ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

মাছ পরিবহনের কাভার্ডভ্যানে এক লাখ ২০ হাজার ইয়াবা

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ::

টেকনাফ থেকে মাছ পরিবহনের একটি বিশেষ কাভার্ডভ্যান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবা। আজ সোমবার সকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানার নতুন ফিশারিঘাট এলাকায় ইয়াবাগুলোসহ কাভার্ডভ্যানটি জব্দ করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ।

সেই সঙ্গে ইয়াবা পাচারে জড়িত কাভার্ডভ্যানের চালক মো. মামুন বেপারি (৩৩) ও তার দুই সহকারি মো. শাহজাহান (৩২) ও মো. আনোয়ার (২০) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুুলিশ জানায়, কাভার্ডভ্যানে তৈরী একটি বিশেষ ধরণের চেম্বার থেকে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করা হয়। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নগর গোয়েন্দা পুলিশ নতুন ফিশারি ঘাটে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। কাভার্ডভ্যানটি টেকনাফ থেকে মাছ পরিবহণ করে সোমবার সকালে চট্টগ্রামের ফিশারিঘাটে পৌছে।

এ সময় ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞসাবাদে কাভার্ডভ্যানের চালক মামুন বেপারি জানান, মাছ পরিরবহণ করে তারা ঢাকার যাত্রাবাড়িতে যাচ্ছিল। সেখানে মাছগুলো খালাসের পর ইয়াবাগুলোও নিরাপদে পাঠানো হত। তবে ইয়াবা পাচারের বিষয়টি তত্ত্ববধান করেন কাভার্ডভ্যানের সহকারী মো. আনোয়ার।

মামুন বেপারি বলেন, আনোয়ার একটি চক্রের মাধ্যমে টেকনাফ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে। আর আনোয়ার হোসেন বাবু নামে অপর এক ব্যক্তি গাড়িটির সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করে। বাবু ঢাকায় মালামাল পরিবহনের বিষয়টি দেখত এবং তার ভেতরে করে ইয়াবা পাচার করত। কাভার্ডভ্যান মালিকের সাথে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর-পশ্চিম) মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ এ প্রসঙ্গে বলেন, কাভার্ডভ্যানটিতে যে ধরণের চেম্বার তৈরী করা হয়েছে সেখান থেকে আমরা নিশ্চিত ইয়াবাসহ মাদকদ্রব্য পাচারের জন্যই এটি বিশেষভাবে তৈরী করা হয়েছে।

এসআরপি কার্গো সার্ভিস নামক এই কাভার্ডভ্যানটি তৈরীর পর থেকেই মাদক পাচারের সাথে যুক্ত। তবে মাছ পরিবহণের আড়ালে মাদক পাচার করায় তা আইন-শৃঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়েছে। যা স্বীকার করেছে কাভার্ডভ্যানের সহকারি মো. আনোয়ার।

জিজ্ঞাসাবাদে আনোয়ার স্বীকার করেন, প্রায় ২৫ টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন কাভার্ডভ্যানটি মাদক পাচারের জন্য কোন সময় ৫-৬ টনের বেশি মাছ পরিবহণ করতো না। যাতে যে কোন পরিস্থিতিতে কাভার্ডভ্যানটি দ্রুতবেগে চালিয়ে নেওয়া যায়।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার(পশ্চিম) এএএম হুমায়ন কবির বলেন, কাভার্ডভ্যানটিতে যেভাবে বিশেষ কৌশলে চেম্বার তৈরি করা হয়েছে সেটা বাইরে থেকে দেখে বোঝা যাবে না। কাভার্ডভ্যানের ভেতরের রংয়ের মতো করে রঙের প্রলেপ লাগানো ছিল এতে। যেটা স্ক্রু দিয়ে ফিটিং করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সংঘবদ্ধ একটি চক্র ইয়াবা পাচারের জন্য কাভার্ডভ্যানটি মালামাল পরিবহনের আড়ালে ইয়াবা পাচারের জন্য রাস্তায় নামিয়েছে। এর সাথে কাভার্ডভ্যান মালিকও যুক্ত। বিভিন্ন কৌশলের মতো ইয়াবা ব্যবসায়ীরা এবার পণ্য পরিবহনের গাড়ি বেছে নিয়েছে বলে আমাদের ধারণা।

তিনি জানান, গত ২৫ অক্টোবর গাড়িটি রাস্তায় নামানো হয়েছে। এরমধ্যে তারা টেকনাফ থেকে ঢাকায় পাঁচটি ইয়াবার চালান পাচার করেছে। চক্রটির কাছে আরও চার থেকে পাঁচটি গাড়ি রয়েছে। যেগুলো বিভিন্ন পরিবহন কো¤পানির নামে চলাচল করছে। তবে গাড়িগুলো ও মালিকের সন্ধানে মাঠে নেমেছে পুলিশ।

পাঠকের মতামত: