ঢাকা,সোমবার, ৬ মে ২০২৪

কক্সবাজারে আবাদী জমিতে গুচ্ছগ্রাম: ফুঁসে উঠছে এলাকাবাসী

কক্সবাজার সংবাদদাতা ::

কক্সবাজারের ভারুয়াখালীতে আবাদী জমিতে গুচ্ছগ্রাম করার সিদ্ধান্তে ফুঁসে উঠেছে এলাকার মানুষ। যে স্থানে গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে তাতে লবন ও চিংড়ি চাষ হয় যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এছাড়া ওই জমির উপর ৬২ জন কৃষক ও তাদের পরিবারের জীবন ও জীবিকা সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল। এলাকাবাসী গুচ্ছগ্রামের স্থান পরিবর্তন করে অনাবাদী জমিতে তা করার জন্য জোর দাবী জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন “ক্লাইমেট ভিকটিমস্ রিহ্যাবিলিটেশন প্রজেক্ট” এর আওতাধীন ককসবাজার জেলার ভারুয়াখালীতে ৭.১ একর জমিতে গুচ্ছগ্রাম করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান আবাদী জমিতে গুচ্ছগ্রাম করার জন্য প্রকল্প প্রধানকে ভুল প্রতিবেদন দিয়েছেন। অথচ ভারুয়াখালী ইউনিয়নে অনেক অনাবাদী জমি পড়ে থাকলেও গুচ্ছগ্রামের জন্য সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে না।

আবাদী জমিতে কোনো ধরণের স্থাপনা নির্মাণ না করার জন্য সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। তারপরও বিএনপি থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান আবাদী ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ জমিতে গুচ্ছগ্রাম করার জন্য রিপোর্ট দিয়েছেন। এতে করে ৬২টি পরিবার নি:স্ব হতে বসেছে। হাজীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মাস্টার আবুল হোসাইন বলেন, আমরা ৯০ বছর পূর্ব থেকে এইসব জমি বহু অর্থ ব্যয় ও কায়িক শ্রমের মাধ্যমে আবাদ হাসিলাক্রমে জমি ভোগ দখল করে অাসছি। এই জমির উপর আমাদের জীবন ও জীবিকা নির্ভরশীল। হঠাৎ করে এখানে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হলে শ’খানেক পরিবার পথে বসবে। তিনি অনাবাদী ও পাহাড়ী জমিতে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।

ভারুয়া খালী ইউনিয়নের চান্দুরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কলিম উল্লাহ জানান, শফিক চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন এলাকায় জমি দখলের উৎসবে নেমেছেন। সর্বশেষ মশরফ পাড়া গ্রামের মাহফুজুর রহমানের খতিয়ানভুক্ত জায়গা দখলে নেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এই ব্যাপারে মশরফ পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান জানান, “শফিক চেয়ারম্যান পূর্বশত্রুতাবশত আমার খতিয়ানভুক্ত জায়গা গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের নাম করে দখলে নেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এনিয়ে ককসবাজার ইউএনও মোঃ নোমান হোসেন ও উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দিলেও তিনি বিচারে উপস্থিত হননি।”

ভারুয়াখালী ইউনিউন ছাত্রলীগের আহবায়ক আমানুল ইসলাম বলেন, শফিক প্রভাব খাটিয়ে সরকারি খাস জায়গা ব্যতিরেখে আশেপাশের আরও অনেক খতিয়ানভুক্ত জায়গা দখলে নিচ্ছেন। আর আদর্শ গ্রাম করার জন্য যে টাকা পেয়েছেন তা দিয়ে এসব দখলকৃত জমিতে নিজের ব্যক্তিগত কাজ করে আসছেন।

এই ব্যাপারে ভারুয়াখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান বলেন, যে জমিতে গুচ্ছগ্রাম করার কথা বলা হচ্ছে তা সরকারি খাস জমি। কিন্তু অনাবাদি জমি বাদ দিয়ে অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও আবাদী জমিতে কেন তা করা হচ্ছে  এব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি।

পাঠকের মতামত: