ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

বাঁকখালী রাবার ড্যামে ‘ভূতের আছর’

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::

দেশের প্রথম কক্সবাজারের ঝিলংজা চাঁন্দেরপাড়ায় স্থাপনকৃত রাবার ড্যামটির শনির দশা কাটছেনা। দীর্ঘ ২৫ বছরে ও ড্যামের কাংখিত সেবা পাচ্ছেনা কৃষকরা। ১৯৯২ সালে বাকঁখালী নদীর উপর নেদারল্যান্ড সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় শুস্ক মওসুমে পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে চাষাবাদের জন্য রাবার ড্যামটি স্থাপন করা হয়। সে সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং এলজিইডি ড্যামটি রক্ষনাবেক্ষণ ও পানি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেয়। ড্যামটি স্থাপন হওয়ার পর থেকে কক্সবাজার সদর ও রামু উপজেলার ৬ ইউনিয়নের কৃষকরা শুষ্ক মওসুমে রাবার ড্যামের পানির সাহায্যে চাষাবাদ করে আসছে। দুই উপজেলায় প্রায় ৯০ টির মত সেচ স্কীম বাকঁখালী নদীতে বসিয়ে সরকারি সেচ কর দিয়ে কৃষকরা চাষাবাদ করে আসছে প্রায় ২৫ বছর। সেচ স্কীমের টাকার জন্য এত দিন অনেক ব্যবস্থাপনা কমিটি অনিয়ম করে অনেক টাকা আত্মসাৎ করে আসলে ও কোন উন্নয়ন হয়নি রাবার ড্যামের। কৃষকদের স্বার্থে পানি ব্যবস্থাপনার জন্য কৃষকদের নিয়ে বাকঁখালী পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় গঠন করে সমিতির মাধ্যমে ড্যামটি পরিচালিত হলেও বর্তমান অনির্বাচিত কমিটি দিয়ে চলছে ড্যামটি।
সমিতির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২ উপজেলার প্রায় ২ হাজার কৃষকদের মাধ্যমে সমিতির নির্বাচন পরিচালিত হয় । সদস্যদের চাদাঁয় বাংলাবাজার কৃষি ব্যাংক শাখা হিসাব খুলে একটি এফডিআর করা হয় । বর্তমানে কৃষকদের জমাকৃত টাকায় চোখ পড়েছে একটি শক্তিশালী চক্রের । ফলে বাঁকখালী রাবার ড্যামে ভূতের আছর ভর করেছে। কোন মতেই উন্নয়ন করা যাচ্ছেনা। বার বার এডহক কমিটি দিয়ে চালানো হচ্ছে বাকঁখালী পানি ব্যবস্থাপনা কমিটি। দেশের প্রথম রাবার ড্যামটি পরিচালনার জন্য সরাসরি একটি নির্বাচিত কমিটি পানি ব্যবস্থাপনা এবং কৃষকদের উন্নয়নে কাজ করলেও ২০১০ সালের ১৬ জানুয়ারি এ কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। নিয়ম অনুযাযি একটি কমিটি করার কথা থাকলেও এডহক কমিটি দিয়ে অদ্যাবধি আর নির্বাচন না দিয়ে চালানো হচ্ছে উক্ত রাবার ড্যাম। ফলে কৃষকদের স¦ার্থ এবং প্রতিবছর স্কীম থেকে উত্তোলণকৃত টাকা যাচ্চেতাই খরচ করছে । এদিকে ৩ দফা এডহক কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও গত বছর ১০ অক্টোবর পুনরায় এডহক কমিটি করা হয় ড্যাম পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার জন্য। জেলা সমবায় পরিদর্শক মনোয়ার হোসেন, সদরের উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা জাফর আলম , সমবায়ের আজিজুল হককে নিয়ে উক্ত কমিটি করা হয়। ফলে কৃষকদের জন্য স্বার্থ রক্ষার সংগঠনটি এখন চলছে কিছু অনৈতিক কর্মকর্তার মাধ্যমে । ফলে প্রতিবছর স্কীমের টাকার বেশিরভাগ অর্থ চলে যাচ্ছে উক্ত কমিটির পকেটে। এব্যাপারে রামু সদরের কৃষকদের টাকার হদিস মিলছেনা।
এদিকে পানি ধরে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ রামু উপজেলার চাকমারকুলের গুইল্লাছড়ি গুদা এবং সদরের পিএমখালীর মুহসিনিয়াপাড়ার মন্তারগুদার মধ্যে গুইল্লাছড়ি গুদার গেইট দিয়ে পানি চলে যাওয়ার কারনে বাঁকখালীতে পানি কমে যাচ্ছে। গত ১ জানুয়ারির গৃহিত গুইল্লাছড়ি এবং মন্তারগুদা বন্ধের সিদ্ধান্ত আজো বাস্তবায়ণ না হওয়ায় চলতি মওসুমে সংকটে পড়বে বোরো চাষ। এডহক কমিটির অবহেলার কারনে কৃষকদের প্রাণখ্যাত রাবারড্যামটির পানি যথাসময়ে পাওয়া যাবেনা। তিনি দ্রুত রাবার ড্যামের পানি ধরে রাখার স্বার্থে পুনরায় ফুলিয়ে পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করা হোক। অন্যথায় কৃষকরা চরম ক্ষতির মুখে পড়বে।
এ ব্যাপারে স্কীম ম্যানেজার ,৩ হাজার কৃষক, সংশ্লিষ্ট সকলের দাবি বার বার এডহক কমিটি দিয়ে ড্যামটি পরিচালিত হলে কৃষকদের সেচ কর এবং হিসাবে সংরক্ষিত টাকা তছরুফ হওয়ার আশংকা রয়েছে। দেশের প্রথম স্থাপিত রাবার ড্যামটি ভূতের কবল থেকে রক্ষা করে জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় যেন অবদান রাখে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী।

পাঠকের মতামত: