ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

রোহিঙ্গাদের নিবন্ধনের অজুহাত: কক্সবাজারে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ

অনলাইন ডেস্ক ::

 রোহিঙ্গাদের নিবন্ধনের অজুহাতে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে কক্সবাজার জেলায় সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয় জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম। আট মাস অতিবাহিত হলেও এখনো চালু হয়নি এ কার্যক্রম। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে জেলাবাসী।

জানা গেছে, গত ২৫ আগস্ট থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ-উখিয়া সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের ঢল আসা শুরু হয়। এ পর্যন্ত এগার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। মিয়ানমারের বাস’চ্যুত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশি পরিচয়ে জন্মসনদ তুলে নানা কাজে লাগাতে পারে এ আশংকায় স’ানীয় সরকার বিভাগের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন শাখার রেজিস্ট্রার জেনারেল (অতিরিক্ত সচিব) জ্যোতির্ময় বর্মন এক স্মারকমূলে রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত জন্মসনদ প্রদান বন্ধ রাখতে নির্দেশনা জারি করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সেই নির্দেশনা জেলার আটটি উপজেলার ৭১টি ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভার মেয়র বরাবরে পাঠানো হয়। তখন থেকেই কেন্দ্রীয় সার্ভারে কক্সবাজার জেলার প্রবেশ বন্ধ হয়ে যায়। কক্সবাজারের চারটি পৌরসভা এবং বিভিন্ন উপজেলার ৭১টি ইউনিয়নে জন্মনিবন্ধন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে স’ানীয়রা। কিছু জনপ্রতিনিধি ভোগান্তি রোধে বিকল্প প্রত্যয়নপত্র দিলেও তা খুব একটা কাজে আসছে না।
উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের কাশিয়ারবিল এলাকার বাসিন্দা দয়াল হারি ঘোষ বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নিবন্ধনের অজুহাতে সরকার জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ায় অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জন্মনিবন্ধন ছাড়া কিছুই মিলছে না’।
কক্সবাজার সদরের চৌফলদণ্ডী ইউনিয়নের মিজানুর রহমান বলেন, ‘জন্ম নিবন্ধন না দেয়ায় অনেকের বিয়ে আটকে আছে। কারণ কাজী অফিসে জন্ম নিবন্ধন ছাড়া বিয়ে হচ্ছে না। অনেক অভিভাবক সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করাতে পারছে না।’
কক্সবাজার পিপলস ফোরামের সভাপতি ও স’ানীয় দৈনিক রুপালী সৈকত পত্রিকার সম্পাদক ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, ‘রোহিঙ্গা নিবন্ধন প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। কিন’ তারপরও সার্ভার সচল করা হচ্ছে না। জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় লোকজন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।’
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘জন্ম নিবন্ধন এখন প্রত্যেকেরই প্রয়োজন। যদি সতর্ক হই, তাহলে রোহিঙ্গারা কীভাবে জন্মনিবন্ধন পাবে?’
তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের কারণে জন্মনিবন্ধন সনদপত্র দেয়া বন্ধ না করে বরং জনপ্রতিনিধিরাই সচেতন হলে এই সমস্যার সমাধান হবে।’
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুর কারণে সরকার বর্তমানে জেলাতে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। এতে করে স’ানীয়রা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে এ কথা সত্যি। সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এ মুহূর্তে এ বিষয়ে কিছু করা যাচ্ছে না।’
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিগগিরই চালু করার চেষ্টা চলছে’।

পাঠকের মতামত: