ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেবার নামে কোটি কোটি টাকা লোপাট করছে এনজিও সংস্থাগুলো

ফারুক আহমদ, উখিয়া:

মানবিক সেবার নামে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিনা টেন্ডারে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন মূলক কাজে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি ও অর্থ লোটপাট চলছে বলে গুরুতর অভিয়োগ উঠেছে। আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থা হতে বিশাল অংকের ফান্ড সংগ্রহ করে দেশী-বিদেশী এনজিও সংস্থা এ সব কাজ বাস্তবায়ন করছে। একটি ঠিকাদারী সিন্ডিকেট এনজিওদের সাথে গোপনে সখ্যতা গড়ে তুলে সমস্ত উন্নয়ন কাজ ভাগবাটোয়ারা করছে। ফলে অনেক ঠিকাদার যোগ্যতা থাকার পরও কাজ পাচ্ছে না।

খোজ খবর নিয়ে জানা যায়, মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী ও মগ সন্ত্রাসীদের অত্যচার, নির্যাতন, হত্যা, গুম, অগ্নি সংযোগ সহ নানা নিপড়নের শিকার হয়ে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। বাস্তচ্যুত বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মানবিক সেবার নামে অসংখ্য দেশী-বিদেশী এনজিও এগিয়ে আসে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এনজিও সংস্থা ব্র্যাক, কোষ্ট ট্রাস্ট, ইসপা, আইওএম, ওয়াল্ড ফুড, এনজিও ফোরাম, এসিএফ, কোডেক, এমএসএফ, মুক্তিসহ বহু সাহায্য সংস্থা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে উন্নয়ন মূলক কাজ শুরু করে। এনজিও বুরো এর প্রঙ্গাপনে সু-নিদিষ্ট উল্লেখ করেছে, পত্রিকায় টেন্ডারের মাধ্যমে সমস্ত কাজ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, এনজিও সংস্থা ব্র্যাক, কোষ্ট ট্রাস্ট, ইসপা, আইওএম, ওয়াল্ড ফুড, এনজিও ফোরাম, এসিএফ, কোডেক, এমএসএফ, অক্সফাম, ইসলামী রিলিফ, পিএইচডি, ইউনিসেফ, রেড ক্রস, সোলিডর, পালস বাংলাদেশ, মুক্তি, সেইভ দ্যা সিল্ড্রেন, সহ বেশ কয়েকটি এনজিও সংস্থা আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থা হতে বিশাল অংকের অর্থ সংগ্রহ করে উখিয়ার কুতুপালং, মধুর ছড়া, লম্বা শিয়া, বালুখালী, থাইংখালী, তাজুনিমার খোলা, ময়নার ঘোনা, ফালংখালী, টেকনাফের লেদা ও শাপলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোটি কোটি টাকার কাজ শুরু করেছে।

অভিযোগে প্রকাশ, এসব এনজিও সংস্থা পত্রিকায় কোন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে বিনা টেন্ডারে বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্যনেটানি ল্যাট্রিন, নলকূপ স্থাপন, শেড নির্মান, স্কুল তৈরী, নারী-শিশু বান্ধব কেন্দ্র সহ নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। একটি প্রভাবশালী ঠিকাদারী সিন্ডিকেট এনজিও সংস্থার সাথে গোপন আতাঁত করে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ দায়সারা ভাবে বাস্তবায়ন করছে। সাধারন ঠিকাদারের অভিযোগ করে বলেন, সালাহ উদ্দিন ও জাহাঙ্গীর সিন্ডিকেট পুরো রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ঠিকাদারী কাজ একচত্র ভাবে নিয়ন্ত্রন করছে। ফালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থা হতে কোটি কোটি টাকা অর্থ সংগ্রহ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানবিক সেবার নামে এনজিওরা ব্যবসা শুরু করেছে। শুধু তাই নয় কতিপয় ঠিকাদার ইচ্ছা মত কাজ করে এনজিওদের সহযোগিতায় অর্থ লুটপাটের মহোৎসব করছে।

উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী কড়া ভাষায় বলেন, মানবিক সেবার আড়ালে এনজিওরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিরোধী কর্মকান্ডে উস্কানি দিচ্ছে। উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা গাড়ি ব্যবহার করে যা ইচ্ছা তা করে যাচ্ছে। এ সব কাজের অনিয়ম ও দূর্নীতি বন্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা উচিত। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্র্যাকের সিনিয়র কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র শীল বলেন, ই-টেন্ডারের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানবিক সেবার উন্নয়ন মূলক কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সাধারন ঠিকাদারে অভিযোগ কেবল চিহিৃত ঠিকাদার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সব কাজ করাচ্ছে ব্র্যাক।

পাঠকের মতামত: