ঢাকা,বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

আলীকদমে ভিজিডি চাল কালোবাজারে বিক্রি, ১৩ বস্তা জব্দ স্বাক্ষর নিয়েছে ৩ মাসের, চাল দিয়েছে ১ মাসের

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, বান্দরবান প্রতিনিধি ঃ   বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার সবচেয়ে দূর্গম কুরুপপাতা ইউনিয়নের ভিজিডি কার্ডে দুস্থদের মাঝে চাউল বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দুস্থ অসহায় মহিলাদের কাছ থেকে ৩ বা ২ মাসের স্বাক্ষর নিয়ে ১ মাসের করে চাল দেয়া হয়েছে বলে জানায় ভিজিডি চাল প্রাপ্ত দুস্থ মহিলারা।

দুস্থ মহিলাদের কম দেয়া চাল কালোবাজারে বিক্রয় করলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৩ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, আলীকদম থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. রফিক উল্লাহ। বর্তমানে জব্দকৃত ১৩ বস্তা চাল থানা হেফাজতে রয়েছে।

জানা গেছে, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভিজিডি কর্মসূচীর অধিনে উপজেলার কুরুপ পাতা ইউনিয়নে ৭শত জন দুস্থ মহিলা ভিজিডি কার্ডে মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার ইউনিয়নের আলীকদম বাজারস্থ কার্যালয়ে ২০৩ জন ভিজিডি প্রাপ্ত মহিলার মাঝে চাল বিতরণ করা হয়।

নাম প্রকাশ না করা সত্ত্বে ভিজিডি প্রাপ্ত কয়েকজন মহিলা জানায়, চাল বিতরণে মাষ্টার রোলে প্রত্যেকের কাছ থেকে ২ বা ৩ মাসের স্বাক্ষর নিয়ে ১ মাসের করে চাল দেয়া হয়। বাকী চাল কালো বাজারে বিক্রয় করে দেয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বারগণ ও সচিব। দুস্থদের চাল কালোবাজারে বিক্রয় করার সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে আলীকদম সদর হিন্দু পাড়া গ্রামের জনৈক শুক্কুরের স্ত্রী পারভীন আক্তারের বাড়ি থেকে অভিযান চালিয়ে ১৩ বস্তা চাল আটক করে আলীকদম থানা পুলিশ। এবিষয়ে পারভীন আক্তার বলেন, আমি প্রতি বস্তা চাল ৭শত টাকা করে ক্রয় করেছি।

কুরুপ পাতা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার লংনী ¤্রাে জানায়, চেয়ারম্যান ও সচিব আমার ওয়ার্ডের লোকজন থেকে ২ বা ৩ মাসের স্বাক্ষর নিয়ে ও কার্ডে এন্ট্রি করে ১ মাসের চাল দিয়েছে। দূর্গম এলাকার মানুষ অশিক্ষিত হওয়া কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করেনি।

আলীকদম উপজেলার ভিজিডি কর্মসূচীর সমস্বয়কারী ও উপজেলা মহিলা অধিদপ্তর কর্মকর্তা সুষ্মিতা খীসা চাউল বিতরণে অনিয়মের কথা স্বীকার করে ও জব্দকৃত চাল ভিজিডি কর্মসূচীর নিশ্চিত করে বলেন, আমি অফিসিয়াল কাজে বান্দরবান জেলা সদরে আাছি। আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। দ্রুত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইউপি চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ¤্রাে বলেন, বৃহস্পতিবার ২০৩ জনকে চাল দেয়া হয়েছে। পারভীন আক্তারের কাছে জব্দকৃত চাল ভিজিডি কর্মসূচীর। কিভাবে কোথায় থেকে এই চাল পেয়েছে আমি জানিনা।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নায়েরুজ্জামান বলেন, অনিয়মের বিষয়ে আমাকে অনেকে বলেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কালোবাজারে বিক্রয়কৃত ১৩ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাঠকের মতামত: