ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে লুটপাট চলছে

অনলাইন ডেস্ক ::

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছেন, রেগুলেটরি ফ্রেইম না থাকায় দেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে লুটপাট ও ডাকাতি চলছে। সমপ্রতি বিভিন্ন কারণে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কয়েক লাখ অ্যাকাউন্ট বন্ধ ও বহু এজেন্টদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার জাতীয় শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, রেগুলেটরি ফ্রেইম ওয়ার্ক (নিয়ামক পরিমণ্ডল) ছাড়া বাজার অর্থনীতি চলছে। এতে করে প্রবৃদ্ধি বাড়লেও তা আশানুরূপ হবে না। একই সঙ্গে চুরি-ডাকাতি বাড়বে, দুর্নীতি বাড়বে।

বাজার অর্থনীতিতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতবাজ-লুটেরা অনেক বেশি সক্রিয় হয়েছে। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে মোবাইল ব্যাংকিং নামের বদলে সেটাকে ‘মানি ট্রান্সফার’ করা হয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিজে টাকা ট্রান্সফার করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ফরাসউদ্দিন বলেন, “বগুড়ায় আমার এক শিক্ষককে কিছু টাকা পাঠাতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে গুনে গুনে ২ শতাংশ কেটে রেখেছে। তারপর সেখানে গিয়ে টাকা তুলতে গেলে শিক্ষকের কাছ থেকেও টাকা কেটে নিয়েছে। এই রকম লুটপাট ও ডাকাতি করছে। ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠালে শূন্য দশমিক ৫ পয়সা শতাংশ কাটা হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। ফরাসউদ্দিন আরো বলেন, দেশে ই-কমার্সে কেনাকাটায় ট্যাক্স নাই। যারা ই-কমার্সে কেনাকাটা করে তারা গরিব মানুষ না। তারা সবাই বড় লোক। তারা টেলিফোনে অর্ডার দেন পরে বাড়িতে পণ্য চলে আসে। ক্রেডিট কার্ডে টাকা নিয়ে নেয়। একমাত্র বাংলাদেশেই কোনো ট্যাক্স নেই। সেখানে ট্যাক্স বসানোর জন্য পাঁচ বছর ধরে বলছি, কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। দুর্নীতি দমন কমিশন নিয়ে সাবেক এই গভর্নর বলেন, শুধু বিচার-আচারের মাধ্যমে দুর্নীতি দমন সম্ভব নয়। দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধের জন্য একটা পরিমণ্ডল প্রয়োজন। বিচার-আচার করে দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব নয়। যদি সমাজে একটা ঢেউ তুলতে পারি যে, দুর্নীতি ভালো জিনিস নয়, এটা রুখতে হবে। এটার বিচার করা কঠিন হলেও রোধ করা সম্ভব। বর্তমান দুর্নীতি দমন কমিশন কাজ করছে বলে তিনি মত দেন। সুশীল সমাজ ও মিডিয়াকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে কমিশনের দুই কমিশনার নাসিরউদ্দিন আহমেদ ও এএফএম আমিনুল ইসলাম, সচিব শামসুল আরেফিন বক্তব্য দেন। এসময় দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বড় দুর্নীতিবাজের কাছে যেতে না পারার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন- আমরা অনেক বড় দুর্নীতিবাজের কাছে যেতে পারিনি। এটা আমাদের স্বীকার করতে হবে। তবে এই না পারার বিষয়টি স্বীকার করার সাহস আমাদের আছে। তিনি বলেন, উন্নয়ন ও দুর্নীতি এটি সম্ভবত যমজ ভাই। রেগুলেটরি ফ্রেইম ওয়ার্কগুলো যদি ঠিক থাকে তাহলে উন্নয়ন ঠিকই হবে। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানগুলো সম্মিলিতভাবে কাজ করলে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা যাবে। তাহলে জনগণের উন্নয়নের জন্য যে অর্থনৈতিক উন্নতি দরকার সেটা করা সম্ভব হবে।

পাঠকের মতামত: