ঢাকা,বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

লোহাগাড়ায় মহাসড়কে বাঁশ ও কাঠের গাড়ি আটকিয়ে বনবিভাগের চাদাঁ আদায়!

মোঃ সাইফুল ইসলাম, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ

চট্টগ্রাম দক্ষিন বনবিভাগের লোহাগাড়া চুনতি রেঞ্জের সাতগড় বনবিটের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চলাচলরত বাঁশ ও কাঠের গাড়ি আটকিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। কাঠ ব্যবসায়ী ও স্থানীয় লোকজন এ অভিযোগ করেন।

কাঠ ব্যবসায়ীরা বলেন, পার্বত্য বান্দরবানের আজিজনগর ও কেঁয়াজুপাড়া এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রজাতির গাছের বাগান কিনেন ব্যবসায়ীরা। পরবর্তীতে সেই বাগান থেকে গাছ কেটে আজিজনগর স্টেশন দিয়ে বিভিন্ন করাতকলে নেওয়া হয়। নেওয়ার সময় আজিজনগর স্টেশন ও আশপাশ এলাকায় সাতগড় বনবিট কর্মকর্তা মো. ইউনুছ ও বনপ্রহরীরা অবস্থান নিয়ে কাঠের গাড়ি আটকে দেন। এরপর এক হাজার দুই শত টাকা থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায়ের পর কাঠবোঝাই গাড়ি ছেড়ে দেন।

স্থানীয় লোকজন বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের আজিজ নগর ও কাপ্তাই থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে বাঁশের গাড়ি যায় কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে। সেখানে মিয়ানমারের শরনার্থীরা বসতঘর তৈরিতে সেই বাঁশ ব্যবহার করেন। কিন্তু বাঁশবোঝাই গাড়ি লোহাগাড়া চুনতি রেঞ্জের আওতাধীন সাতগড় বনবিট এলাকায় পৌঁছালে আটকে দেন বনকর্মীরা। এরপর আটশত টাকা থেকে এক হাজার টাকা আদায়ের পর ছেড়ে দেন। টাকা দিতে না চাইলে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন।

দুইজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার সময় কাপ্তাই থেকে উখিয়াগামী একটি বাঁশবোঝাই ট্রাক হারবাং চৌধুরী জসিম ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌঁছালে থামার সংকেত দেন সাতগড় বনবিট কর্মকর্তা মো. ইউনুছ ও বনপ্রহরী জসিম উদ্দিন। ট্রাকটি ফিলিং স্টেশনের পাশে সাইড করে দাঁড় করিয়ে এক হাজার দুইশত টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ট্রাকটি বনবিটে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। একপর্যায়ে আটশত টাকা দিয়ে ট্রাকটি ছাড়া পায়।

আজিজনগর কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সংগঠনের তালিকাভুক্ত ব্যবসায়ীরা প্রতি মাসে বনবিভাগকে ২২ হাজার টাকা দিই। আগামী মাস থেকে আরও বেশি টাকা দাবি করছে। তবে তিনি নিউজের কারনে যাতে তাদের ব্যবসার ক্ষতি না হয়, সে বিষয়টি দেখার অনুরোধ করেন।

ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, আজিজনগর কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির তালিকাভুক্ত না হলে প্রতি গাড়িকে এক হাজার দুইশত টাকা থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বনবিভাগকে দিতে হয়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাতগড় বনবিট কর্মকর্তা মো. ইউনুছ বলেন, ‘আমরা আসলে কারও কাছ থেকে ‘ওইভাবে’ টাকা আদায় করি না। বনবিভাগের আরেকটি বিভাগের দুইজন কর্মচারী সারা রাত মহাসড়কে গাড়ি নিয়ে ঘুরে ঘুরে গাড়ি আটকিয়ে টাকা আদায় করেন। এখন তাঁরা বাঁচতে দোষ আমাদের ওপর চাপানো হচ্ছে।’

পাঠকের মতামত: