ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

জেলা হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের আট মামলা

কক্সবাজার প্রতিনিধি :
কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের কর্মচারিদের নামে ভূয়া বেতন, ভাতা, পৌরকর ও প্রশিক্ষণার্থীদের বৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জেলা হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ের সাবেক চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত বুধবার রাতে দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মো. হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় দুদক আইনে মামলা গুলো দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১০-১১ অর্থ বছরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তৎকালিন প্রধান সহকারি কাম হিসাব রক্ষক প্রয়াত আব্দুস সামাদ জেলা হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ের তৎকালিন জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা এফতেখারুল আলম, সুপার আব্দুচ সবুর, অডিটর নাছির উদ্দিন আবু সুফিয়া ও গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরীর যোগসাজসে সদর হাসপাতাল ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের ভূয়া কর্মচারি, কর্মচারীদের ভূয়া উৎসব ভাতা, ভূয়া পৌরকর বিল তৈরী করে প্রায় ২ কোটি ৭১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে। এরমধ্যে এফতেখারুল আলম ও গোলাম মোহাস্মদ চৌধুরী বর্তমানে অবসরে চলে গেছেন। আর আব্দুচ সবুর উখিয়া উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা এবং নাছির উদ্দিন আবু সুফিয়ান ওই কার্যালয়ে অডিটর হিসেবে কর্মরত আছেন।
কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের জালিয়াতি বিষয় গুলো দুদকের প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসায় গত বুধবার সদর মডেল থানায় দুদক আইনে মামলা করেন দুদকের সহকারি পরিচালক মো. হুমায়ুন কবির। এতে পৃথক আটটি মামলায় জেলা হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ের সাবেক চার কর্মকর্তাকে আসামী করা হয়। তবে গত ২০১২ সালের ৬ এপ্রিল মারা যাওয়ার কারণে দুর্নীতির খলনায়ক সদর হাসপাতালের তৎকালিন প্রধান সহকারি কাম হিসাব রক্ষক আব্দুস সামাদকে আসামী করা হয়নি।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, দুদক আইনে জেলা হিসাব রক্ষণ কার্যালয়ের সাবেক চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার আটটি এজাহার দায়ের করা হয়। পরে আটটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়। মামলা গুলো তদন্ত করবে দুদক।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১০-১১ অর্থবছরে কক্সবাজার নার্সিং ইনস্টিটিউটের অস্থিত্বহীন ছাত্রীদের নামে উপবৃত্তির বিল তৈরী করে ১২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা আত্মসাত করা হয়। এই আত্মসাতের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় আসামী করা হয় এফতেখারুল আলম, আব্দুচ সবুর, নাছির উদ্দিন আবু সুফিয়ান ও গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরীকে। একই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সদর হাসপাতালের ভূয়া কর্মচারিদের নামে বিল তৈরী করে ২০ লাখ ৩৬ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় আরও একটি মামলা করা হয়।
এফতেখারুল আলম, আব্দুচ সবুর, নাছির উদ্দিন আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে নার্সিং ইনস্টিটিউটের পৌরকর বাবদ ভূয়া বিল তৈরী করে পাঁচ লাখ টাকা আত্মসাতে একটি, সদর হাসপাতালের কর্মচারিদের নামে শ্রান্তি বিনোদন ভাতা বাবদ অতিরিক্ত ও অস্থিত্বহীন বিল তৈরী করে ৭ লাখ ১ হাজার ৫৪৫ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় একটি, সদর হাসপাতালের পৌরকর বাবদ ভূয়া বিল তৈরী করে ৬০ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় একটি মামলা করা হয়।
এছাড়াও নার্সিং ইনস্টিটিউটের কর্মরত কর্মচারিদের উৎসব ভাতার অতিরিক্ত ও অস্থিত্ববিহীন কর্মচারিদের বিল তৈরী করে ১ লাখ ৮ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় এফতেখারুল আলম, আব্দুচ সবুর ও গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের কর্মচারিদের নামে বেতন ভাতার অতিরিক্ত ও অস্থিত্ববিহীন কর্মচারি দেখিয়ে ভূয়া বিল তৈরী করে ১ কোটি ৪১ লাখ ৯৬ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় আব্দুচ সবুর, নাছির উদ্দিন আবু সুফিয়ান ও গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুদক আইনে মামলা দায়ের করা হয়। একই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নার্সিং ইনস্টিটিউটের কর্মচারিদের নামে বেতন ভাতার অতিরিক্ত ও অস্থিত্ববিহীন কর্মচারিদের নামে ভূয়া বিল তৈরী করে ২৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়।

পাঠকের মতামত: