ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

বড় মহেশখালীর বক্স পারিবারিক মিলনমেলা : একটি বংশের আভিজাত্যের প্রতীক

খালেদ শহীদ, রামু থেকে :

আনন্দ-আড্ডা, সুখ-দুঃখের ভাগাভাগি ও গান-কৌতুকে মুখরিত হয়ে উঠে পারিবারিক মিলনমেলা। সাংস্কৃতিক আয়োজনে র‌্যাফেল ড্র, নৃত্য-তালের মূর্ছনায় আত্মীয়-স্বজনের আবেগ-উচ্ছাসের প্রাণ স্পন্দন আরো বাড়িয়ে দেয়। মিলনমেলার এ উৎসব প্রেরণা যোগাবে, স্বজনের আন্তরিকতা সমৃদ্ধ করবে। এমন আয়োজনে প্রত্যাশাও তাই আগামী বছর মহামিলনের রূপ নেবে, আবারো মিলিত হবে প্রাণের বন্ধনে। বড় মহেশখালীর আভিজাত্য প্রতীক হয়ে উঠবে, বক্স পরিবারে পারিবারিক মিলনমেলা। শুক্রবার কক্সবাজার সাগরপাড়ের বীচ প্লানেট রিসোর্টে দিনব্যাপী আনন্দ-উচ্ছাসে মেতে উঠে, দ্বীপাঞ্চল বড় মহেশখালী স্বনামধন্য বক্স পরিবারের (মাদুস্য বরঅত) তিন প্রজন্ম’র সদস্যরা।

মিলনমেলার বয়োজেষ্ঠ্য ওই পরিবারের জামাতা বাংলাদেশ লবণ চাষী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আলহাজ্ব মোস্তফা কামাল চৌধুরী ও মহেশখালী শাপলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল খালেক চৌধুরী হয়ে উঠেন অনুষ্ঠান প্রধান ব্যক্তি। ঠিক কত বছর পরে, সবাইকে কাছে পেলাম মনেই নাই। তবু আনন্দ ও হৃদ্ধতায় মিলন হতে পেরে শুকরিয়া মহান আল্লাহ’র কাছে। পারিবারিক মিলনমেলায় এসে অনুভব করেছি আপনজনরা কত কাছের, কত আপনার। আগামীতেও এ রকম আয়োজনকে আরো সমৃদ্ধ করতে পরিকল্পনা নেয়া হবে। আরো বড় পরিসরে, আনন্দঘন আয়োজনে উদযাপন করা হবে, এ পারিবারিক মিলনমেলা। প্রীতিভোজ শেষে র‌্যাফেল ড্র অনুষ্ঠানের পুরষ্কার বিতরণকালে এ সব কথা বলেন, আলহাজ্ব মোস্তফা কামাল চৌধুরী। তিনি বলেন, পারিবারিক মিলনমেলা একটি বংশের আভিজাত্যের প্রতীক।

পারিবারিক এ মিলনমেলা আয়োজনে সমন্বয়ক ছিলেন, বক্স পরিবারের বয়োজেষ্ঠ্য মেয়ে মনজে আরা বেগম, নাতি কক্সবাজারের গ্র্যান্ড বীচ রিসোর্টের জি এম শওকত ওসমান ও কক্সবাজার কে জি এন্ড মডেল হাই স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক রাহেলা আকতার ও নাতবৌ শাবানা ইসলাম। কক্সবাজার জেলা স্বাস্থ্য তত্তাবধায়ক সিরাজুল ইসলাম সুবজ, বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমী’র সহকারী প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ তৈয়ব, বেতার শিল্পী ফরমান ও রাসেলের গান-কৌতুক, মিশমা ও মাশনোভার নৃত্য পরিবেশনায় পারিবারিক এ মিলনমেলা আনন্দঘন উৎসবে পরিণত হয়।

বক্স পরিবারের পারিবারিক এ মিলনমেলাকে আনন্দ-আড্ডায় উৎসব মুখর করে তোলেন, কক্সবাজার কে জি স্কুলের অধ্যক্ষ হামিদা পারভীন, পটিয়া কুসুমপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ইছমত আরা, দৈনিক কক্সবাজার বাণী’র চেয়ারম্যান ও মেরী গোল্ড হ্যাচারী’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক রইছ উদ্দীন, সাজ্জাদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আজিম ফরাজী, ময়ূরী বস্ত্র বিতানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুদ্দিন মাহমুদ, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ইন্সট্রাক্টর এম জাহাঙ্গীর চৌধুরী, বাংলাদেশ শীপ ব্রেকার্স এন্ড রিসাইক্লার্স এসোসিয়েশনের সহকারী সচিব নাজমুল ইসলাম, চকরিয়া’র বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ এনামুল হক, রামু প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি খালেদ শহীদ, বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমী’র সহকারি শিক্ষক নাজমা পারভীন উর্মি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী চট্টগ্রাম সেনানিবাসের মেজর ডা. সাফায়েত ইয়াছির আদনান, ব্যাংকার এইচ এম আসিফ হায়দার, তৌকির ওসমান, সাকিবুল কবির, সাইদুর রহমান টিপু ও চট্টগ্রাম ইর্স্টান রিফাইনারী লিমিটেডের কন্ট্রোলার মো. শাহাজাহান চৌধুরী প্রমুখ

নাতজামাতা সিরাজুল ইসলাম সবুজের উপস্থাপনা-গানে ও মোহাম্মদ তৈয়বের কৌতুক অনুষ্ঠান স্থলকে আন্দোলিত করে তোলে। শিক্ষক রাহেলা আকতার ও চট্টগ্রাম ক্যান্টমেন্ট স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র আহমুদুল হাসান তাউসিফের পরিচালনায় র‌্যাফেল ড্র অনুষ্ঠান প্রাণবন্ত হয়ে উঠে। র‌্যাফেল ড্র পরিচালনায় সার্বিক সহযোগিতা করে, মালিহা তৈয়ব মিশমা, মাশনোভা, ওয়ালিদ হাসান সম্পদ, সায়াম শওকত, ইয়াশরিব তৈয়ব, সারওয়াত ওবাইদ ওয়াফী।

মিলনমেলার সমন্বয়ক দাদু শওকত (শওকত ওসমান) জানান, বড় মহেশখালীর বখসু মিয়া পরিবার। মাদুস্য বরঅত (বক্স পরিবার) মহেশখালীর একটি স্বনামধন্য পরিবার। পরিবারের সবাইকে নিয়ে মিলন মেলা উদযাপন করতে পেরে, আমি ধন্য মনে করছি নিজেকে। মিলনমেলায় যোগদিয়ে অনুষ্ঠানকে সফল ও সার্থক করেছেন যারা, তাদের সবাইকে পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

গান-কৌতুক, নাচ-র‌্যাফেল ড্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনার মুহূর্তে নিজের অনুভূতিও প্রকাশ করেন, সিরাজুল ইসলাম সুবজ। তিনি বলেন, মিলনমেলায় এ এক অভূতপূর্ব মিলন, যেন জন্ম জন্মান্তরের এ বন্ধন ছিঁড়বার নয়।

চট্টগ্রামে থেকে মিলনমেলায় যোগ দিতে আসেন শামীম আকতার। তিনি বলেন, আপনজনদের সাথে আনন্দে ডুবে ছিলাম একটি দিন। মনে হয়েছে আবারও শৈশবে ফিরে গেছি, কিছু সময়ের জন্য।

ব্যাংকার এইচ এম আসিফ হায়দার জানান, পরিবারের সবাইকে নিয়ে এক সাথে, একই সময়ে একই নিয়মে। এ যেন ভালবাসার ভাললাগার মূহুর্তের বহিঃপ্রকাশ। পারিবারিক মিলন মেলা ২০১৭। ধন্যবাদ সবাইকে এই আয়োজনের সাথে থাকার জন্য, আমরা সবাই এক পরিবার। ঐতিহ্য দ্বীপ মহেশখালীর আভিজাত্যের প্রতীক এ পরিবার।

পারিবারিক মিলনমেলাকে আরো সমৃদ্ধ ও আনন্দময় করে তোলেন, ওই পরিবারের মেয়ে ছাবেকুন্নাহার, ছেনোয়ারা বেগম, মনোয়ারা বেগম, রোমেনা বেগম, ছেলের বৌ রাজিয়া বেগম ও শাহীন আকতার, নাতি বুলবুল আকতার, শামীম আকতার, নিগার ফারজানা, সালমা ফিরোজা সোনিয়া, নুসরাত ফারজানা হেলেন, সাফিয়া ফারজানা রাফি, জিনাত ফারজানা জিনি, সাজিয়া শহীদ লাভলী, রেহেনুমা তাসনিম তিন্নি, আল মাহমুদ সাঈদ খান, তায়েফ হাসান সাকি, ইবনুল শহীদ ইবু, ওয়াহাব আলী, আদিল হোসাইন, সাইফুল হোসাইন রাহাত, নাতবৌ শিমু চৌধুরী, পৌত্র শায়ন শাহরুখ, মাহিয়ান মাহমুদ, সাফওয়াত শহীদ ওয়াদী সহ আরো অনেকে।

পাঠকের মতামত: