ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেলে অতিষ্ঠ আজিজনগরবাসী

লামা প্রতিনিধি :: 

বান্দরবানের লামা উপজেলার শিল্পনগরী খ্যাত আজিজনগর ইউনিয়নে লাগামহীন ভাবে চলছে ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল। কোন নিয়মনীতি না থাকায় দিন দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠছে এসব মোটর সাইকেলগুলো। বেপরোয়ার কারণে ইউনিয়নের গজালিয়া সড়ক, কোরবানিয়া ঘোনা ও তেলুনিয়া সড়ক দিয়ে চলাফেরা করতে হিমশিম খাচ্ছে এলাকাবাসী আর বিদ্যালয় বিমুখ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বাড়ছে নানা অপরাধমূলক কাজ ও দূর্ঘটনা। এখনিই মটোরসাইকেল চালকদের লাগাম টেনে না ধরলে অপরাধ চলতেই থাকবে বলে দাবী সচেতন মহলের। তারা এসব মোটর সাইকেল বন্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে জানা যায়, আজিজনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কে প্রায় দেড় শতাধিক ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল রয়েছে। বিভিন্ন সড়কের ওপর কিংবা বিদ্যালযের সামনে স্ট্যান্ড বানিয়ে নিজেদের মত করে সেখান থেকে প্রতিনিয়ত যাত্রী পরিবহন করছে এসব মোটর সাইকেল। শুধু তাই নয়, এসবের কোন নিয়ন্ত্রন না থাকায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, চারজন যাত্রী বহনসহ বেপরোয়া গতি যেন কিছুতেই থামছে না। এছাড়া ইউনিয়ন সদরে রয়েছে একটি উচ্চ বিদ্যালয় ও দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যেখানে ১২০০ জন ছাত্র-ছাত্রী অধ্যায়নরত। এসব শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত মোটর সাইকেলের বেপরোয়ার যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ হয়ে আস্তে আস্তে বিদ্যালয় বিমুখ হয়ে যাচ্ছে। আবার প্রতিদিন কোন না কোন স্থানে বেপরোয়া গতির কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মোটর সাইকেল দূর্ঘটনায় আহত হচ্ছে। বিদ্যালয় চলাকালীন বিদ্যালয়ের সামনে মোটরসাইকেল না রাখার নির্দেশনা থাকলেও মানছে না চালকরা। এতে বিদ্যালয়ে পাঠদানে ব্যহত হচ্ছে দারুণ ভাবে। তাছাড়া যাত্রী পরিবহনে উপজেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞ থাকলেও মানছে না তারা। আবার মোটর সাইকেলে করে পাচার করছে বিভিন্ন মাদক দ্রব্যও। মাদক পাচারকালে চকরিয়া, পেকুয়া, লোহাগাড়া থানায় একাধিক মামলা হয়েছে বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক স্কুল ও কলেজ ছাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযোগ করে বলেন, ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালকরা পথে ঘাটে আমাদের দেখলে এমন নোংড়া ভাষায় টিজ করে, যা প্রকাশ করা যায় না।

এদিকে, বেশ কয়েকজন অভিভাবক জানান, আজিজনগরে যেভাবে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল বেড়ে চলছে; তাতে ছেলে মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে অনিহা হচ্ছে। কারণ যারা মোটরসাইকেল চালাচ্ছে তাদের অধিকাংশ চালক কিংবা গাড়ির কোন প্রকার লাইন্সেস নেই। তাছাড়া অল্প বয়সের ছেলে চালকরা। যারা এখনো মোটরসাইকেলে বসলে তাদের দুই পা পর্যন্ত মাটিতে র্স্পশ করতে পারে না। তাই সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে টেনশনে থাকতে হয় তাদের।

পথচারী মমতাজ, আকবরসহ অনেকে বলেন, রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করা অতি কষ্টের হয়ে গেছে। রাস্তা দিয়ে যাতায়তের সময় বামে, ডানে মোটর সাইকেল যেভাবে বেপরোয়াভাবে চলাচল করে যেন কোন দূঘটনার শিকার হব। জনসাধারণের নিরাপদে চলাচল নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়ার উচিত বলে মনে করেন তিনি।

এই বিষয়ে ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালদের নিকট জানতে চাইলে তারা সদুত্তর দিতে পারেননি। আজিজনগর পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ স্বপন সাহা বলেন, বিদ্যালয় চলাকালীন সময় কিংবা বাজারের আশপাশে যেন ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল না রাখে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেউ নির্দেশ অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।

পাঠকের মতামত: