ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে রাজাখালী সেতুটি ভাসমান হকারদের দখলে!

ক্রাইম প্রতিবেদক :

রাজাখালী পুরোনো সেতুটি এখন ভাসমান হকারদের দখলে । সেতুজুড়ে ভ্যান করে কাঁচা পণ্য, শুঁটকি ও শীতবস্ত্রের পসরা সাজিয়ে রীতিমতো বাজারে পরিণত করা হয়েছে। এজন্য প্রতিনিয়ত যানজট লেগে যাত্রীদের নাভিশ্বাস উঠে।
অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে এসব ভাসমান দোকান গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিটি দোকান থেকে পুলিশের নামে দিনে ৭০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়। অর্ধ শতাধিক দোকান থেকে দৈনিক প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা চাঁদা তোলা হয়। যা মাসে দাঁড়ায় এক লাখ ৫ হাজার টাকা। কামাল উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি এসব টাকা উত্তোলন করেন। প্রতিটি দোকান থেকে এককালীন ৫ হাজার টাকা করে নেয়া হয়।
৩৫ নং বক্সিরহাট ওয়ার্ড কাউন্সিলর  বলেন, ‘বাকলিয়া থানা ও চাক্তাই পুলিশ ফাঁড়ি প্রতিটি দোকান থেকে দিনে ৭০ টাকা করে চাঁদা নেয়। এককালীন ৫ হাজার টাকা করে নিয়ে দোকান বসার সুযোগ করে দেয়া হয়।’
দেখা যায়, শাহ আমানত সেতুর গোল চত্বর থেকে নগরীর প্রবেশমুখে রাজাখালী পুরোনো সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। সেতুর একপাশে দেবে যাওয়ায় ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সিটি করপোরেশন। ভারী ওজনের যানবাহন চলাচল রোধ করতে উভয় পাশে দেয়াল ও লোহার খুঁটি দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে। তারপরও থেমে নেই ভারী ওজনের যানবাহন চলাচল। পুরোনো এই সড়ক দিয়ে চাক্তাই–রাজাখালীর সিংগভাগ ব্যবসায়ী, কর্মচারীসহ হাজার হাজার লোক চলাচল করে। প্রতিদিন শত শত ট্যাক্সি, টেম্পো, রিকশা ও মাঝারি যানবাহন চলাচল করে। সিটি করপোরেশন ‘সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি’ জারি করেই দায় সেরেছে।
এদিকে ভারী যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলেও সেতুটি এখন ভাসমান হকারদের দখলে চলে গেছে। সেতুজুড়ে অন্তত ৩০টি ভ্যান করে নানা পসরা সাজিয়ে বিকিকিনি চলে আসছে। সেতুর আশপাশে রয়েছে আরও ১৫–২০টি ভাসমান দোকান। সকাল থেকে রাত অবধি সেতুর ওপর ভাসমান দোকানে তরিতরকারি থেকে শুরু করে মাছ ও শীতের নানা পসরা বিকিকিনি চলছে। বিকেল ও সন্ধ্যার পর সেতুর অর্ধেকাংশ দখল হয়ে যাওয়ায় যানজট লেগে থাকে। এতে এলাকাবাসী, ব্যবসায়ী ও ছোট যানবাহন চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়ে।
চাক্তাই ও খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, আছাদগঞ্জসহ বাণিজ্যিকপাড়ার ব্যবসায়ীরা পণ্য পরিবহনে এই সেতুর ওপর নির্ভরশীল। এছাড়াও দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার ভোগ্যপণ্যবাহী ট্রাকগুলো এই পথে পণ্য পরিবহন করা হয়। কিন্তু সেতু ওপর অবৈধ দোকান বসার কারণে সেতুটি অকেজো হয়ে পড়ে। মেরিনার্স সড়ক হয়ে অনেক পথ ঘুরে পণ্যবাহী ভারী যানবাহন চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। এতে খরচ যেমন বাড়ছে, তেমনি সময়ও নষ্ট হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ‘সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি’ টাঙিয়ে সেতুর দুই পাশে লোহার পাটাতন ও পিলার নির্মাণ করে ভারী যানবাহন চলাচল সংকুচিত করেছে সিটি কর্পোরেশন। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ২০ বছর আগে রাজাখালী খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়।

 

পাঠকের মতামত: