ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

কোটি টাকার ফুল বিক্রি চকরিয়ায় ভালোবাসা দিবসে ভাগ্য ফিরছে চাষিদের

ভালোবাসা দিবসে ভাগ্য ফিরছে চাষিদের

ছোটন কান্তি নাথ, চকরিয়া ::
আগামীকাল বিশ্ব ভালবাসা দিবস। এ উপলক্ষে চকরিয়ার বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নের চাষিরা ফুল বিক্রি নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। আজ মংগলবার পর্যন্ত অন্তত কোটি টাকার ফুল বিক্রি করেছেন তারা। চাহিদা মেটাতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার ব্যবসায়ীরা এখান থেকে আগেভাগেই বিভিন্ন প্রজাতির ফুল কিনে নিয়ে গেছেন। আজ মঙ্গলবারও ভাল বিক্রি হবে বলে আশা স্থানীয় চাষিদের।

এর মধ্যেই ‘গোলাপনগর’ হিসাবে খ্যাতি পেয়েছে বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়ন। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে এখানে সৃজন করা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের বাগান। বিশেষ করে গোলাপ, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, গাঁদা সহ হরেক রকমের ফুল চাষ করা হয় এখানে। এ কাজে নিয়োজিত আছেন প্রায় পাঁচ শতাধিক নারী–পরুষ শ্রমিক। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে প্রতি বছরই ফুল বেচাকেনার ধুম পড়ে চকরিয়ায়। চাষিরা জানিয়েছেন, এবার ফুলের বিক্রি বেশি, দামও ভাল। তাই বেশি লাভের মুখ দেখার প্রত্যাশায় রয়েছেন চাষিরা।

চকরিয়ার বরইতলী থেকে পাইকারি দরে কিনে চট্টগ্রাম মহানগরীতে ফুল বিক্রি করেন সুভাষ দে। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে ৫–১০ হাজার পিস ফুল কেনা হয় চকরিয়ার বরইতলী থেকে। আর বিশেষ দিবসে তা কয়েকগুণ ছাড়িয়ে যায়। এবারের বিশ্ব ভালবাসা দিবস উপলক্ষে আগাম অর্ডার দেওয়া হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার গোলাপ ও গ্লাডিওলাস ফুলের।’

বরইতলী একতা বাজার এলাকার ফুলচাষি নজির আহমদ বলেন, ‘এক সময় তামাকের চাষ করতাম। তা ছেড়ে গত কয়েক বছর ধরে ফুলের চাষ করছি। বাগানে বেশ ফলন হয়, দামও পাচ্ছি ভাল।’ তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিদিন খুব ভোরে বাগান থেকে ফুল তুলি। এগুলো চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের পাইকাররা সরাসরি এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেক পাইকার আগাম অর্ডারও দিয়ে রেখেছেন ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে। এতে এবার কম করে হলেও দুই লক্ষ টাকার ফুল বিক্রি হবে।’

চাষিরা জানান, প্রতিটি গোলাপের দাম মানভেদে পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে চার থেকে পাঁচ টাকায়। আর বিভিন্ন রংয়ের গ্লাডিওলাস ফুল বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। নিয়মিত পারিশ্রমিক পাওয়ায় চাষির পাশাপাশি বাগান পরিচর্যা ও ফুল তোলায় নিয়োজিত নারী–পুরুষ শ্রমিকদের মুখেও হাসি ফুটেছে ।

জানা গেছে, বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নে শতাধিক ফুলের বাগান রয়েছে। গত দুই দশক ধরে এখানকার চাষিরা ফুল চাষ করে আসছেন। প্রথমদিকে সামান্য জমিতে নানা জাতের ফুলের চাষ হলেও বর্তমানে দুই ইউনিয়নে বেড়েছে চাষাবাদ। চকরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নের অন্তত ১০০ একর জমিতে ফুলের চাষ হয়েছে। এবারের ভালবাসা দিবসসহ বিভিন্ন দিবসে ফুল বিক্রিও ভাল হবে। এতে আর্থিকভাবে বেশ লাভবান হবেন চাষিরা।’

তবে চকরিয়া ফুল ব্যবসায়ী সমিতির আহবায়ক মো. মইনুল ইসলাম দাবি করেছেন, বর্তমানে ফুলের কদর বেশি থাকলেও পাইকাররা দাম দিতে গড়িমসি করছে। এতে অনেক চাষি ভাল দাম পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবেন।

পাঠকের মতামত: