ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

উখিয়া-টেকনাফে রোহিঙ্গাদের কারণে বন্যপ্রানীরাও হাহাকার, হাতির পাল ফসলী ক্ষেতে হানা

গিয়াস উদ্দিন ভুলু,টেকনাফ ::

মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের কারণে উখিয়া-টেকনাফের জনগনের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বন্যপ্রানীও। পাহাড় ও বনজঙ্গলসহ আবাসস্থল সাবাড়ের কারণে গ্রামাঞ্চলে হানা দিয়ে লাখ লাখ টাকার ক্ষেত খামারের ক্ষতি করছে বন পশুরা। টেকনাফ, হ্নীলা, হোয়াইক্যং ও বাহারছড়ায় ইতিমধ্যে বন্য হাতি পাল হানাি দয়ে কয়েক লক্ষাধিক টাকার ধান ও বিভিন্ন প্রকার শষ্য ক্ষেত নষ্ট করেছে। ১৮ নভেম্বর শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় টেকনাফ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত কৃষক উপজেলা প্রশিক্ষন কেন্দ্রে বীজ ও সার বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি উখিয়া-টেকনাফের সাংসদ আবদুর রহমান বদির কাছে কৃষকরা অভিযোগগুলো তুলে ধরেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন ছিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আহমদ।

এসময় হ্নীলা ইউনিয়নের পানখালী গ্রামের কৃষক ফরিদুল আলম অভিযোগ করেন, কৃষি কাজ হচ্ছে তার পেশা। সম্প্রতি একদল বন্য হাতির দল তার ধান ও শষ্য ক্ষেতে ফলন পাওয়ার প্রাক্কালে হানা দিয়ে তিন লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি করেছে। এখন সে নিংস্ব হয়ে পরিবার নিয়ে খুব সমস্যাই রয়েছে। তিনি তার উপযুক্ত ক্ষতিপূরন দাবী করেন।

একই অভিযোগ করেন হোয়াইক্যংয়ের হরিখোলার কৃষাণী লাবং সিং চাকমা। সে জানায়, ঋণ নিয়ে অনেক কষ্টে জমিতে ধান চাষ করেছেন। ফলন পাওয়ার সময় বন্য হাতিরা হানা দিয়ে খেয়ে পেলেছে এবং নষ্ট করেছে। এখন ঋণ শোধ করার মতো টাকা নেই। তিনিও ক্ষতিপুরনের দাবী জানান। এসময় বন্যপশু কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্থ আরো একাধিক কৃষক কৃষাণী এমপি আবদুর রহমান বদির কাছে সাহায্য চেয়ে অভিযোগ করলে তিনি তাদের উপযুক্ত ক্ষতি পুরণের আশ্বাস প্রদান করেন এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ও কৃষি কর্মকর্তাকে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার আহবান জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুর রহমান বদি আরো বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার, কৃষিই সমৃদ্ধি বয়ে আনে। রোহিঙ্গাদের কারণে উখিয়া-টেকনাফের মানুষ যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তেমনি ভাবে বণ্যপ্রাণীরাও। পাহাড়ের গাছপালা কেটে চারণ ভূমি সাবাড় করার কারণে পশুদের খাদ্য নেই, বন্যপশুরা এখন হাহাকার। ফলে গ্রামাঞ্চলে হানা দেওয়া স্বাভাবিক। কৃষকরা ক্ষতি হলে তার ভূক্তভোগী আমাদের হতে হবে। তাই কৃষকদের উপযুক্ত ক্ষতিপুরনের জন্য তিনি সংসদে বিষয়টি উত্থাপন করবেন বলেও জানান। এছাড়া তিনি কৃষকদের জন্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। পরে প্রধান অতিথি, ভূট্টা, বিটি বেগুন, পেলন বীজ, সারসহ বিভিন্ন সামগ্রী ১১০ জন কৃষকের হাতে তুলে দেন।

সভায় স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আবু হারেছ, সহকারি কৃষি কর্মকর্তা শফিউল আলম, মোঃ আনোয়ার, উপকারভোগী কৃষক, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

……………………………

হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে টেকনাফে মানববন্ধন

গিয়াস উদ্দিন ভুলু,টেকনাফ ::

টেকনাফে হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৮ নভেম্বর শনিবার বিকাল ৪ টার দিকে হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা বাজার সংলগ্ন টেকনাফ-কক্সবাজারের প্রধান সড়কে এলাকাবাসীরা এ মানববন্ধন করেন। এসময় চিহ্নীত সন্ত্রাসী ও ইয়াবা ব্যবসায়ীদের হাতে খুন হওয়া আবু ছিদ্দিকের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানান এলাকাবাসীরা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, হ্নীলা বাজার কমিটির সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক জহির আহমদ, নিহত আবুছিদ্দিকের বড় ভাই কবির আহমদ, ছোট ভাই ও মামলার বাদী মোঃ আলম, জামাল হোছন ও মোহাম্মদ ইউনুছসহ এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারন। এসময় বক্তারা বলেন, এলাকার চিহ্নীত সন্ত্রাসীরা রোহিঙ্গাদের ভাড়া করে সন্ত্রাসী রাজত্ব কায়েম করেছে। কালু মিয়া ও ধলা মিয়া বাহিনী রোহিঙ্গাদের সাথে যোগসাজস করে নির্মম ভাবে হত্যা করে। বক্তারা আরো বলেন, নিঃসংকোচ ও বীরদর্পে এলাকায় বিচরণ করে মামলার বাদীকে প্রাণনাশের হুমকী এবং ধমকী অব্যাহত রেখেছে ওই সন্ত্রাসীরা। আর তাদের হুমকী-ধমকীতে প্রাণ ভয়ে এবং আতংকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে মামলার বাদী। উল্লেখ্য, গত ১৯ অক্টোবর বিকালে অস্ত্রে স্বস্ত্রে সজ্জিত পুর্ব লেদার মৃত কালা চানের পুত্র আবু ছিদ্দিককে রিফুজি বাজার হইতে বাড়ী আসার পথে লেদা মৌলভীপাড়াস্থ ধলাইয়ার বাড়ীর সামনে হতে জরুরী কাজ আছে বলে নিয়া যায়। এসময় পূর্ব থেকে উঁৎপেতে থাকা ধলা মিয়া, কালু মিয়া, মোঃ হানিফ, রহমত উল্লাহ, নুর কবির, আনোয়ার হোছাইন, আবদুল মালেক ও সোনা মিয়া অতর্কিতভাবে তাকে ঘিরে লোহার রড দিয়ে আবু ছিদ্দিকের পায়ে আঘাত করে উঠানে ফেলে দেয় এবং ছুরি দিয়া হত্যা করার উদ্দেশ্যে আবু ছিদ্দিকে আঘাত করে। এসময় সে চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে যায় ও তাহার পেটের নাড়িভুড়ি বাহির হয়ে যায়। চিৎকার শুনে ভাই মোঃ আলম ও স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল হতে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা প্রায় মৃত আবু ছিদ্দিককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ অক্টোবর ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।

পরে নিহতের ভাই মোঃ আলম বাদী হয়ে গত ২৪ অক্টোবর ৮ জনকে আসামী করে খুন করার অপরাধে টেকনাফ মডেল থানায় (৩৫ নং) মামলা দায়ের করেন।

এরপর থেকে আসামীরা মামলার বাদী মোঃ আলমকে মামলা তুলে নিতে চাপ দিতে থাকে। নয়তো তাকেও প্রাণে মেরে ফেলবে বলে প্রতিনিয়ত হুমকী ও ধমকী দিয়ে বীরদর্পে এলাকায় বিচরণ করছে বলে মানববন্ধনে দাবী করেছেন বাদী মোঃ আলম।

পাঠকের মতামত: