হবে। জনগণকে গ্রাম আদালতের সুফল সম্পর্কে অবহিতকরণ ও সেখানে মামলা করতে উৎসাহ দিতে হবে। স্বার্থের উর্ধ্বে থেকে চেয়ারম্যানদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম- জেলা ও দায়রা জজ-১ সালমা খাতুন, যুগ্ম- জেলা ও দায়রা জজ-২ সৈয়দ মো. ফখরুল আবেদীন। এছাড়াও সিনিয়র সহকারী জজগণ, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ, সহকারী জজবৃন্দ, জেলা প্রতি উপজেলার ওসি ও ওসির প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

পাঠকের মতামত: