ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজারে দেশের প্রথম ইকো অ্যাডভেঞ্চার উন্মুক্ত করা হচ্ছে নভেম্বরে

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার ::

কক্সবাজারের ফাঁসিয়াখালী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও মেধাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানে দেশের প্রথম ইকো অ্যাডভেঞ্চার হচ্ছে। নীরবে নিরাপত্তায় বন্যপ্রাণী দেখার পাশাপাশি ইকো অ্যাডভেঞ্চারের নানা ব্যতিক্রমী আইটেম রয়েছে এখানে।

১৭০০ হেক্টর বনভূমিতে গড়ে ওঠা অ্যাডভেঞ্চারের কাজ শেষ হয়েছে। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পর্যটক-দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এটি।মেছোবাঘ, হাতির পাল, বানর, উল্টোলেজ বানর, বনবিড়াল, খাটাশসহ শত প্রকার বন্যপ্রাণী, বনমোরগ, শুশুক, ইগল, সবুজ ঠোঁট ফিঙে, চিল, শ্যামাসহ দেড় শতাধিক প্রজাতির পাখি, গুইসাপ, হ্যাজা সাপসহ নানা প্রজাতির সাপ ও বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণী দেখার সুযোগ রাখা হচ্ছে। তাও আবার দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় রেখে। তবে শর্ত হচ্ছে দর্শকদের নীরবতা পালন করতে হবে। শুধু তাই নয় বন ভ্রমণকারীদের জন্য রয়েছে ইকো অ্যাডভেঞ্চার। এর মধ্যে অনেক নতুন অ্যাডভেঞ্চার রয়েছে যা অত্যন্ত রোমাঞ্চকর। একদিকে বনের ভেতর বন্যপ্রাণী দেখার সুযোগ অন্যদিকে রোমাঞ্চকর ইকো অ্যাডভেঞ্চারে নিজেদের মাতিয়ে রাখতে পারবেন প্রকৃতিপ্রেমী ভ্রমণকারীরা। যা বাংলাদেশে প্রথম।

এমন তথ্য দেন কক্সবাজার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (উত্তর) মাহবুব মোরশেদ।বাংলাদেশে পর্যটক আর দর্শনার্থীদের জন্য প্রথম ইকো অ্যাডভেঞ্চার ব্যবস্থাপনা করছে ন্যাচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (নেকম) এর ক্রেল প্রজেক্ট। ন্যাচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (নেকম) এর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. আলম খান বলেন, ‘কক্সবাজারের মেধাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান ও ফাঁসিয়াখালী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে হচ্ছে এ ইকো অ্যাডভেঞ্চার। নভেম্বর মাসের মধ্যসময়ে পর্যটকসহ সকল দর্শনার্থীর জন্য উন্মুক্ত করা হবে। তবে অবশ্যই বন্যপ্রাণীদের স্বার্থে কিছু শর্ত পালন করতে হবে দর্শনার্থীদের। ’

নেকমের সাইট অফিসার মো. আবদুল কাইয়ুম বলেন, ‘বিশাল বনাঞ্চলে যেসব অ্যাডভেঞ্চার রয়েছে এর মধ্যে ট্রি অ্যাডভেঞ্চার, সাইক্লিন, হ্রদে বোটিং, ফিশিং, টি হাউস, ইকো হাউস, তাঁবু জলসা, হেমগ, গাছে ঝোলা, ট্রেল হাইকিং, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার অন্যতম। ’

তিনি জানান, রাতে বা দিনে গাছের মাছায় উঁচুস্থানে নিরাপদে বন্যপ্রাণী দেখা, রাতে গাছে রাত্রিযাপন, ঝুলিয়ে এক গাছ থেকে অন্য গাছে যাওয়া, গাছের দোলনায় গা দুলিয়ে দেওয়াসহ প্রকৃতির কোলে বিশ্রাম নেওয়ার অনন্য সুযোগ থাকছে এখানে। দর্শনাথীদের জন্য ইকোট্যুর গাইড রয়েছে। রয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ।

মেধাকচ্ছপিয়া বিট অফিসার সৈয়দ আবু জাকারিয়া বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের বৃহৎ মাদার গর্জন বাগান। উঁচু নিচু পাহাড়, সমতল এলাকা নিয়ে ৩৯৫.৯৩ হেক্টর বনভূমিতে গর্জন ছাড়াও ডুমুর, বহেড়া, অর্জুন, বাঁশঝাড়, বেত, বাদাম, ছাতিমসহ নানা প্রকারের গাছ রয়েছে। যা পর্যটকদের ভ্রমণে আকৃষ্ট করবে। এই বনভূমি রক্ষা করা হয়েছে জীবনঝুঁকি নিয়ে। ’

ফাঁসিয়াখালির বিট অফিসার এস এম এনামুল হক জানান, ফাঁসিয়াখালী অত্যন্ত ঘন বন। এখানে বিরল প্রজাতির শুশুক পাখি, বিরল প্রজাতির উল্টো লেজ বানর রয়েছে। রয়েছে হাতির প্রজনন স্থান। নীরবে হাঁটা আর উঁচু স্থানে অবস্থান করে নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী দেখার সুযোগ এখানে রয়েছে।

প্রকৃতি পর্যটন প্রসারে ইকো অ্যাডভেঞ্চার বিষয়ে অবহিত করার জন্য সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা ও প্রকৃতি পর্যটন স্থান পরিদর্শনের ব্যবস্থা করেন সংশ্লিষ্টরা। সভায় বক্তব্য দেন ক্রেল আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. আলম খান, ফাঁসিয়াখালী বিট অফিসার এস এম এনামুল হক, মেধাকচ্ছপিয়া বিট অফিসার সৈয়দ আবু জাকারিয়া, সহব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবুল হোসেন, সদস্য আক্তার কামাল, জাহাঙ্গীর আলম আকাশ, মকতুল হোসেন প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন ক্রেল সাইট অফিসার মো. আবদুল কাইয়ুম।

পাঠকের মতামত: