ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

আবর্জনা ফেলে পুকুর ভরাট করছে কক্সবাজার পৌরসভা

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::

কক্সবাজার পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এবার ময়লা–আবর্জনা ফেলে ভরাট করে নিচ্ছে দীর্ঘ কয়েক যুগের একটি পুকুর। পুকুর ভরাটের কোনো অনুমতি না থাকলেও কয়েকদিন ধরে আবর্জনা ফেলে ভরাট কাজ অব্যাহত রেখেছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। শহরের এন্ডারসন রোডের উত্তর পাশে বাঁকখালী নদীর সাথে লাগোয়া ঐতিয্যবাহী এই পুকুর ভরাটে মেতে উঠেছে পৌরসভা। এছাড়া পুকুরসহ আশপাশের প্রায় ১২ একর জমি নিয়ে কক্সবাজার পৌরসভা ও তারেক গং এর মধ্যে মামলা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এরমধ্যে অবৈধভাবে প্রকাশ্যে আবর্জনা ফেলে দখলের উদ্দেশ্যে পুকুরটি ভরাট করে নিচ্ছে পৌরসভা। এদিকে গত বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয় ও পৌরসভার লোকজন পুকুর ভরাটের জায়গা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনে পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে আপাততে আবর্জনা না ফেলার নির্দেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
পুকুর ভরাটের বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশ্রাব পূর্বকোণকে জানান, পুকুর বা দিঘি যার হোক না কেন; অনুমতি ছাড়া ভরাট করতে পারবে না। যদি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ আবর্জনা ফেলে পুকুর ভরাট কাজে জড়িত থাকে তাহলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পৌরসভাকে নোটিশ প্রদান করা হবে। দ্রুত সময়ে বাঁকখালী নদীর পাশে এই পুকুরের দৃশ্যটি পরিদর্শন করবে পরিবেশের লোকজন। তারপর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, আমি গত বুধবার আর্বজনা ফেলে পুকুর ভরাটের জায়গা পরিদর্শন করেছি। ওই সময় পৌরসভার প্রধান নিবার্হীসহ কয়েকজন কর্মকর্তা ও জমির মালিক দাবিদার আইনজীবী তারেক গং উপস্থিত ছিলেন। ওখানে যতটুকু জানা গেছে, প্রায় ১২ একরের বেশি জমি নিয়ে পৌরসভা ও তারেক গং এর মধ্যে মামলা চলছে। মামলার বাদি তারেক গং। তারেক গং এর অভিযোগ, তাদের মালিকানাধীন জমিতে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ আবর্জনা ফেলে ভরাট করছে। বিশাল একটি পুকুর ইতোমধ্যে একাংশ ভরাট করে ফেলেছে। আর পৌরসভা বলছে, এরমধ্যে পৌরসভা ও ব্যক্তি মালিকাধীন জমি রয়েছে। তবে পরিদর্শনে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে জমির বিষয়টি খোলাসা করতে পারেনি পৌরসভার লোকজন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল আরো বলেন, যেহেতু জমি নিয়ে জটিলতা দেখা গেছে, তাই পৌরসভা ও তারেক গংকে ভূমি অফিসে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে। ভূমি অফিস তাদের সমাধান দেবে। এতে আবর্জনা ফেলে পুকুর ভরাট না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে পৌরসভাকে।
জানা গেছে এন্ডারসন রোডের উত্তর পাশে কয়েক বছর ধরে শহরের ময়লা আবর্জনা ফেলে বাঁকখালী নদীর তীর ভরাট করে নিচ্ছে। ভরাটের পর এই জমি দখলে নেয় একটি সিন্ডিকেট। দখলের পর সেখানে নির্মাণ করা হয় বাড়ি–ঘর। ইতোমধ্যে সেখানে বেশ কয়েকবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর । অভিযানের পর সেখানে ফের নির্মাণ হয় স্থাপনা। বর্তমানে আবর্জনা ফেলে তীর দখলে নিয়ে বহু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত পৌরসভা কর্তৃপক্ষ শত শত ট্রাকে আবর্জনা ফেলে দখল প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। তীর নদী দখলের পর এখন
আবর্জনা ফেলে দখল করছে ঐতিয্যবাহী পুকুর।

পাঠকের মতামত: