ঢাকা,বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প: রবিবার ভিডিও কনফারেন্সে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

লাবন্য পুজা, কক্সবাজার ::

অপেক্ষার প্রহর গুণতে গুণতে অবশেষে আগামী রবিবার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়িতে নির্মাণাধীন কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বৃহৎ দুইটি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন বলে কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। ঢাকা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মাতারবাড়ী ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের সাথে কথা বলবেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। এ সময় জাপানী প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধিসহ কোল পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডে’র কর্মকর্তা, বিভিন্ন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত থাকবেন। ওই কনফারেন্সের মাধ্যমে পুরো প্রকল্প দেখবেন তিনি। এ জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন, উপজেলা ও মাতারবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পরিষদ সদস্য মাষ্টার রুহুল আমিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান এনামুল হক রুহুল, ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি জিএম ছমি উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা এস.এম আবু হায়দার। তবে জেলা পরিষদ সদস্য মাষ্টার রুহুল আমিন বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অনেক চাওয়া পাওয়া আছে। তিনি আমাদের নিশ্চিয় নিরাশা করবেন না। জেলা পরিষদ সদস্য মশরফা বলেন, প্রধানমন্ত্রী কথা শুনতে অধির আগ্রহে বসে আছেন এ দেশের কেটে খাওয়া মানুষ।

২৮ জানুয়ারী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন দেশের বৃহৎ প্রকল্প মাতারবাড়ি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৫ জানুয়ারী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন শেষে একটি জনসভা করার জন্য সফর সূচী নির্ধারণ হলেও আকাশে ঘন কুয়াশার কারণে তা স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করার জন্য সময় নির্ধারণ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক এমপি স্থানিয় লোকজনের কথা চিন্তা করে মাতারবাড়িতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা করার জন্য জোর তৎপরতা চালালেও গোয়েন্দা তথ্যের উপর ভিত্তি করে জনসভা বাতিল করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলে জানা গেছে। তবে একটি সূত্র বলছে, একই দিন মাতারবাড়িতে এক জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেয়ার কথা ছিলো প্রধানমন্ত্রীর। তবে পরে জনসভার ভেন্যু পরিবর্তন করে বড় মহেশখালী মাদ্রাসার মাঠে নির্ধারণ করা হয়। এই সিদ্ধান্তের দুই দিনের মাথায় প্রধানমন্ত্রী মহেশখালী সফর স্থগিত করেছেন। ডাক্তার সোলতানা বেগমের কথায় ঝরে পড়েছে উচ্ছ্বস। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে সরাসরি কথা বলতে পারলে হয়ত আমাদের অনেক দিনের দাবী পূরর্ণ হবে।

মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ.লীগ নেতা মাষ্টার মোঃ উল্লাহ্ বিএ,ও মাতারবাড়ির লোকজন জানান, মাতারবাড়ির অন্তত ৮০ ভাগ মানুষ আওয়ামী লীগ সমর্থক। তারা বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন। এই কারণে অতীতের এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই মাতারবাড়িকে ‘দ্বিতীয় টুঙ্গিপাড়া’ ঘোষণা দিয়েছিলেন। মাতারবাড়িতে নির্মাণ হচ্ছে দুু’টি বৃহৎ কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এই মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলো করার কারণে মাতারবাড়ির তাদের জমি হারিয়েছে। একই সাথে হারিয়েছে রুটি-রুজির মাধ্যম কর্ম, ব্যবসা ও মাথা গোজার ঠাঁই। একমাত্র প্রাণের চেয়ে প্রিয় শেখ হাসিনার দিকে চেয়ে তারা এই অপূরণীয় বিসর্জন দিয়েছেন। চেয়ারম্যান আরো জানান, তারা যখন সব হারিয়ে নি:স্ব হয়েছেন এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীই তাদের একমাত্র সান্তানা। তাই প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলার খবরে তারা উচ্ছ্বসিত হয়েছেন। নিরন্তর সহযোগিতা রয়েছেন আশেক উল্লাহ রফিক এমপি। প্রধামন্ত্রীর সাক্ষাৎ, জমানো দু:খগুলো প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভাগাভাগি করার আকুতি তাদের। তাই যেকোনো মূল্যে আগামীতে মাতারবাড়িতেই বঙ্গবন্ধু কন্যার জনসভা করার দাবি জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ।

মহেশখালী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আবুল কালাম জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স সফল করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় জেলার সংসদ সদস্য ছাড়াও প্রশাসনের কর্মকর্তা, শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত ও পেশার পরিবর্তন হওয়া লোকজন উপস্থিত থাকবেন।

পাঠকের মতামত: