ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে ঢুকল আরও ৫ শতাধিক রোহিঙ্গা

টেকনাফ প্রতিনিধি ::

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় রোহিঙ্গারা আবারও দলে দলে বাংলাদেশের দিকে ছুটে আসছে। দেশটির সেনাবাহিনী বিদ্রোহী দমনের নামে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতা অব্যাহত রেখেছে বলে জানান অনুপ্রবেশকারি রোহিঙ্গারা।

বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ ও বাহাছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালী পাড়া এলাকা দিয়ে প্রায় ৫ শতাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে।

নতুন করে আসা এসব রোহিঙ্গাদের মধ্যে নাফনদ পেরিয়ে শাহপরীর দ্বীপ দিয়ে ৮৯ পরিবারের ৩৩০ জন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে টেকনাফের সাবরাং হারিয়াখালী ত্রাণকেন্দ্রে পৌঁছান বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর সাবরাং হারিয়াখালী ত্রাণকেন্দ্রে দায়িত্বরত জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি ও টেকনাফ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন।

তিনি জানান, হঠাৎ করে রাখাইন রাজ্য থেকে আবারও দলে দলে রোহিঙ্গা বাংলাদেশমুখি হচ্ছে। পালিয়ে আসাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

তিনি অনুপ্রবেশকারিদের বরাত দিয়ে বলেন, মিয়ানমারে এখনো রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনী নির্যাতন করে যাচ্ছে। তাছাড়া যেসব রোহিঙ্গা সেখানে রয়েছে তাদেরকে জিম্মি করে রেখেছে। ফলে তাদের খাবার ও চিকিৎসা অভাব রয়েছে। বিশেষ করে তারা প্রাণের ভয়ে এপারে চলে আসছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, বুধবার নাফনদী পেরিয়ে সমুদ্র উপকুল দিয়ে নোয়াখালী পয়েন্ট দিয়ে তিনটি নৌকায় দেড় শতাধিকের বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। পরে তারা বাহাছাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের দিকে চলে যায়।

মংডুর সিকদারপাড়া থেকে পালিয়ে এসেছেন ইমান শরীফ (৩৬)। তিনি জানান, রাখাইনে সেনাসদস্যরা যেসব গ্রামে রোহিঙ্গারা রয়েছে, তাদেরকে জিম্মি করে রেখেছে। গত চার মাস আগে পাড়ায় পাড়ায় হত্যাকাণ্ড চালায়। ওই সময় অন্যদের সঙ্গে তার বাড়িও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। গুলি করে হত্যা করেছে তার এক চাচা ও দুই ভাতিজাকে।

ইমান শরীফ জানান, ওখানে পরিস্থিতি ভয়াবহ। রোহিঙ্গারা পালিয়েও বাঁচতে পারছে না। নিহতের সংখ্যা কত তা বলা খুবই মুশকিল।

মুখে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় ঢেকিবুনিয়া থেকে পালিয়ে এসেছেন মুুজিবুল করিম (২৭)। তিনি জানান, রাখাইনে আহতদের চিকিৎসা দেওয়ার মতো কেউ নেই। ফলে আহত অনেকে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.রবিউল হাসান বলেন, হঠাৎ করে আবারও সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রশে বৃদ্ধি পেয়েছে। যেসব রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করছে তাদের মানবিক সহতায় দিয়ে টেকনাফ নয়াপড়া রোহিঙ্গা শিবিরে পাঠানো হচ্ছে। তবে আবারও আগের মতো দলে দলে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশমুখি হওয়ায় আমরা খুবই চিন্তিত।

পাঠকের মতামত: