ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

টেকনাফে চিংড়িঘের দখল নিয়ে গুলাগুলি : আটক ৩

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়ন মিনাবাজার এলাকায় চিংড়িঘের দখলকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দেলোয়ার হোসেন (৩০) কে অস্ত্রসহ পুলিশে দিয়েছে জনতা। সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের ৪/৫ জন আহত হয়েছে। উভয় পক্ষের আটক হয়েছে ৩ জন। ১৩ মে সকাল সাড়ে ৮টায় এঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলার মিনাবাজার এলাকায় নাফনদী সংলগ চিংড়িঘের নিয়ে স্থানীয় মিনাবাজার এলাকার দুই গ্রুপের মধ্যে র্দীঘদিন যাবত বিরোধ চলছে। এঘটনাকে কেন্দ্র করে মিনাবাজার এলাকাই উভয় পক্ষের লোকজন হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানোর জন্য চিংড়িঘেরে গিয়ে ফাকাঁ গুলি বর্ষণ করে আসছিল। এছাড়া ঘের বিরোধ নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে একটি অভিযোগ বিচারাধীন রয়েছে।

নুরুল আলম ও রহিমের কাছ থেকে মীর কাসেম, রহিম ও দেলোয়ার হোসেন এই চিংড়ি ঘেরটি গত ২০১৭ সালে লীজ নেন । লীজের পর থেকে মীর কাসেম, রহিম ও দেলোয়ার হোসেন দখলে থেকে চিংড়ি চাষ করে আসছে।

১৩ মে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় মিনাবাজার এলাকার নুরুল ইসলাম নান্নু গংয়ের লোকজন চিংড়ি ঘেরটি দখলে নেওয়ার জন্য ৫০/৬০ ব্যক্তি হানা দেয়। তারা এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়ে। এসব ফাকাঁ গুলি বর্ষণের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা আতংকের মধ্যে পড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিপক্ষের সশস্ত্র লোকজন লীজ গ্রহীতা দেলোয়ার হোসেনকে প্রথমে গুলি করে এবং পরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। আহত দেলোয়ার সাতঘরিয়াপাড়ার মৃত জলিল আহমদের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, গুরুতর আহত দেলোয়ার হোসেনের কোমরে একটি পুরাতন দেশীয় তৈরি কাটাবন্দুক কোমরে ঝুলিয়ে দিয়ে পুলিশকে খবর দেয়া হয় এবং প্রতিপক্ষের লোকজন দেলোয়ারকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। কাটা বন্দুরের সাথে একটি পুরাতন লম্বা দা ও হন্তিও দেয়া হয়। এসময় প্রতিপক্ষের মামুন (৩১) ও মন্নান (৩০) কে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদ করে মামুন ও মান্নানের কোন সম্পৃক্ততা না থাকায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় আটক দেলোয়ার হোসেন কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসাধীন।

ঘের মালিক দাবীদার নুরুল ইসলাম নান্নু জানান, তাদের চিংড়ি ঘের দখল করতে আসলে দেলোয়ার হোসেনকে অস্ত্রসহ তারা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। একটি দৈশীয় তৈরী কাটা বন্দুক,একটি গুলি,১টি রাম দা ও ১টি লোহার বড ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় বলে জানান তিনি ।

তিনি আরো জানান, ঘটনার পর হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির আইসি এসআই জাহিদ হোসেন সঙ্গীয় র্ফোস নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে আটক দেলোয়ারকে অস্ত্রসহ থানায় নিয়ে যায়।

স্থানীয় মেম্বার শাহ আলম জানান, র্দীঘদিন যাবত চিংড়ি ঘের দখলকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। দখল বেদখল নিয়ে রাতে ও সকালে গুলাগুলির ঘটনা ঘটছে আমি এর বাইরে আর বিস্তারিত জানিনা।

টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া জানান,অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। অস্ত্রসহ আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যংইউনিয়নের, নয়াবাজার, খারাংখালী, মিনাবাজার, ঝিমংখালী, কান্জর পাড়া এলাকায় দিনদিন অস্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। এসব অস্ত্র ব্যবহারকারীরা অনেকেই এলাকায় নিজেদের আদিপাত্য বিস্তার ও জমি দখল, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করার জন্য এসব অবৈধ অস্ত্র নিজেদের কাছে মজুদ রাখে বলে জানা যায়। এর আগেও সাতঘরিয়াপাড়ার মৃত বদিউর রহমানের ছেলে জয়নালকে হাসইন্নার টেক থেকে একই কায়দায় মারধর করে একটি দেশীয় তৈরি বন্দুক সহ পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এঘটনায় জয়নালের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলাও হয়।

পাঠকের মতামত: