ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিওর পোয়াবারো, সেবা ও আর্থিক স্বচ্ছতা প্রশ্নবিদ্ধ

ফারুক আহমদ, উখিয়া ::

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণের ভয়ে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিপন্ন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির মানবতার সেবার নামে দেশী-বিদেশী এনজিও সংস্থা গুলো লক্ষ-লক্ষ টাকা লুটপাট চালাচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে উখিয়া-টেকনাফের ১২টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্যানেটারি ল্যাট্রিন, টিউবওয়েল স্থাপন, এাণ সামগ্রী বিতরণ ও শিশুর পুষ্টি খাবারের নামে এসব এনজিওর কর্মকর্তারা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া সহ রোহিঙ্গা সেবা ও আর্থিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সচেতন মহলে। এমনকি প্রশাসনের নির্দেশকে অমান্য করে স্থানীয় বেকার যুবকদেরকে চাকরি না দিয়ে রোহিঙ্গাদেরকে চাকরি দেওয়া সহ নানা অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার উখিয়া উপজেলা পরিষদ হল রুমে অনুষ্টিত মাসিক এনজিও সমন্বয় কমিটির সভায় এনিয়ে ব্যাপক আলোচনা সহ ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।

জানা যায়, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়নে দেশী-বিদেশী ৭০টি মত এনজিও সংস্থা কর্মরত রয়েছে। তৎ মধ্যে বেশ কিছু এনজিও সংস্থার অপতৎপরতা খুবই আপত্তিকর। উক্ত চিহ্নিত এনজিও কর্মকর্তারা বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশে আসার ইন্দন দিয়েছে এমন অভিযোগও রয়েছে।

এছাড়া ও স্যানেটারি ল্যাট্রিন, টিউবওয়েল স্থাপন, এাণ সামগ্রী বিতরণ ও শিশুর পুষ্টি খাবারের নামে এসব এনজিওর কর্মকর্তারা লক্ষ-লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে অক্সফাম একটি এনজিও সংস্থার কর্মকর্তারা মেম্বার সালাহ উদ্দিন নামক এক ব্যক্তিকে দিয়ে টিউবওয়েল স্থাপন ও স্যানেটারি ল্যাট্রিন নির্মানের নামে বিপুল পরিমান অর্থ লুটপাট চালাচ্ছে। এ ছাড়াও ব্র্যাকের অজিত নন্দি নামক জেলা কর্মকর্তা তার নিজস্ব লোক দিয়ে ল্যাট্রিন ও টিউবওয়েল বসানোর নামে রাতা-রাতি টাকা ওয়ালা বনে গেছে। মেম্বার সালাহ উদ্দিন এনজিওদের সাথে আতাঁত করে ইচ্ছামত নি¤œ মানের কাজ করে টাকা ভাগ-ভাটোরা করছে।

উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী এনজিও মাসিক সমন্বয় সভায় বলেন, দেশী-বিদেশী এনজিওদের অপতৎ পরতা ও পর্দার আড়ালে যে সব কর্মকান্ড চালাচ্ছে তা খুবই উদ্বেগ জনক। তাদের কর্মকান্ড নজরদারি সহ মনিটরিং করা জরুরি হয়ে পড়েছে। দায়িত্বশীল সূত্রে জানাযায়, প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিও সংস্থা গুলোর কর্মকান্ড নজরদারি বাড়াতে সংশ্লিষ্ট দেরকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে প্রশাসনের নির্দেশ থাকার পরও তা অমান্য করে এনজিও সংস্থা রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল, এমএসএফ বার্সোলানা, এমএসএফ হলান্ড, রেড়ক্রস, ব্র্যাক, ইসলামিক রিলিফ সহ বেশ কয়েকটি সংস্থা শতশত রোহিঙ্গা যুবক-যুবতীদেরকে চাকরি দিয়েছে। এমনকি রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল নামক এনজিও সংস্থা অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা যুবক-যুবতীদেরকে চাকরি দিয়ে বর্তমানে কক্সবাজার বিলাস বহুল হোটেলে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী এনজিওদের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে সভায় বলেন স্থানীয়দের চাকরির ক্ষেত্রে এতকড়াকড়ি ও কাগজ পত্র পর্যালোচনা সহ জামিনদার চাওয়া হলেও রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে এসব কিছু না চাওয়ার পিছনে এনজিও গুলোর আসল রহস্য খুজে বের করা উচিত।

উখিয়া উপজেলা পরিষদে অনুষ্টিত এনজিও মাসিক সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে সহকারি কমিশনার (ভূমি) একরামুল সিদ্দিকী বলেন, রোহিঙ্গাদেরকে আশ্রয় দেওয়ার পাশা-পাশি এাণ সামগ্রী বিতরণ সহ নানা সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।এর পরও রোহিঙ্গাদেরকে এনজিও সংস্থা চাকরি দেওয়া মোঠেই উচিত হয়নি। এসব এনজিও দেরকে সরকারি নির্দেশ মেনে রোহিঙ্গাদেরকে চাকরি না দিয়ে স্থানীয় শিক্ষিত যুবকদেরকে চাকরি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

পাঠকের মতামত: