ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

পল্লী বিদ্যুতের “বৃষ্টি প্যাকেজ” !

আতিকুর রহমান মানিক ::
সাম্প্রতিক সময়ে রেকর্ড পরিমান বিদ্যুৎ উৎপাদনের ফলে দেশে কোন বিদ্যুৎ ঘাটতি নেই। কিন্তু এর কোন সুফল পাচ্ছেনা বৃহত্তর ঈদগাঁওবাসী। একটু বৃষ্টি হলেই বৃষ্টির অজুহাতে এখানকার বিদ্যুৎ লাইনগুলো বন্ধ রাখা হচ্ছে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে। বৃষ্টি হলে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়াকে “বৃষ্টি প্যাকেজ” নামকরন করেছেন রসিক গ্রাহকরা।
সূত্রে প্রকাশ, কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন ঈদগাঁও বিলিং এরিয়া অফিসের আওতাধীন ৩৮ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। এসব গ্রাহক অভিনব এ “ বৃষ্টি প্যাকেজ”র শিকার হচ্ছেন।
গ্রাহক এরশাদ জানান, চলতি প্রাক-বর্ষাকালীন সময়ে সামান্য ঝড়-বৃষ্টি-বাতাসের অজুহাতে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে লোডশেডিং করাকে “বৃষ্টি প্যাকেজ” নামে নামকরণ করেছেন সাধারণ গ্রাহকরা। কক্সবাজার সদরের বৃহত্তর ঈদগাঁও’র ৭ ইউনিয়ন, রামুর ঈদগড় ও রশিদনগর, চকরিয়া-খুটাখালী ও পার্বত্য বান্দরবান জেলার ৩৮ হাজার গ্রাহক ঈদগাঁও পলী বিদ্যুতের আওতাভুক্ত। দেশের বৃহত্তম লবণ শিল্প এলাকা ইসলামপুরে স্থাপিত ৪৫টি লবণ কারখানাও এর আওতাধীন। ঈদগাঁহ ফরিদ আহমদ কলেজ গেইটের অদুরে স্থাপিত বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্র থেকে এসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কিন্তু পক্ষাধিককাল আগে থেকে শুরু হওয়া মাঝে-মধ্যে সামান্য বাতাস ও হালকা বৃষ্টির অজুহাতে প্রায় সময় বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে রাখছেন পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা। অজুহাত হিসেবে বলা হচ্ছে, ঝড়-বাতাসের পর সঞ্চালন লাইন চেক করার কথা। প্রায় প্রতিদিনই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এভাবে লোডশেডিং করা হচ্ছে। জালালাবাদ পূর্ব ফরাজী পাড়ার গৃহিনী পারভীন জানান, গতরাতে বৃষ্টি শুরু হলেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। একঘন্টা পর বৃষ্টি থেমে যায়। কিন্তু সারারাত আর বিদ্যুৎ আসেনি।
এভাবে গ্রামাঞ্চলের গ্রাহকরাই এর শিকার হচ্ছে বেশি। সারাদিনে গড়ে কয়েক ঘন্টাও বিদ্যুত থাকছেনা। এতে গ্রাহক ভোগান্তি চরমে উঠেছে। আম-কাঠাল পাকা গরমে বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় বলতে গেলে আলু সিদ্ধ হচ্ছেন সর্বস্থরের জনগণ। ফ্রিজ, এসি, কম্পিউটার ও টেলিভিশনসহ অপরাপর বিদ্যুতনির্ভর যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। জালালাবাদ ফরাজী পাড়ার গ্রাহক শাকের উল্লাহ বলেন, বর্ষাকালে ঝড়-বৃষ্টিতো হবেই, কিন্তু এর অজুহাতে ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং কাম্য নয়। লোডশেডিংয়ে অভিনব এ বৃষ্টি প্যাকেজ সম্পর্কে জানতে চাইলে পল্লী বিদ্যুত ঈদগাঁও বিলিং এরিয়া অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার শ্যামল দত্ত বলেন, “আমি নতুন এসেছি, মাত্র আজই জয়েন করেছি, ব্যাপারটা জানা নেই”।
বৃহত্তর ঈদগাঁহ সাংস্কৃতিক একাডেমীর সভাপতি কুতুব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, “বৃষ্টি প্যাকেজ” পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের খাম-খেয়ালীপনারই ফসল। এটা বন্ধ না হলে সর্বস্তরের জনগনকে সাথে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। আসন্ন রমজান মাসে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবীও জানান তিনি।

পাঠকের মতামত: