ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

উখিয়ায় পাহাড় ধ্বংসযজ্ঞ চললেও নিরব ভুমিকায় বন বিভাগ

mail.google.comফারুক আহমদ, উখিয়া ॥

উখিয়ায় সর্বত্র পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে। নজিবিহীন পরিবেশ বিধ্বংশী অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটা প্রকাশ্যে চললেও বনবিভাগ রহস্যজনক ভাবে নিরবভূমিকা পালন করছে বলে সচেতন মহলের অভিযোগ। ফলে পাহাড় কেটে ডাম্পার ও ট্রাকভর্তি করে মাটি বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে পাহাড় খেকোরা। উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: মনিরুল ইসলাম দৈনিক কক্সবাজারকে বলেন, অবৈধ ভাবে পাহাড় কর্তন ও মাটি বিক্রিকারীদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই অভিযান শুরু করা হবে।

সরজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, উখিয়া রেঞ্জের অধিনে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাহাড়ে কু-দৃষ্টি পড়েছে সংঘবদ্ধ মাটি খেকোর। ভালুকিয়াপালং বনবিটের আওতায় রতœাপালংয়ের তেলি পাড়া, ভালুকিয়াপালং, মধ্যম রতœা পালং, হরিণ মারা, কুতুপালং, থাইংখালী, ওয়ালা পালং, উখিয়ার টিএনটি, ক্লাশ পাড়া, পাতাবাড়ী, বউ বাজার, ধুরুমখালী, নাপিত পাড়া, জালিয়াপালং, ইনানী, নিদানিয়া, মনখালী, চোয়াংখালীসহ সর্বত্র পাহাড় কাটার প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে। বনবিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা ও বনকর্মীদেরকে ম্যানেজ করে দিবারাত্রি প্রকাশ্যে পাহাড় কেটেই যাচ্ছে। সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট সদস্যরা পাহাড়েরর মাটি ট্রাক ও ডাম্পার যোগে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা শুধু পাহাড় কর্তন করে ক্লান্ত হয়নি প্রকাশ্যে বনকর্মকর্তাদের নাকের ডগা দিয়ে ডাম্পার যোগে শত শত গাড়িভর্তি মাটি সরবরাহ করছে। রতœাপালং তেলি পাড়া গ্রামে দীর্ঘ ২ মাস ধরে সুইচ্চ পাহাড় কেটে নিধন করে আসলেও বিট কর্মকর্তার রহস্যজনক ভূমিকার কারণে বন্ধ করা যাচ্ছে না পাহাড় কাটা। যে কারণে দিন দিন আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে চিহ্নিত পাহাড় খোকোরা চালিয়ে যাচ্ছে পাহাড় ধ্বংসযজ্ঞ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভালুকিয়াপালং বিট কর্মকর্তা কে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বিশাল পাহাড়টি নিধন করে সমতল ভূমিতে পরিণত করেছে ভূমিখেকুরা।

স্থানীয় সূত্রে প্রকাশ, কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জে ও ইনানী রেঞ্জের আওতাধীন বনবিটের সংরক্ষিত পাহাড় কাটা অতীতে আর দেখা যায়নি। সবখানে পাহাড় কেটে ধ্বংসযজ্ঞ চলাচ্ছে। এভাবে পাহাড় কর্তনের ফলে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় আশংকা করছে পরিবেশবাদী সংগঠন। নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দরা অভিযোগ করে বলেন, উখিয়া, কোটবাজার, ভালুকিয়াপালং, রতœাপালং, জালিয়াপালং, ইনানী, থাইংখালী, পালংখালী, হলদিয়াপালংসহ বিভিন্ন জায়গায় শতাধিক ডাম্পার পিকআপ ও ট্রাক যোগে মাটিভর্তি করে জায়গা ভরাট করে যাচ্ছে। এমনকি ক্লাশ পাড়া ও তুতুরবিল থেকে পাহাড় কেটে কোটবাজার আরব সিটি সেন্টার ভরাট করার জন্য প্রায় ৫শ ট্রাক ও ডাম্পার মাটি আনলেও বনবিভাগ সম্পূন্ন নিরব ভূমিকা পালন করার অভিযোগ রয়েছে।

গ্রামবাসীরা জানান, বনবিভাগের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও বনকর্মী মোটা অংকের টাকা নিয়ে অঘোশিত ভাবে পাহাড় কাটা লীজ দিয়েছে মাটি খেকোদেরকে। বনবিভাগের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় সিন্ডিকেট সদস্যরা সংরক্ষিত পাহাড় অবৈধ ভাবে নিধনযজ্ঞ চালিয়ে শত শত ট্রাক ডাম্পার যোগে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করছে। প্রতি ট্রাক মাটি ১ হাজার টাকা থেকে ১২শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে। ভালুকিয়া পালং বিট কর্মকর্তা মোশারেফ হোসনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: মনিরুল ইসলাম দৈনিক কক্সবাজার কে বলেন, অবৈধ ভাবে যারাই পাহাড় কাটায় জড়িত কাউকেও ছাড় দেওয়া হবে না। এমনকি বনবিভাগের কোন লোক পাহাড় কাটায় জড়িত আছে প্রমাণ পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি শীঘ্রই পাহাড় কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামবেন বলে জানিয়েছেন।

পাঠকের মতামত: