ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

নোমানসহ বিএনপির ১৮ নেতা গ্রেফতার সরকারি দলের প্রার্থীর সুনিশ্চিত ভড়াডুবি জেনে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে

আবদুল্লাহ আল-নোমানকে আটক করে পুলিশের গাড়িতে তোলা হচ্ছে

অনলাইন ডেস্ক ::

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমানসহ বিএনপির ১৮ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গাজীপুর সিটি নির্বাচন স্থগিতের ঘটনায় রোববার বিকেলে ২০ দলীয় জোট মেয়র প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকারের প্রেসব্রিফিং শেষে তিনি বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটক করে। এসময় বিপুল সংখ্যক পুলিশ হাসান সরকারের বাড়ি অবরুদ্ধ করে রাখে।

এ রিপোর্ট লেখার সময় হাসান সরকারের বাড়ির ভেতর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি ফজলুল হক মিলন, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সালাহ উদ্দিন সরকারসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী পুলিশ বেষ্টিত বাড়ির ভেতর অবস্থান করছিলেন। বাড়ির বাহিরে পৌর গেটে তিনটি প্রিজন ভ্যান নিয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান করছিল।

নির্বাচন স্থগিতে হাসান সরকারের প্রতিক্রিয়াঃ গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থাগিতের প্রতিক্রিয়ায় ২০ দলীয় জোট মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকে মেয়রপ্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার বলেছেন, নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া রায় গোটা গাজীপুরবাসীকে স্তম্বিত করে দিয়েছে। সরকারের এহেন ভূমিকায় আমি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছি। সরকারী দলের প্রার্থীর নিশ্চিত ভরাডুব ছিল। এর মধ্যে কোন সন্দেহ নেই। তাই তারা নির্বাচন স্থগিত করেছে।

তিনি আগামী ১৫ মে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি জোর দাবী জানিয়ে বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, এটি ছিল আমার জীবনের শেষ নির্বাচন।

ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সমাজটাকে সুন্দরভাবে গঠন করার জন্য সারা জীবনের অর্জিত অভিজ্ঞতা প্রয়োগ করতে চেয়েছিলাম। আমার জীবনের সর্বস্ব দিয়ে হলেও আইনী লড়াই ও মাঠের লড়াই চালিয়ে মানুষের ভোটাধিকার আদায় করবো। এব্যাপারে নির্দেশনার জন্য কর্মীদেরকে প্রস্তুত থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শেষ বয়সে পরিত্যক্ত একটি জেল খানায় মৃত্যুর সাথে পঞ্জা লড়ছেন। আমাদের লড়াই শেষ হয় নাই। দেশনেত্রী ও গণতন্ত্রের মুক্তির লড়াই চলবেই। তিনি বলেন, জনগণের অধিকার আদায়ের লড়াই হচ্ছে মর্যাদার লড়াই। এই লড়াইয়ে জিতইে হবে।

গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ফজলুল হক মিলন বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমরা কমপক্ষে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হতাম। সরকার তাদের প্রার্থীর সুনিশ্চিত পরাজয় জেনে তাদের নিয়ন্ত্রিত আদালতের মাধ্যমে নির্বাচন স্থগিত করেছে। তিনি বলেন, রায়ের কারণে যে দেশের প্রধান বিচারপতিকে অস্ত্রের মুখে দেশত্যাগ করতে বাধ্য করা হয় সেদেশের বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে কিছু বলার নেই।

তিনি বলেন, সরকার নির্বাচন স্থগিত করায় আমাদের প্রাথমিক বিজয় অর্জিত হয়েছে এবং এই অবৈধ, অগণতান্ত্রিক সরকারের নৈতিক পতন হয়েছে। প্রেসব্রিফিংকালে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপির বিশেষ সম্পাদক ডা. আসাদ্জ্জুামান রিপন, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, গাজীপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সালাহ উদ্দিন সরকার, যুগ্ন সম্পাদক সোহরাব উদ্দিন, সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সুরুজ আহমেদ, জেলা বিএনপির যুগ্ন সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন সবুজ, জেলা হেফাজতে ইসলামির যুগ্ন সম্পাদক মুফতি নাসির উদ্দিন, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইসলাফিল হোসেনসহ ২০ দলীয় দলীয় জোটের বিপুল সঙখ্যক নেতাকর্মী ও বিএনপি সমর্থিত ওয়ার্ড কাউন্সিলররা।

এদিকে হাসান উদ্দিন সরকারের ব্যক্তিগত সহকারী কিবরিয়া খান জনি জানান, হাসান উদ্দিন সরকার রোববার টঙ্গীর মিরাশ পাড়ায় পূর্ব নির্ধারিত গণসংযোগ ও পথসভায় যাওয়ার পথে স্থানীয় মধুমিতা রোড অতিক্রম করার সময় খবর পান হাইকোর্ট নির্বাচন স্থগিত করেছে।

তিনি এই খবর পেয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় না গিয়ে বাড়িতে ফিরে যান। এসময় হাজার হাজার নেতাকর্মী চারদিক থেকে স্লোগান নিয়ে হাসান সরকারের বাড়ির সামনে গিয়ে জড়ো হন। প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠে গোটা এলাকা। তবে কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। বিকেল সাড়ে ৮টায় হাসান উদ্দিন সরকার প্রেসব্রিফিং করে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানান। ব্রিফিং শেষে নেতাকর্মীরা চলে যাওয়ার পথে পুলিশ আব্দুল্লাহ-আল-নোমানসহ ১৮ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। এরিপোর্ট পাঠানোর সময় আবদুল্লাহ আল-নোমানসহ আটককৃত নেতাকর্মীদেরকে টঙ্গী থানায় রাখা হয়।

পাঠকের মতামত: