চট্রগ্রাম প্রতিনিধি ::
আটকের পর দাবিকৃত তিন লাখ টাকা না দেয়ায় দুই বন্ধুকে ৫২ পিচ ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ৭ পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল সোমবার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন ভুঁইয়ার আদালতে এ মামলা দায়ের করেন আটক মেহেদী হাসান নাঈমের মা মোছাম্মৎ মেহেরুন্নেছা। আদালতের বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আদেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাদীর আইনজীবী এডভোকেট বাবুল দাশ।
মামলার আরজিতে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তারা হলেন, পাহাড়তলী থানার ওসি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, এসআই মোহাম্মদ আবু সায়েদ, এএসআই উত্তম ধর, ফজলুল বারী ও জিন্টু বড়ুয়া এবং কনস্টেবল নাজিম উদ্দিন ও মোহাম্মদ মহিউদ্দীন।
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, গত ২৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাদীনীর ছেলে মেহেদী হাসান নাঈম ও তার দুই বন্ধু তানজিল ইসলাম ও সজিবুল ইসলামকে সরাইপাড়া লোহারপুল মাম টাওয়ারের সামনে থেকে এসআই মোহাম্মদ আবু সায়েদের নেতৃত্বে পুলিশ দল আটক করে। খবর পেয়ে বাদীনী এসে তাদেরকে আটকের কারণ জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা তিনজনের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা দাবি করেন। এ টাকা দিলে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে বলেও এসআই জানান। অন্যথায় তাদেরকে চালান করে দেয়ার হুমকিও দেন পাহাড়তলী থানার ঐ এসআই।
আরজিতে আরো বলা হয়েছে, বাদীনী কোন টাকা দিতে পারবে না বলে জানালে তার ছেলে মেহেদী হাসান নাঈমকে আসামিরা এলোপাতাড়ি আঘাত করে। আঘাতের সময় মেহেদী হাসান নাঈমকে তার পিতা মৃত শামসুল আলমের পরিবর্তে জাহাঙ্গীর আলম স্বীকার করার জন্য মারধর করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। থানা হাজতে আটকে রেখে আসামিরা আবারো ৩ লাখ টাকা দাবি করে বাদীনীর কাছে। বাদীনী টাকা দিতে অস্বীকার করলে তার ছেলে নাঈম ও নাঈমের বন্ধু তানজিলকে থানা হাজতে মারধর করা হয়। পরেরদিন ২৬ এপ্রিল দুই বন্ধু মেহেদী হাসান নাঈম ও তানজিল ইসলামকে ৫২ পিচ ইয়াবাসহ আটক দেখিয়ে পাহাড়তলী থানায় মামলা ঠুকে দেয়া হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় নিয়মিত মামলা দায়ের করে (মামলা নং–২২ (০৪)১৮) পুলিশ। আটক অপর বন্ধু সজিবুল ইসলামের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করে তাকে পাহাড়তলী থানার অর্ধতব্য মামলায় (মামলা নং–৭০/১৮) আদালতে চালান করে দেয়া হয় বলে আরজিতে অভিযোগ করা হয়।
মামলার আরজিতে বাদীনী মেহেরুন্নেছা আরো অভিযোগ করেন, মেহেদী হাসানকে নিয়মিত মামলায় আদালতে চালান করে দেয়ার পর আসামিরা প্রতিনিয়ত বাদীনীকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে দাবিকৃত টাকার জন্য। অন্যথায় তাকে আরো জটিল মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়া হবে বলে জানানো হয়। বাদীনী ৭ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়েছেন বিচারকের কাছে।
এ বিষয়ে এডভোকেট বাবুল দাশ জানান, অভিযোগ তদন্তের জন্য পিবিআইকে আদেশ দেয়ার পাশাপাশি আগামী ৩০ মে’র মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনাও দিয়েছেন বিচারক।
পাঠকের মতামত: