ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

ত্রাণের আশায় ছুটছে ঈদগাঁওতে ছড়িয়ে থাকা রোহিঙ্গারা

rohingya-3-এম আবুহেনা সাগর, নিজস্ব প্রতিনিধি, ঈদগাঁও ::

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওতে ত্রাণ পাওয়ার আশায় কুতুপালংয়ের অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলে যাচ্ছে পুরাতন রোহিঙ্গারা। প্রাপ্ত তথ্যে মতে, রোহিঙ্গা মুসলমানের উপর মিয়ানমারের বৌদ্ধ জনগোষ্টির প্রতিরোধ ও দমন নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন তারা। ঐ সময় চলে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে বেশ কিছু ঈদগাঁও বাসস্টেশন, গরুর বাজারস্থ পূর্ব জাগির পাড়া ভাড়া কলোনী, শিয়া পাড়া, দরগাহ পাড়া,হাসিনা পাহাড়,কলেজ গেইটসহ বিভিন্ন এলাকায় বসতি গড়েছিল। ভাল আর মন্দ দিয়ে অসংখ্য ছেলেমেয়ে নিয়ে দীর্ঘকাল বসবাস করে আসছিল তারা। স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর মতে, পুরুষরা মোটামুটি টাকা-পয়সা আয় করলেও পিতা হারা এতিম শিশুরা টোকাইয়ের কাজ, মহিলারা স্থানীয়দের বাসা বাড়ীতে সস্তা দামে শ্রম বিক্রি, ভিক্ষাবৃত্তিসহ অভাবের তাড়নায় পেটের দায়ে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ছিল। এসব কাজে রোহিঙ্গা নারী পুরুষদের সহযোগিতা দিয়ে যেত স্থানীয় কিছু টাউট দালাল চক্র। সম্প্রতি মিয়ানমার সেনা কর্তৃক নির্যাতিত বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে থাকা-খাওয়া, চিকিৎসাসহ ত্রাণ সহায়তা পাওয়ার খবরে ত্রাণের লোভে কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে চলে গেছে এখানকার প্রায় ডজনাধিক  পরিবার। চলে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে আরো বহু পরিবার। তবে যেসব রোহিঙ্গা মাত্র কয়েক বছর আগেও বিভিন্ন দালালদের মাধ্যমে বনাঞ্চলের জায়গা দখল করে স্থায়ী বসতি স্থাপন করেছে তারা অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যেতে নারাজ। পাহাড়ী এলাকার বেশ কজনের মতে,আমরা হাজার হাজার টাকা দিয়ে বাড়িঘর, জায়গা-জমি ক্রয় করেছি। এ সহায় সম্বল ফেলে কোথাও যাব না। তবে এলাকার সচেতন মহলের মতে , ঈদগাঁওতে বসবাসরত প্রায় ৫ হাজার রোহিঙ্গা রয়েছে। এদের মধ্যে ডজনাধিকের ও বেশি পরিবার ক্যাম্পে চলে গেলেও বাকীরা সবাই রয়ে গেছে । আলমাছিয়া গেইটস্থ ভাড়া কলোনীতে থাকা এক রোহিঙ্গা  বলেন, আমরা বর্তমানে এখানে খুব ভাল আছি। তবে ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত। জন্ম নিবন্ধন বা আমাদের ভোটার আইডি কার্ড না থাকায় সন্তানদের স্কুল-মাদ্রাসায় ভর্তি করাতে পারছি না। এ ব্যাপারে ঈদগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মতে,কয়েকটি পরিবার চলে যাওয়ার খবর পেয়েছি। রোহিঙ্গারা চলে যাওয়াকে ভাল লক্ষণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এভাবে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গারা এক স্থানে চলে গেলে সকল রোহিঙ্গারা সরকারের আওতায় চলে আসবে। ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. খায়রুজ্জামানের মতে,পুরাতন রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে চলে যাওয়ার ব্যাপারে তার জানা নেই। তবে যদি কোন রোহিঙ্গা পরিবারের চলে যেতে সমস্যা হলে তারা যদি পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে তাহলে চলে যাওয়ার জন্য সব ধরণের সহযোগিতা দেবে পুলিশ। অন্যদিকে এ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানো না গেলে ভবিষ্যতে পর্যটন শহর কক্সবাজারে সামাজিক অস্থিরতা দেখা দেওয়ার আশংকা রয়েছে।

পাঠকের মতামত: