ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

যে কারনে আত্মগোপন করেছিল কক্সবাজার থেকে উদ্ধারকৃত সেই বিএনপি নেতা

নিউজ ডেস্ক ::
নিখোঁজের ১৮দিন পর উদ্ধার হওয়া খুলনা জেলা বিএনপির সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মোড়ল শুক্রবার দুপুরে খুলনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রওশন আরা রহমানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

জবানবন্দিতে তিনি বলেন, প্রায় ১৫ লাখ টাকা দেনা থাকায় আমি স্বেচ্ছায় কক্সবাজারের রামুতে গিয়ে আত্মগোপন করেছিলাম। কেউ আমাকে অপহরণ করেনি।

আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার পর নজরুল ইসলামকে নিয়ে নিজ কার্যালয়ে বিকেল ৫ টার দিকে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেন খুলনার পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্লা। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান নজরুল ইসলাম।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, গত ১৭ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বেতাগ্রামের মো. নজরুল ইসলাম মোড়ল অপহৃত হয় বলে তার স্ত্রী তানজিলা বেগম ডুমুরিয়া থানায় জিডি করেন। এরপর খুলনা জেলা বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে আইন শৃংখলা বাহিনী তাকে অপহরণের পর ‘গুম’ করেছে বলে অভিযোগ করে। জেলা পুলিশ নজরুলের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। পরে গত ৪ এপ্রিল গভীর রাতে কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার সাইফুল ইসলামের বাড়ি থেকে নজরুলকে উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও জানান, তাকে খুলনায় নিয়ে আসার পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে নজরুল জানায় বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সমিতি ও ব্যাংকের কাছে তার ১৫/২০ লাখ টাকা দেনা রয়েছে। দেনার দায়ে রামুতে গিয়ে সাইফুল ইসলামের বাড়িতে আত্মগোপন করেন। সাইফুল ইতোপূর্বে ইয়াবাসহ আটকের একটি মামলায় খুলনা জেলা কারাগারে ছিলেন। তখন নাশকতার মামলায় কারাগারে থাকা অবস্থায় নজরুলের সাথে সাইফুলের পরিচয় হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নজরুল ইসলাম এসব তথ্য দেওয়ার পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়। এরপর দুপুরে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় নজরুল।

তিনি জানান, নজরুলের বিরুদ্ধে পূর্বের নাশকতা মামলা থাকায় তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তাকে কিভাবে উদ্ধার করা সম্ভব হলো-এ প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্লা জানান, নজরুল তার ব্যবহৃত সিমটি ফেলে দিলেও তার পুরানো মোবাইল সেট ব্যবহার করছিলেন। সেই সেটে নতুন একটি রবি সিম ঢোকান। মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করেই তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত বিএনপি নেতা ও মাদ্রাসা শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, তিনি স্বেচ্ছায় বাসে করে কক্সবাজার যান, তাকে কেউ অপহরণ করেনি। তিনি যেদিন আত্মগোপনে যান সেদিনই তার দাড়ি কেটে ফেলেন, যাতে দেখে কেউ তাকে চিনতে না পারে। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তিনি পরিবারের কারও সাথে যোগাযোগ করেননি।

নজরুল জানান, তিনি মাদ্রাসায় শিক্ষকতার পাশাপাশি মাছের ব্যবসা করেন। সেই ব্যবসা করতে গিয়ে লোকের কাছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা দেনা হয়। আবার তিনি নিজে লোকজনের কাছে প্রায় সমপরিমাণ টাকা পান। কিন্তু নিজের পাওনা টাকা আদায় করতে না পারায় দেনার টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না।

পাঠকের মতামত: