ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ার বদরখালীতে খাল দখল করে অবৈধ দোকানঘর নির্মাণ

অলি উল্লাহ রনি :::   স্টাফ রিপোর্টার,চকরিয়া: চকরিয়ায় প্রবাহমান ‘গোয়ারফাঁড়ি খাল’ দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা। নৈসর্গিক দৃশ্য নিয়ে উপজেলার বদরখালীর উপর দিয়ে বহমান এই খালটি দখলে নিযে বাঁধ দেওয়ার পর বর্তমানে অবৈধভাবে সেখানে চলছে স্থায়ী খাল দখল করে অবৈধ দোকানঘর নির্মাণ । মিঠা পানির অভাবে বর্তমানে ওই এলাকায় ইরি-বোরো চাষ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এতে কৃষকদের মাথায় হাত উঠার পাশাপাশি ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। খাল দখলমুক্ত করতে স্থানীয়রা ২০১৩সালের ১জানুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারে একটি অভিযোগ জমা দেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের তৎকালীণ সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম সরেজমিন পরিদর্শনে আসেন এবং কোন ধরনের স্থাপনা না নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন।

এদিকে স্থানীয় সচেতন লোকজনের আবেদনের প্রেক্ষিতে খাল দখলের বিষয়টি জানতে পেরে কয়েকদিন আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ভূমিদস্যুরা তাদের নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলার বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার তমিজ উদ্দিন জানান, বদরখালী ২নং ব্লকের নয়াপাড়া ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত নুরুল ইসলামের পুত্র কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব নজরুল ইসলামের জায়গা রয়েছে ওইখালে। খালের পাশ্ববর্তী হওয়ায় মাথাখিলা হিসেবে সে ভোগ করতে পারবে। সরকারের প্রয়োজন হলে তিনি তা ছেড়ে দিবে। এতে আপত্তি বা দোষের কিছু নাই।

বদরখালী কৃষি ও উপনিবেশ সমবায় সমিতির সভাপতি নুরুল আলম জানান, দখলের ব্যাপারে সমিতির পক্ষ থেকে বারণ করা হয়েছে। কিন্তু আইনের তোয়াক্কা না করে অভিযুক্ত ব্যক্তি জোরপূর্বক দখলজজ্ঞ অব্যাহত রেখেছে। একইসাথে দোকানঘরও নির্মাণের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

সূত্রে জানা গেছে, বদরখালী ২ নম্বর ব্লকের নয়াপাড়া, ‘বর্ষা মৌসুমে অতি বর্ষণ ও বন্যার পানি ভাটির দিকে নেমে যাওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে গোয়ারফাঁড়ি খালের দখলে নেওয়া পয়েন্টটি। তাছাড়া উপকূলীয় এলাকায় নৌ-যোগাযোগের মাধ্যমও হচ্ছে এটি। কিন্তু রাতারাতি দখলে নিয়ে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাওয়ায় সকল ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সাথেই পরিবেশ-প্রতিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।’ ‘খুব সহসাই এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া না হলে পরিবেশের বারোটা বাজবে এবং হুমকির মুখে পড়বে জীববৈচিত্র।’ এছাড়াও গোয়ারফাঁড়ি খালের ঘাটে লবণবাহী বোট ভিড়তেও বিড়ম্বনা পোহাতে হবে বলে জনৈক লবণ চাষি দাবি করেন।

এ ব্যাপারে বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খাইরুল বশর বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষক পরিবারের জীবন-জীবিকার একমাত্র মাধ্যম দখলে নেওয়া খালটি মিঠা পানির। তাছাড়া ভয়াবহ বন্যার সময়ও পানি নেমে যাওয়ার একমাত্র পথ এই গোয়ারফাঁড়ি খাল। তাই জনস্বার্থ বিবেচনা করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী হয়ে পড়েছে।

এদিকে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের কর্মকর্তা (সহকারী পরিচালক) সাইফুল ইসলাম বলেন, এখনও পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাঠকের মতামত: