ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

এক রাতেই সামাজিক বনায়নের ৮২ হাজার গাছের চারা ধ্বংস

টেকনাফ প্রতিনিধি::

রোহিঙ্গারা এক রাতেই ধ্বংস করেছে ৭৫ একর সামাজিক বনায়ন। নষ্ট হয়েছে অংশীদারিত্বে রোপিত ৮২ হাজার চারা গাছ। এতে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির পাশাপাশি ধ্বংস হচ্ছে বনভূমি। ২৫ নভেম্বর শনিবার ভোরে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মোচনী বনবিটের আওতাধীন নয়াপাড়ায় বনভূমিতে সৃজিত অংশিদারী সামাজিক বাগানে এঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, প্রায় ২ হাজার রোহিঙ্গা পরিবার আকস্মিকভাবে রাতের আঁধারে সৃজিত সামাজিক বাগানে বসতি গড়তে খুঁটি স্থাপন করেছে। খবর পেয়ে ভোর ৫ টার বনবিভাগ, সিপিজি ও অংশীদারিত্বের সদস্যরা দুই ঘন্টাব্যাপী উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গাদের অন্যত্র সরিয়ে দেয়। কিন্তু হঠাৎ করে কয়েকজন রোহিঙ্গা মোবাইলের মাধ্যমে অদৃশ্য ব্যক্তিদের সাথে আলাপ করে। তাদের উসকানিতে ফের হাজার হাজার রোহিঙ্গা দলবদ্ধ হয়। এক পর্যায়ে সকাল ৮টার দিকে ওই রোহিঙ্গারা সৃজিত সামাজিক বাগানের জমিতে বাধা তোয়াক্কা না করে বাসা তৈরি করতে মাটি খুঁড়াখুড়ি শুরু করে। জনবল কম হওয়ায় বাধ্য হয়ে বন বিভাগের লোকসহ সিপিজি ও অংশীদার সদস্যরা ফিরে আসে। এতে অংশ গ্রহণ করেন মোচনী বন বীটের এফজি সালাহ উদ্দিন, পলাশ ভৌমিক, সামাজিক বনায়নের অংশীদার কমিটির সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী, সাধারন সম্পাদক বদিউর রহমান, অর্থ সম্পাদক মো. ইসমাইলসহ বন বিভাগ, পাহারা দল (সিপিজি) ও সৃজিত বাগানের অংশীদার কমিটির সদস্যরা। সৃজিত বাগানে অংশীদারে থাকা সদস্যরা জানায়, গত জুন মাসে ৭৫ একর জমিতে ২০ লক্ষাধিক টাকা খরচ করে বিভিন্ন জাতের ৮২ হাজার চারা রোপন করা হয়। মিয়ানমারে ২৫ আগস্ট সহিংসতা শুরু হলে রোহিঙ্গারা এদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিলেও এতোদিন পর্যন্ত ওই বাগানে কোন রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়া হয়নি। কয়েকদিন আগে অপরিচিত কয়েকটি এনজিও সংস্থার লোকজন সামাজিক বাগান পরিদর্শন করেন। তাদের উস্কানিতে পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গারা রাতে বাগানে আশ্রয় নেয়। উস্কানি দাতা কারা, তা খতিয়ে দেখা জরুরি। তাদের কারণে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতির পাশাপাশি বনভূমি ধ্বংস ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। পাহাড়ের যে অংশটুকু গাছ গাছালিতে ভরপুর সে অংশটাও রোহিঙ্গাদের দখলে চলে যাচ্ছে। শিগগিরই এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বড় ক্ষতির মুখে পড়বে বলে আশংকা প্রকাশ করেন তারা।

এব্যাপারে সৃজিত বাগানের অংশীদার কমিটির সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ। ইতিমধ্যে কৃষি ও লবণ উৎপাদনের বহু জমি তাদের দখলে চলে গেছে। এরপরও হঠাৎ রাতের বেলায় এক সাথে শত শত পরিবারের সৃজিত সামাজিক বাগান দখল করে বসতি স্থাপনের তোড়জোড় শুরু করে রোহিঙ্গারা। তা খতিয়ে দেখা না হলে ভবিষ্যতে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ার আশংকা করছে স্থানীয়রা ।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী জানান, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে বার বার জানানো হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হচ্ছে সৃজিত সামাজিক বাগানের উপকার ভোগীদের। টেকনাফ বন রেঞ্জ কর্মকর্তা তাপস কুমার দে জানান, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: