ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় ওয়াপদার মিটার রিডার সাইফুলের বিরুদ্ধে লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ

অলি উল্লাহ রনি চকরিয়া-পেকুয়া (কক্সবাজার): চকরিয়ায় ওয়াপদা (পিডিবি)’র মিটার রিডার সাইফুলের দাবিকৃত লাখ টাকার ঘুষ না দেওয়ায় গ্রাহককে দফায় দফায় হয়রানিমূলক বিল করার অভিযোগ উঠেছে। লাখ টাকায় অপারগতা প্রকাশ করায় ৫০হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে গ্রাহককে ভৌতিক বিলের কাগজ ধরিয়ে দিচ্ছে অভিযুক্ত মিটার রিডার।

গতকাল রোববার সকাল ১১টার দিকে চকরিয়া পৌরশহরের ২নং ওয়ার্ড জনতা মার্কেটস্থ সাব রেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন এলাকায় ওই দাবিকৃত ঘুষসহ বিল আদায়ে গ্রাহকের বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে আসলে তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠে এলাকাবাসীর।

সূত্রে জানা গেছে, পিডিবি চকরিয়ার মিটার রিডার সাইফুল ইসলাম তার একাধিক সহযোগিদের নিয়ে গ্রাহক বাড়িতে না থাকার সুযোগে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে আসে পৌরশহরের জনতা মার্কেটস্থ সাব রেজিস্ট্রি অফিস এলাকায়। এসময় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবাদ জানায় এবং তাদের আটকে রাখে। খবর পেয়ে স্থানীয় সমাজসেবক ও জেলা তাঁতীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এমডি. জাফর আলম কোম্পানি ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব ফজলুল করিম সাঈদীর হস্তক্ষেপে আটক মিটার রিডার সাইফুল ইসলামকে পিডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার হাতে সোপর্দ করেন।

হয়রানির শিকার গ্রাহক এমডি. জাফর আলম কোম্পানি জানান, প্রতিমাসে ৬শ থেকে ৭শ ইউনিট পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে বিল দিয়ে আসছিলাম। কিন্তু চলতি বছরের ৩টি বিলের কাগজ ছাড়া কোন কাগজপত্র প্রদান করেননি ওয়াপদা কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে, ওয়াপদা বিভাগের নিয়মানুযায়ি সংশ্লিষ্ট মিটার রিডার কর্তৃক এপ্রিল মাস ছাড়া ধারাবাহিক বিলের কাগজ প্রদান করতে না পারায়; নিজের ত্রুটি শিকার করে ওই ত্রুটি সমাধানের জন্য উল্টো মিটার সাইফুল ইসলাম উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করার কথা বলে ১লাখ টাকা ঘুষ দাবি করে। পরে লাখ টাকার ঘুষ দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারের মাধ্যমে ৫০হাজার টাকা দাবি করে। ওই টাকা না দেওয়ায় গত মাসের (সেপ্টেম্বর’১৭) বসতবাড়ির ব্যবহৃত বিদ্যুত বিল তৈরি করে ৫হাজার ৫শত ইউনিটের। চলতি মাসে ৬হাজার ইউনিটের একটি বিদ্যুত বিল তৈরি করে আমাকে দেন। ওই বিলের কাগজে কোন খাত না দেখিয়ে সাবেক বিলের অজুহাতে ১লক্ষ ৬৮হাজার টাকা উল্লেখ করে বিলের কাগজটি ধরিয়ে দেন।

তিনি জানান, মিটার রিডার সাইফুলকে আমার মিটারে কি পরিমাণ ইউনিট জমা আছে; তা যাচাই করে যথাযথ হলে আমি বিল পরিশোধ করার কথা বলি। কিন্তু মিটার রিডার সাইফুলের মনগড়া ভৌতিক বিদ্যুত বিলের টাকা প্রদান করতে অনীহা প্রকাশ করলে গতকাল রোববার স্বদলবলে সাইফুল ইসলাম বাড়ির বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে আসে। আমি গ্রাহক হিসেবে তাতে প্রতিবাদ করলে উল্টো অসৌজন্যমূলক আচরণ করে সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য ঔদ্ধত হয় তারা। এসময় স্থানীয় এলাকাবাসী এর প্রতিবাদ জানায়। এতে কোন ধরনের ভ্রুক্ষেপ না করে লাইন কাটার প্রস্তুতি নিলে গণরোষানলের মুখে মিটার রিডার সাইফুল ও তার সহযোগিরা। তিনি বলেন, আমি উত্তেজিত এলাকাবাসীকে শান্ত করে আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক কাউন্সিলর ফজলুল করিম সাঈদীসহ তাদের উদ্ধার করে ওয়াপদার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার হাতে তুলে দেই।

এদিকে এমডি. জাফর আলম কোম্পানি দাবি করেন, আমার মতো ভৌতিক বিল করে বহু অসহায় ও নিরীহ গ্রাহককে হয়রানি করে যাচ্ছেন ওয়াপদা বিভাগের কতিপয় অসাধু মিটার রিডাররা। তিনি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযুক্ত মিটার রিডার সাইফুলের হয়রানি থেকে জনসাধারণকে রেহাই দিতে ওয়াপদা বিভাগ চকরিয়াসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এব্যাপারে জানতে পিডিবি চকরিয়ার আবাসিক প্রকৌশলী ফয়জুল আলিম আলোর মুঠোফোনে রোববার বিকাল ৩টা ২২মিনিটের দিকে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

পাঠকের মতামত: