ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

চাঁদা দিয়েই চলছে ২৫ হাজার যানবাহন

এম. বেদারুল আলম :tom.
প্রতিদিনই জেলার সড়ক উপসড়কে বাড়ছে অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা। নিবন্ধন ছাড়া প্রতিদিন অন্তত ২৫ হাজার যানবাহন চললে ও বেশির ভাগই চলছে বিভিন্ন দপ্তরে চাঁদা কিংবা মাসোহারার মাধ্যমে। অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি নানা উদ্যোগ গ্রহন করলেও ‘সর্ষে ভূত’ থাকায় তা কোন কাজে আসছেনা। এছাড়া গত বছর শুধুমাত্র শহরের অভ্যন্তরে বেড়েছে ৫ শতাধিক টমটম। পৌরসভার কাউন্সিলরদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া টমটমের লাইসেন্সের কারনে ও মুলত শহরেই বেড়েছে অনেক অনিবন্ধিত টমটম। গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে মোটর সাইকেল ও থ্রী হুইলার নিবন্ধন ছাড়া বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে সরকার। মোটর সাইকেল ও অটোরিক্সা বিক্রির সময় নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্নের জন্য ডিলার ও এজেন্টদের নির্দেশ প্রদান করে বিআরটিএ।
এদিকে বিআরটিএ’র জেলা যান পরিদর্শক আরিফুল ইসলাম টিপু জানান, আমরা নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অবৈধ যান বন্ধে অভিযান পরিচালনা করে আসছি। নবায়ন, নিবন্ধন, পুনঃনবায়নের জন্য মাইকিংসহ নানা প্রচারনা চালালেও কোন মতেই থামানো যাচ্ছেনা অবৈধ ফিটনেসবিহিন যানবাহন। জেলায় বিভিন্ন ধরণের যানবাহনের মধ্যে ১০ হাজার ৭শ ৭৮টি যানবাহনের নিবন্ধন রয়েছে। এদের মধ্যে অটোরিক্সার সংখ্যা ৩৪৫০টি মোটর সাইকেলের সংখ্যা ৫৯৬০টি, ভেনগাড়ির সংখ্যা ২৫টি, হিউম্যান হলারের সংখ্যা ১৫০টি, মিনি বাসের সংখ্যা ১৯২টি এবং ট্রাকের সংখ্যা ৮৭টি। জেলায় নিবন্ধিত যানবাহনের চেয়ে অনিবন্ধিত সাথের সংখ্যা বেশি। গত বছর ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে সরকার অটোরিক্সা নিবন্ধন বন্ধ রেখেছে। ফলে জেলার বিভিন্ন উপসড়কে অবৈধ অটোরিক্সার সংখ্যা কয়েকগুণে বেড়েছে।
জেলার বিভিন্ন উপসড়কে চলাচলরত যানবাহনের মধ্যে বৈধ যানের চেয়ে অবৈধ যান বেশি। মাত্র ১০ হাজার ৭শ যানবাহন বৈধভাবে সড়কে চলাচল করলেও অবৈধভাবে চলাচল করছে অন্তত ২৫ হাজার যানবাহন। বিআরটিএ’র অনুমতি ছাড়া এসব গাড়ি চলাচল করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দিন দিন এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গাড়ি আটকের নামে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চাঁদাবাজির অভিযোগ অনেক পুরনো। চালকদের অভিযোগ কক্সবাজার বিআরটিএ অফিসের সকল কাজ দালালময় হওয়ার কারনে সেবা পাওয়া যেন আকাশ কুসুম। অফিসে বারবার এসেও অনেক চালক সরাসরি আসার কারনে কাজ করতে না পেরে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
অপরদিকে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের নিবন্ধন করতে অতিরিক্ত ফি আদায়, সহ নানা অনিয়ম হয়রানির অভিযোগ বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বহু দিনের। সময়ক্ষেপন ও অতিরিক্ত ফি আদায় হলেও যথাযথ সেবা বঞ্চিত হচ্ছে যানবাহন মালিক ও চালকরা।
অতিরিক্ত ফি আদায় ও অফিসের নানা অনিয়ম সম্পর্কে বিআরটিএ’র কক্সবাজার সহকারি পরিচালক মোঃ জামাল উদ্দিন এর বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে (০১৭২৭১৭৬৬৭৭) একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয় তবে ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে সরকারিভাবে নির্ধারিত ফি হলো অটোরিক্সায় ১২ হাজার টাকা, ১১০ সিসি মোটর, সাইকেল ১৯ হাজার ১শ ৪০ টাকা, ১৫৩ সিসি ফি ২১ হাজার ২শ ৭৩ টাকা ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান,অবৈধ যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে সরকার দলীয় নেতাদের গাড়ি, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে মাসোহারা, নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে নানা হয়রানির কারণে মহাসড়কে এবং উপ-সড়কে অবৈধ যানবাহন বৃদ্ধির অন্যতম । অবৈধ যানবাহন বৃদ্ধির কারণে প্রতিদিন বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা, বাড়ছে প্রাণহানীর ঘটনা। নিবন্ধিত গাড়ির চেয়ে অনিবন্ধিত গাড়ির সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধির ফলে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ এসব যানবাহনে অদক্ষ অনিবন্ধিত অপেশাদার চালকরা গাড়ি চালিয়ে প্রতিনিয়ত ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করছে। অবৈধ যানবাহন চিহ্নিত পূর্বক নিয়মিত অভিযান চালানো অত্যন্ত জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি বিআরটিএ অফিসের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল, সাধারণের জন্য সহজিকরণ, এবং দালালমুক্ত করা জরুরী।

পাঠকের মতামত: