ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজার সরকারি কলেজে দ্বিতীয় সড়ক নির্মাণ জটিলতা নিয়ে সভা

কক্সবাজার সরকারি কলেজে দ্বিতীয় সড়ক নির্মাণ নিয়ে জটিলতা চলছে এক সপ্তাহ ধরে। স্থানীয় এমপি সাইমুম সরওয়ার কমলের প্রায় ১০ লাখ টাকা বরাদ্দে এই নির্মাণ কাজ এখন স্থগিত রয়েছে। স্থগিত আদেশ অমান্য করে ১৯ মার্চ রাতে পাহাড়ের মাটি ফেলে রাস্তা নির্মাণের সময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে চারজনকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরে মানবিক বিবেচনায় তিনজন শ্রমিক ছেড়ে দেয়া হলেও মাটি ভরাটে সরাসরি জড়িত একজনকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ২ বছরের সাজা দেয় হয়। এরপর ২০ মার্চ কক্সবাজার সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কর্মীরা দ্বিতীয় সড়ক পূনরায় নির্মানের জন্য আন্দোলন করেন কলেজ ক্যাম্পাসে।

এনিয়ে কলেজ প্রশাসন, কলেজ ছাত্রলীগ ও স্থানীয় এমপি’র মধ্যে ত্রিমূখী অবস্থান তৈরি হয়। কলেজে দ্বিতীয় সড়ক নির্মাণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে শনিবার (২৪ মার্চ) বিকালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বৈঠক হয়। বৈঠকে জেলা আ.লীগের সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, সদর-রামু আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাজী আব্দুর রহমান, কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ একেএম ফজলুল করিম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন, সদর এসিল্যান্ড নাজিম উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) গোলাম রুহুর কুদ্দুছ, সদর ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার, ওসি তদন্ত কামরুল আজমসহ সরকারি কলেজের একদল শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ একেএম ফজলুল করিম বলেন- এক বছর আগে শিক্ষার্থীরা এমপি বরাবরে দাবী তুলেন একটি সড়ক নির্মাণের জন্য। আমরাও চাই দ্বিতীয় সড়ক নির্মাণ হোক। তবে যে পাশে সড়ক নির্মাণ হচ্ছে তা একটি বিরোধপূর্ণ জমিতে। এবিষয়ে মামলাও চলমান আছে। তাছাড়া সড়কের জন্য যেভাবে মাটি ফেলা হচ্ছে এতে দু’পাশের অনেক জমি নষ্ট হয়ে যাবে।

এমপি কমল বলেন- সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবীর মাধ্যমে কলেজের দ্বিতীয় সড়ক নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কলেজের জমিতে এই সড়ক নির্মান হলে শিক্ষার্থীদের অনেক উপকারে আসবে। কিন্তু এতে কলেজ প্রশাসন বিরোধিতা করছে। প্রথমে বাধা দিয়েছে স্থানীয় এফাজউল্লাহ। এরপর বাধা দিচ্ছে কলেজ প্রশাসন। আর মাত্র বাকি ১শ’ থেকে দেড়শ ফুট রয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে; ছাত্রলীগ ভুমিদস্যুতা করেছে। এতে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে।

এসময় এমপি কলেজ শিক্ষকদের উদ্দেশ্য করে বলেন- আমার আরএসও আপনারা জানেন আর আপনাদের আরএসও আমি জানি। যারা কলেজের সড়ক নির্মাণের জন্য বিরোধিতা করছেন তারা সবাই জামায়াত শিবিরের সাথে জড়িত।

সদর ইউএনওকে এমপি বলেন- সড়ক নির্মানের সময় রাতে আপনি চারজনকে আটক করেছেন। আমি বহুবার ফোন দিয়েছি আপনি ফোন ধরেননি। আটকের কয়েক মিনিটের মধ্যে ফেসবুকে দিলেন। সবাই এতে মজা নিচ্ছে। জামায়াত শিবিরের লোকজন এগিয়ে যান বলে কমেন্ট করছে। আমি দেখেছি আপনার ফেসবুকে বেশির ভাগই ছাত্রদলের লোকজন।

সদর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন তার বক্তব্যে বলেন- আমি প্রশাসনিক কাগজের উপর ভিত্তি করে কাজ করবো। আমাকে যে আদেশ দেয়া হয় আমি তাই করবো। আমি কোন দল করি তা মূল বিষয় না; প্রশাসনিকভাবে আইনের কাজ করা আমার মূল দায়িত্ব। টেবিলে থাকা পর্যন্ত আমার কাজ যা আমি তাই করবো। এর বাইরে আর কিছু না। বৈঠকে আমাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে (ইউএনও কে) উল্লেখ করে এমপিকে তার কথা প্রত্যাহার করতে বলেন ইউএনও।

এদিকে দীর্ঘ আলোচনার পরও কলেজের দ্বিতীয় সড়ক নির্মাণে কোনো চুড়ান্ত সিন্ধান্ত নিতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। সিন্ধান্তের বিষয়ে আবারো কোনো একসময় বৈঠক হওয়ার কথা জানান উপস্থিতরা।

পাঠকের মতামত: