ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

ইভিএম থাকবে না, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়ন করবে -ইসি

অনলাইন ডেস্ক :::
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে। তবে কোন পদ্ধতিতে মোতায়ন করা হবে-সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। একইভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএম ব্যবহার করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদার। সোমবার বিকালে আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘সেনা মোতায়েন হবে আগামী নির্বাচনে। এখানে একটা কিন্তু আছে। সেনা বাহিনীকে আমরা কিভাবে কাজে লাগাবো, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সেনা বাহিনী কিভাবে যুক্ত হবে, সেটি বলার সময় এখনও হয়নি। কমিশনে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কমিশন এ পর্যন্ত বিষয়টিতে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে আমরা কমিশনাররা মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং আমাদের সবারই অনুভূতি হচ্ছে সেনা মোতায়েন হোক। তবে এটাকে কমিশনের সিদ্ধান্ত বলা যাবে না। সময়ই বলে দেবে যে কিভাবে সেনা মোতায়েন হবে।’

সেনা মোতায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, এখন হয়তো আমরা একটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিনা। কিন্তু সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্তটা উঠে আসবে। কারণ সময়ই বলে দেবে কী সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার। আমি কখনোই বলতে পারবো না যে সেনা মোতায়েন হবে না।
বিএনপির ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ারসহ সেনা মোতায়নের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি সেনা মোতায়েন হবে বলেনি। তারা বলেছে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ারসহ সেনা মোতায়েন করতে হবে। তবে বিএনপির বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই।’

ইভিএমের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ইভিএমের লোকজন ডেকেছিলাম। তারা আমাদেরকে সেগুলো দেখিয়েছেন। আর এর আগে যেইসব ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছিল। সেগুলো সব বাতিল হয়ে গেছে। তাই সেগুলোকে ইতোমধ্যে আমরা অকার্যকর বলে ঘোষণা করেছি। আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করতেই হবে এমন কোনো চিন্তা আমাদের মধ্যে নেই। তবে ভবিষ্যতে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ইভিএমকে যুক্ত করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইভিএম আমাদের এমন একটা অনিবার্য বিষয়, যা ভবিষ্যতে আমাদের ব্যবহার করতে হবে। আমরা হয়তো পারবো না। আমরা পারবো কিভাবে? আমাদেরতো প্রাথমিক প্রস্তুতিই নেই। আমাদেরকে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন করতে হবে। সেই নির্বাচন যদি প্রশ্নবিদ্ধ যন্ত্র দিয়ে হয়। যন্ত্রকে যদি মানুষ নিয়ন্ত্রণ করে ব্যবহার করে তাহলে সেটি দিয়ে আমরা প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করতে পারি না।’

তিনি বলেন, ‘এটা আমার ব্যক্তিগত অভিমত এবার ইভিএম ব্যবহার হবে কিনা এ বিষয়ে আমার সন্দেহ আছে। ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য যেই সময় দরকার, যেই অগ্রগতি দরকার, সেই রকম সময় আমাদের হাতে নেই।’

গত ১৫ অক্টোবর ইসির সংলাপে অংশ নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ারসহ সেনা মোতায়ন, নির্বাচনে ইভিএম না ব্যবহারের পক্ষে প্রস্তাব উপস্থাপন করে দলটি। ১৮ অক্টোবর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংলাপে অংশ নিয়ে আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মতামত তুলে ধরে। সেনা বাহিনীর মোতায়ন নিয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য তুলে ধরেনি দলটি। এরপর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সংশোধনীতে ইভিএম সংযুক্ত পরিকল্পনা করেছে ইসি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনা বাহিনী না রাখার পক্ষে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সর্বশেষ গত রবিবার ঢাকার সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ারসহ সেনা মোতায়নের দাবি তুলে ধরেন।

পাঠকের মতামত: